আদালতের পথে খালেদা জিয়া
জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় শুনতে বকশীবাজারে অবস্থিত বিশেষ জজ আদালতের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুপুর ১২টার দিকে তিনি গুলশানের বাসভবন থেকে বের হন। বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও দলীয় নেতাকর্মীরা তার গাড়িবহরের সাথে রয়েছে।
এর আগে আজ সকালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অপর দুই আসামী আদালতে উপস্থিত হন। তারা হলেন কাজী সালিমুল হক এবং শরফুদ্দিন আহমেদ। একটি প্রিজন ভ্যানে করে সকাল ৯টার দিকে তাদের আদালতে নিয়ে আসা হয় বলে ঘটনাস্থল থেকে আমাদের সংবাদদাতা জানিয়েছেন।
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য দ্বারা পরিবেষ্ঠিত হয়ে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বিশেষ আদালত-৫ এ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপস্থিত হয়েছেন বলেও আমাদের স্টাফ সংবাদদাতা ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের বোনের ছেলে মমিনুর রহমান। মামলায় শুরু থেকে পলাতক আছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।
সকাল থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও কয়েকজন সাংবাদিকদের ছাড়া অন্য কাউকে আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকতে দিচ্ছেন না। এছাড়াও, আদালত প্রাঙ্গণে কোনো টেলিভিশন ক্যামেরার অনুমতি মিলছে না। রাজধানী জুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি রাজধানীতে ২০ প্লাটুন বিজিবি (এক প্লাটুনে ১০ থেকে ২০ জন সদস্য) গত সন্ধ্যা থেকে মোতায়েন করা হয়েছে। সারাদেশে আরো ২৩ প্লাটুন বিজিবি সদস্য প্রস্তুত রয়েছে।
অনাথ শিশুদের সহায়তার জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করে।
৩৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া বেশ কয়েকবার কারাগারে গিয়েছেন তবে তিনি এর আগে কখনো কোনো মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হননি। ৮০’র দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি বেশ কয়েকবার আটক হয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতির অভিযোগে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেসময় তাকে প্রায় এক বছর সংসদ ভবন এলাকার স্থাপন করা বিশেষ কারাগারে রাখা হয়েছিল।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮৩ সালে খালেদা জিয়া দলের ভাইস চেয়ারপারসন হন। এর পরের বছর ১০ মে তিনি চেয়ারপারসন হন।
এদিকে কারাগার সূত্রগুলো জানায়, মামলায় খালেদার সাজা হলে তাকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নারী সেল ও ডেকেয়ার সেন্টারে রাখা হতে পারে। কারাগার কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এই ঘরগুলোর সংস্কার কাজ শেষ করেছে।
এছাড়াও গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত নারী কারাগারেও ভিআইপি সেল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে ঢাকা থেকে কাশিমপুরে নেওয়ার পথের ঝুঁকি বিবেচনায় তাকে সাময়িকভাবে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারেই রাখা হতে পারে। গতকাল থেকেই সেখানকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
খালেদার আইনজীবী ও বিএনপির নেতারা বলেছেন, সাজা হলে হাইকোর্টে রায় চ্যালেঞ্জ করা হবে।
Comments