এই ম্যাচেও চোখ রাঙাচ্ছে ‘হার'
দিনের তখন আর দুই বল বাকি। দুই ওপেনারকে হারিয়ে এমনিতেই ম্যাচ বাঁচানোর শঙ্কায় দল। দিনের শেষ কিংবা সেশনের শেষ ওভারে উইকেট হারাবে না বাংলাদেশ, এ যেন হতেই পারে না। রঙ্গনা হেরাথের বলটা ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করে সিলি পয়েন্ট ক্যাচ দিলেন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় ইনিংসে একশ রানের আগেই নেই তিন উইকেট। প্রথম ইনিংসে পাঁচশর বেশি রান করেও শেষ দিনে বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে –‘হার’!
শনিবার চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিনও পক্ষে গেছে শ্রীলঙ্কানদের। ২০০ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণার পর শেষ বিকেলে ৮২ রানে ৩ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের আউটের সঙ্গে সঙ্গে খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার সময় আরেকপ্রান্তে মুমিনুল হক অপরাজিত ছিলেন ১৮ রানে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটে প্রথম তিনদিনে ওইরকম টার্ন দেখা না গেলেও চতুর্থ দিনে দেখা মিলছে ঘূর্ণির। শেষ দিনে হেরাথ, দিলরুয়ান পেরেরা হয়ে উঠতে পারেন আরও বিপদজনক।
২০০ রানে পিছিয়ে থেকে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস শুরুটা পেয়েছিলেন ভালোই। বিশেষ করে এবারও আগ্রাসী ছিল তামিমের ব্যাট। অহেতুক ঝুঁকি না নিয়েও পাচ্ছিলেন রান। ৫২ রানে গিয়ে এই জুটির ছেদ পড়ে ইমরুলের বিদায়ে। প্রথম ইনিংসে নিবেদন দেখানো ইমরুল দ্বিতীয় ইনিংসে ছিলেন বেশ অস্থির। পেরেরার লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে সুইপ করতে গিয়ে ১৯ রানে সোজা ক্যাচ দিয়েছেন স্কয়ার লেগে।
তামিম তবু এগুচ্ছিলেন আরেকটি ফিফটির দিকে। ৪১ রান করে তিনি কাটা পড়েছেন চায়নাম্যান লাকসান সান্দাকানের ভেল্কিতে। কব্জির কারিকুরিতে দেওয়া সান্দাকানের ডেলিভারি মিডল স্টাম্পে পড়ে অনেকটা টার্ন করলে তাতে ড্রাইভ করতে যাওয়া তামিম ধোঁকা খান। তার ব্যাটের ছোঁয়া নিয়ে নিরোশান ডিকভেলার গ্লাভস যেতেই ততক্ষণে নাচতে শুরু করে দিয়েছে লঙ্কানরা।
বাংলাদেশের হতাশা থামতে পারত এই দুই উইকেটেই। আর কোন বিপর্যয় ছাড়াই দিন পার করে দেওয়ার একদম কাছেও চলে গিয়েছিল দল। দিনের এক বল আগেই হেরাথের বলটাতে খানিকটা ভুল করে বসলেন মুশফিক। রক্ষণাত্মক খেলেও ক্যাচ গেল সিলিপয়েন্টে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের হাত গলে সহজ ক্যাচ বেরিয়েছে অনেক, লঙ্কানরা টেস্ট ম্যাচে ক্যাচ নেওয়ার মর্যাদাটা জানেন। ১৯৬ রানের ইনিংস খেলে এমনিতেই হিরো কুশল মেন্ডিস দারুণ দক্ষতায় জমিয়েছেন মুশফিকের ক্যাচ।
এরআগে দিনের বাকিটা সময় ছিল বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডারদের হতাশা আর অপেক্ষার। আগের দিনের অপরাজিত রোশন সিলভা সেঞ্চুরি করেই থেমেছেন। ৮৭ রানে লঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালকে থামাতে পেরেছিলেন তাইজুল ইসলাম। ৬১ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলে নিরোশান ডিকভেলাও রেখেছেন কার্যকর অবদান। শেষ দিকে দিলরুনা পেরেরা ৩২ আর রঙ্গনা হেরাথের ২৪ রানের ইনিংসে ৯ উইকেটে ৭১৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।
পঞ্চম দিনে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে পুরো ৯০ ওভার টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ এখন বাংলাদেশের। মুমিনুল হকের ঝলমলে ইনিংসে টেস্টের প্রথম দিনের দাপট যেন কোন দূরের অতীত!
Comments