‘আমি আর আগ্রহী না, আমার আসলে নোংরা লাগছে’

সোমবার টি-টোয়েন্টি দলের অনুশীলনের শুরুর দিন কথা বলতে এসে সব বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আবেগী হয়ে যান জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
ফাইল ছবি (স্টার)

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারার পর সমালোচনার মধ্যে তাকে নিয়ে উঠা কথায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। ক্ষোভ ও আবেগ মিশ্রিত সুরে তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করার অনাগ্রহের  কথাও জানিয়েছেন। অভিযোগের তীর ছুঁড়েছেন গণমাধ্যমের প্রতি। 

প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে না থাকায় ত্রিদেশীয় ও শ্রীলঙ্কা সিরিজে টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের আদলে দল পরিচালনার দায়িত্ব পান খালেদ মাহমুদ। ঘরের মাঠে ফেভারিট থেকেও ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশ। হেরে যায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজও।

সোমবার টি-টোয়েন্টি দলের অনুশীলনের শুরুর দিন কথা বলতে এসে এসব বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আবেগী হয়ে যান জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে দুই ইনিংসেই ব্যাটিং ধস নামে বাংলাদেশের। দুই ইনিংস মিলিয়েই দল খেলতে পারেনি ৮০ ওভারও। ত্রিদেশীয় কাপেও লঙ্কানদের বিপক্ষে একশো রানের নিচে অলআউট হয়েছিল। ফাইনালে ২২২ রান তাড়া করতেও জিততে পারেনি। সব মিলিয়ে ব্যর্থতার সিরিজের পর কি তিনি আর দায়িত্বে থাকবেন? এমন প্রশ্ন মাহমুদের জবাব,  'নিদাহাস কাপে বোর্ড ঠিক করবে (দায়িত্বে কে থাকবে)। কারণ বোর্ডই আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে। কাজ করব না, এই কথা আমি কখনোই করতে চাই না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাঙালি কেউ কাজ করলেই সবচেয়ে বড় সমস্যা। দল হেরে যাওয়ার পরও যে আমি এই দেশে আছি, এটাই বড় কথা। চন্দিকা (হাথুরুসিংহে) যখন প্রথম এলো, আরও বড় বড় কোচ এসেছে, তখনও শুরুতে ফল খারপ হয়েছে। কিন্তু এ রকম হয়নি।' 

‘ব্যক্তিগতভাবে আমি আর আগ্রহী না। আমার আসলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেই কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। আমার আসলে নোংরা লাগছে সত্যি কথা বলতে গেলে। এতবছর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করছি, বাংলাদেশের উন্নতির জন্যই কাজ করছি। এখানে আমার কোন স্বার্থ নাই।’

বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য গণমাধ্যম অন্তরায় কিনা এমন প্রশ্ন তোলে মাহমুদ বলেন, ‘মিডিয়াতে যেভাবে লেখা হয়। আমাদের ক্রিকেটের বড় অন্তরায় হচ্ছে...মিডিয়ারও একটা ব্যাপার আছে যে আমরা এত সন্দেহপ্রবণ হয়ে যাচ্ছি আসলে। এখন মিডিয়া সন্দেহপ্রবণ। মিডিয়ার কারণে আমাদের ক্রিকেট আটকায়ে আছে কিনা সেটাও কিন্তু প্রশ্ন।’

'ক্রিকেট আমরা এতবছর ধরে খেলতেছি এখন এত গালগপ্পো। মিডিয়াতে ভাল খারাপ সবই হবে কিন্তু কিছু কিছু জিনিস নেতিবাচক হয়ে যাচ্ছি ক্রিকেটের জন্য খুব কঠিন।' 

চট্টগ্রাম টেস্টে ৫৩ বলে ৮ রান করে দলের ড্র করায় ভূমিকা রেখেছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ঢাকায় তাকে না রেখে খেলানো হয় সাব্বির রহমানকে। টেস্ট চলাকালীন স্কোয়াডে থাকলেও তিন ক্রিকেটার মোসাদ্দেক, কামরুল ইসলাম ও নাঈম হাসানকে প্রিমিয়ার লিগ খেলার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রশ্ন উঠে আবাহনীর হয়ে খেলানোর জন্যই কী ঢাকা টেস্টে রাখা হয়নি মোসাদ্দেককে।

এই প্রসঙ্গ টেনে এনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক, আবাহনীর হেডকোচসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা মাহমুদ এমন গুরুতর অভিযোগে আহত হওয়ার কথা জানান।

‘টেকনিক্যাল হয়ত খারাপ হতে পারি। কিন্তু অন্য বিষয় নিয়ে যখন কথা বলে তখন এটা আমাকে খুবই আহত করে।  আমি আবাহনীর হেড কোচ। আমি মোসাদ্দেককে খেলাই নাই এই কারণে যে আবাহনীতে খেলার জন্য। যখন ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট নিয়ে কথা বলে তখনই এটা খুবই আহত করে। আমি মনে করি না বাংলাদেশের থেকে আবাহনী বা অন্য কিছু আমাকে টাচ করতে পারে। জীবনেও ছুঁতে পারবে না, ছুঁতে পারেওনি।’

'আমি তো গড না। আমি তো খালেদ মাহমুদ সুজন। আমি খুবই সামান্য একটা মানুষ। আমি মনে করি আমার সামর্থ্য কম। আমি এখানে দাঁড়িয়ে কাজ করেছি মানুষ স্বীকার করুক না করুক আমি এটা ভালোবাসি।' 

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

14m ago