শঙ্কার মেঘ কাটিয়ে নির্বিঘ্নে ড্র

খেলা শেষ হওয়ার তখনো এক ঘণ্টার বেশি সময় বাকি। হাতে ৫ উইকেট নিয়ে ১০৭ রানের লিড হয়ে গেছে বাংলাদেশের। এই ম্যাচ থেকে কোন ফল বের করার তখন আর বাস্তবতা নেই। শেষ পানি পানের বিরতির ঠিক আগে তাই দুই অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর দিনেশ চান্দিমাল মেনে নিলেন ড্র।
মুমিনুল হক আর লিটন দাসের ব্যাটে ম্যাচ বাঁচিয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

খেলা শেষ হওয়ার তখনো এক ঘণ্টার বেশি সময় বাকি। হাতে ৫ উইকেট নিয়ে ১০৭ রানের লিড হয়ে গেছে বাংলাদেশের। এই ম্যাচ থেকে কোন ফল বের করার তখন আর বাস্তবতা নেই। শেষ পানি পানের বিরতির ঠিক আগে তাই দুই অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর দিনেশ চান্দিমাল মেনে নিলেন ড্র।

অথচ শেষদিনটায় ভয় আর শঙ্কা নিয়ে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনের পরই শঙ্কার মেঘ জমেছিল। ভয় বাড়াচ্ছিল অতীতের তেতো স্মৃতিও। এর আগে দুবার প্রথম ইনিংসে পাঁচশোর বেশি রান করে ম্যাচ হারার রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। এবার কি আরও আরেকবার...! না শেষ পর্যন্ত ঘোর অন্ধকার নামেনি চট্টগ্রামে। ব্যাটিং স্বর্গে নির্বিঘ্নে দিনটা পার করে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় ইনিংসের ধসে পড়ার জুজু কাটিয়ে বাংলাদেশ ব্যাট করেছে ১০০ ওভারের বেশি।

রোববার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুমিনুল হক আর লিটন দাসের চতুর্থ উইকেটে  ১৮০ রানের জুটিতেই নিরাপদে চলে যায় বাংলাদেশ। টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করা মুমিনুল হকের দিকেই পড়েছে বেশিরভাগ আলো, সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে ফেরা লিটন দাসও কুড়িয়েছেন বাহবা। এই দুজনের কীর্তিতে ম্যাচের ফল নিয়ে আর বাড়েনি উদ্বেগ। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি শেষ হলো নিষ্প্রাণ ড্রতে।

প্রথম ইনিংসে ২০০ রানে পিছিয়ে থাকার পর চতুর্থ দিন বিকেলেই তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপাকে পড়েছিল বাংলাদেশ। ৮১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে শেষ দিনে চ্যালেঞ্জ ছিল পুরো দিন টিকে থাকার। তা অনায়াসে করতে পেরেছেন মুমিনুল হক আর লিটন দাস। প্রথম সেশনে কোন উইকেটই পড়তে দেননি তারা। দ্বিতীয় সেশনে শেষ দিকে গিয়ে আউট হয়েছেন দুজনই, তবে ততক্ষণে ম্যাচে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ পোক্ত।

প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসের বাংলাদেশের ইনিংসের বেশিরভাগটা জুড়ে মুমিনুল হক। আগের দিন ইমরুল কায়েসের আউটের পর নেমেছিলেন। তাকে ক্রিজে রেখে ফিরে যান দুই সিনিয়র ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসে যে গতিতে সেঞ্চুরি করেছিলেন, এবার দাবি ছিল একদম উলটো। রান বাড়ানোর চেয়ে দরকার ছিল উইকেট আঁকড়ে ধরার নিবেদন। মেজাজ পালটে মুমিনুল খেলেছেন রয়েসয়ে। তিন অঙ্কে পৌঁছাতে লাগিয়েছেন ১৫৪ বল। তাতে চারটি বাউন্ডারির সঙ্গে মেরেছেন দুই ছক্কা। তাতে ছোঁয়া হয়ে গেছে রেকর্ডও। এর আগে কোন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান এক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করতে পারেননি। টেস্ট ইতিহাসেই এমন কীর্তি মোট ৬৭ জনের।

চতুর্থ উইকেটে ১৮০ রানের জুটিতে মুমিনুল-লিটন দুজনেই খেলেছেন তাল মিলিয়ে। জুটির ৮৭ রান এসেছে মুমিনুলের ব্যাট থেকে, ৮৬ লিটনের। ১০৫ রান করে মুমিনুল আউটের পর দ্রুত লয়ে সেঞ্চুরির দিকে এগুচ্ছিলেন লিটন। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটাকে প্রথম তিন অঙ্কের ঘরে নিয়ে যেতে বেশি তড়িঘড়ি ফেলেছিলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে অদ্ভুত আউটের ভুল পুষিয়ে বাহবা কুড়ানোর পথেই ছিলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। রঙ্গনা হেরাথের বলে ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন ৯৪ রানে।

বাকিটা সময় কোন বিপদ বাড়তে দেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ আর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। দলের রান ৫ উইকেটে ৩০৭ হতেই থামল খেলা। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও অপরাজিত বাংলাদেশ অধিনায়ক করেছেন ২৪ রান, সঙ্গে মোসাদ্দেক ছিলেন ৮ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৫১৩ (মুমিনুল ১৭৬, মুশফিক ৯২; লাকমাল ৩/৬৮, সান্দাকান ২/৯২)

শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ৭১৩/৯ (ডিক্লে) (কুশল মেন্ডিস ১৯৬, ধনঞ্জয়া ১৭৩; তাইজুল ৪/২১৯, মিরাজ ৩/১৭৩)

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস:  ৩০৭/৫  (মুমিনুল ১০৫, লিটন ৯৪; হেরাথ ২/৮০, ধনঞ্জয়া ১/৪১ )

ফল: ম্যাচ ড্র

সিরিজ: সিরিজে ০- ০  সমতা।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago