বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়েছে ৩টি এয়ারলাইনস

​তিনটি বিদেশি বিমান সংস্থা—ওমান এয়ার, ব্যাংকক এয়ারওয়েজ ও থাই স্মাইল—বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক না হওয়ায় গত বছর থেকে তারা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়েছে ৩টি এয়ারলাইনস

তিনটি বিদেশি বিমান সংস্থা—ওমান এয়ার, ব্যাংকক এয়ারওয়েজ ও থাই স্মাইল—বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক না হওয়ায় গত বছর থেকে তারা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

বিমান পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিমান সংস্থাগুলো কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় ৫০ জন বাংলাদেশি চাকরি হারিয়েছেন। সেই সাথে রাজস্ব হারিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করা বাংলাদেশ বিমান।

প্রায় এক দশক ধরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ওমান এয়ার। কিন্ত গত বছর মে মাসে মধ্যপ্রাচ্যের সংস্থাটি চট্টগ্রামে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এর পাঁচ মাস পর ঢাকা থেকেও তারা কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলে।

২০১১ সালে বংলাদেশের আকাশে ডানা মেলে ব্যাংকক এয়ারওয়েজ। গত নভেম্বরে তারা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। আর থাই এয়ারওয়েজেরই অপক্ষাকৃত কম খরচের সংস্করণ থাই স্মাইল কার্যক্রম শুরুর চার মাসের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে।

ওয়ামনের পতাকাবাহী বিমান সংস্থা ওমান এয়ারের সাবেক কান্ট্রি ম্যানেজার আশরাফুল কবীর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “বাংলাদেশসহ কয়েকটি জায়গা থেকে ওমান এয়ার তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। বাণিজ্যিক কারণে তারা এটা করেছে।”

তিনি জানান, গত কয়েক মাসে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ওমান এয়ারের ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। তবে ওমান এয়ার শিগগিরই কম খরচে বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করবে বলেও তিনি জানান।

বর্তমানে বংলাদেশে ৩০টি বিদেশি বিমান সংস্থার কার্যক্রম রয়েছে। এগুলোর সবগুলোই এশিয়ার। কোনো ইউরোপীয় বা আমেরিকান বিমান সংস্থা বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে না।

বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ কাজি ওয়াহিদুল আলম বলেন, বিদেশি বিমান সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি নেতিবাচক বার্তা দেয় অন্যদের। উদাহরণ হিসেবে কেএলএম রয়াল ডাচ এয়ারলাইনের কথা বলেন তিনি। কয়েক বছর আগে সংস্থাটি বাংলাদেশ থেকে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। সেসময় জার্মানির সর্ববৃহৎ বিমান সংস্থা লুফথানসা বাংলাদশে কার্যক্রম শুরু করার কথা ভাবছিল। কিন্তু কেএলএম-এর চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের বাজারে ঢোকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে লুফথানসা।

বিমান বংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাবেক এই পরিচালকের মতে, যত বেশি এয়ারলাইনস আসবে ততো বেশি প্রতিযোগিতা হবে। আখেরে লাভ হবে যাত্রীদেরই।

তিনি জানান, প্রত্যেক ফ্লাইটে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বাবদ বিমান সংস্থাগুলোকে ৭,০০০ থেকে ১০,০০০ ডলার পরিশোধ করতে হয়। আর অন্যান্য সেবা বাবদ বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ পায় ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ ডলার। কার্গো হ্যান্ডলিং থেকেও রাজস্ব আয় আসে।

“বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিৎ সরকারের। তারা কেন কার্যক্রম বন্ধ করল তা বের করতে সংশ্লিষ্টদের উচিৎ এয়ারলাইনসগুলোর সাথে বসে আলোচনা করা,” মনে করেন তিনি।

Comments