কারাগারে খালেদা: এরপর কী?
অবশেষে দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যেতে হলো বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে। কিন্তু, প্রশ্ন হলো এরপর কী হতে যাচ্ছে?
তাৎক্ষণিক যে বিষয়টি দাঁড়ায় তা হলো অন্তত আগামী তিনদিন অর্থাৎ রবিবার পর্যন্ত তাঁকে কারাগারে থাকতে হবে। যদি তাঁর আইনজীবীরা আজই রায়ের সার্টিফাইড কপির জন্যে আবেদন করেন এবং যদি সেই কপি আজই তাদের দেওয়া হয়, তাহলেও তারা আজ হাইকোর্টে আপিল করতে পারছেন না।
এই অবস্থায়, বিএনপি নেত্রীর আইনজীবীদের জামিন আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে যেতে আগামী রবিবার হয়ে যাবে। আর যদি রায়ের কপি হাতে পেতে দেরি হয়, তাহলে যথারীতি খালেদার জামিন আবেদনও পিছিয়ে যাবে। এরপর, খালেদাকে জামিন দেওয়া উচ্চ আদালতের ওপরই নির্ভর করছে।
কিন্তু, আসল প্রশ্নটি হচ্ছে আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সাধারণ নির্বাচনে খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন কি?
আইন বলছে, যদি কেউ অন্তত দুই বছরের জন্যেও দণ্ডিত হন তাহলে সেই দণ্ডিত ব্যক্তি রায় ঘোষণার পর পাঁচ বছর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
উচ্চ আদালত যদি তাঁকে জামিনও দেন এবং এই দণ্ড বহাল রাখেন তাহলেও তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা হারাবেন।
এদিকে, তাঁর রাজনৈতিক দল বিএনপি ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচন বর্জন করায় অনেকের মতে খালেদা জিয়া জাতীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।
আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে খালেদা জিয়াকে বেশ শক্ত অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছিল। আদালতের রায়ের একদিন আগেও তিনি দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “এবার কেউ খালি মাঠে গোল দিতে পারবে না।”
এর ফলে বোঝা যাচ্ছে, যাই হোক না কেনো বিএনপি নির্বাচনের পথেই এগুচ্ছে। কিন্তু এই মুহূর্তে বড় প্রশ্ন হলো, খালেদাকে ছাড়া নির্বাচনী লড়াই কতোটা কার্যকর হবে?
দলীয় প্রধান কারাগারে যাওয়ায় বিএনপি যখন বেকায়দায় রয়েছে, তখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পুরো শক্তি নিয়েই নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্রস্তুত।
খালেদা জিয়া আজ (৮ ফেব্রুয়ারি) যে দণ্ড পেলেন সেই মামলা দায়ের হয়েছিলো ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। সেসময়ও তিনি কারাগারে ছিলেন। এরপর, সে বছরই সেপ্টেম্বরে যখন মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন অবশ্য তিনি কারাগারের বাইরে। সে বছরের ডিসেম্বরে তিনি নির্বাচনে অংশ নেন এবং আওয়ামী লীগের কাছে পরাজিত হন।
এর প্রায় ১০ বছর পর খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে গেলেন।
Comments