সিরিজ হার ও গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে যা যা বললেন মাহমুদ

ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হার, গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে সোমবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য মাহমুদের পুরো সাক্ষাতকার তোলে ধরা হলো।
Khaled Mahmud Sujon

ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হার, গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে সোমবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য মাহমুদের পুরো সাক্ষাতকার তোলে ধরা হলো।

টেস্ট ম্যাচের ফল নিয়ে  

যে রকম আশা করছিলাম, সেটা তো হয়ইনি। হয়তো বা টেস্ট সিরিজটা আমরা জিততে পারতাম। সেটা হয়নি। আমরা যেরকম পরিকল্পনা করেছিলাম, যেটা কাজে লাগাতে  চেয়েছিলাম সেটা ঠিকঠাক হয়নি। সবচেয়ে বড় জিনিস আমরা চাপটা নিতে পারিনি ।

উইকেট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে

আমি সেটা কখনোই মনে করি না। আমরা পারি নাই, আমরা ক্যাচ ড্রপ করেছি। যদি উইকেটকে দোষ দিতে হয়, আমাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ৬ উইকেটে ১১০–এর পর যদি ১৪০ রানে অলআউট করতে পারতাম ৭০–৮০  রান কম হতো(শ্রীলঙ্কার)। দিলরুয়ান, আকিলা, লাকমাল  বা আমাদের মিরাজের ব্যাটিং দেখেন ওরা তো  বোলার। আমাদের ব্যাটসম্যানদের কথা যদি বলি আমরা আমাদের কাজটা করতে  পারিনি।  আমরা ভালো খেলি নাই। আমাদের মধ্যে  জুজু, উইকেট নিয়ে ভয়  বা নেতিবাচক  চিন্তা যেটাই হোক আমাদের মধ্যে কাজ করেছে। উইকেট একটা অজুহাত মাত্র। বোলিং–ব্যাটিং  আমরা ভালো করতে পারিনি।

দলের পরিবেশ এখন কেমন

দলের পরিবেশ ভালো। যেটা আগেও ছিল। হারলে যেটা হয় হতাশ হয়ে পড়ে। কেউ হারতে চায় না। এখন আমরা  নতুন একটা ফরম্যাটে ঢুকতে যাচ্ছি। এখানে নতুন কিছু মুখ এসেছে। বাংলাদেশ দলে প্রথমবারের মতো কল পেয়েছে  পাঁচজন জাতীয় দলে।  অনেকে নতুন কিছু আনে। এসব ভুলে গিয়ে ১৫–১৮ তারিখের দুটি খেলায় মনোযোগ দিতে হবে, যেটাই আমাদের ভালো খেলতে হবে। জয়–পরাজয় থাকবেই। গত ১৭ টেস্টের মধ্যে সর্বশেষ ২–৩টা  জিতেছি। ১৮–২০ টি–টোয়েন্টির ২–৩টা জিতেছি। র‍্যাঙ্কিংয়ের ওপরের দলকে হারিয়েছি। ওভাবে চিন্তা করলে যেটা বলতে হবে রেকর্ড কথা  বলে। আশা করি ভালো ক্রিকেট খেলব, টেস্টে যে মানসিকতা ছিল সেটা  থেকে বেরিয়ে  টি–২০তে ভালো ক্রিকেট খেলব। এখানে তো ড্র করার সিস্টেম নেই! ওয়ানডে সিরিজ, টেস্ট সিরিজ  হেরেছি। এখন বাকি টি–টোয়েন্টি। এটাই ফিরতে হবে।ছেলেদের কোনো চাপ  দেব না।  প্রসেসটাই আসল। প্রসেসটা ঠিক না থাকলে লক্ষ্য পূরণ হবে  না।

আপনি নতুন ভূমিকা নিয়ে শুরু করেছিলেন

প্রতিদিন সূর্য ওঠে। আমি হতাশ হলেও হতাশ নই! আমার প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল। আমি বিশ্বাস করছিলাম এই দলটা নিয়ে শ্রীলঙ্কার  বিপক্ষে সিরিজ জেতা সম্ভব। তিন সংস্করণেই চিন্তা করেছিলাম সিরিজ জিতব।খুব আনলাকি সাকিবকে মিস করেছি ফাইনালে। টেস্টে ছিল না..টি–টোয়েন্টিতেও হয়তো নেই। সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, সাকিবকে দুই জায়গায় কাজটা সহজ হয়ে যায়। এটা কোনো অজুহাত নয়। বাকিদের সামর্থ্য আছে। আমরা চাপটা নিতে পারেনি। ওয়ানডেতেও উইকেট নিয়ে  কথা উঠেছে। (ফাইনালে) ২২০ করতে মনে হয় না উইকেট লাগে। আমরা পারিনি টেস্টে অনেকে বলছে ঘূর্ণি উইকেটে খেলেছি কেন। ভুলে গেছি আমরা বিশ্বমানের স্পিনার লায়নের বিপক্ষে খেলেছি। প্রথম ইনিংসে দেখেন শুরুতে লাকমল উইকেট তুলে নিয়েছে, কোনো স্পিনার নেয়নি। কোন বল আউট হয়েছে, ওদের টেলএন্ডারদের ব্যাটিং, মিরাজের ব্যাটিং—ময়নাতদন্ত করলে অনেক কিছু  বের হবে। সেটা বের করতেও চাই না। উইকেটকে  দোষ দেওয়ার  কিছু নেই। সবচেয়ে  বড় কথা  আমরা ভালো খেলতে পারিনি।’

হাথুরুসিংহের সঙ্গে পার্থক্য কোথায়

আমার মনে হয় প্রয়োগ। হাথুরুকে নিয়ে মনে হয় বড় চিন্তা আমাদের মাথায় ছিল। এটা নেগেটিভভাবে গেছে। পুরো জাতি হিসেবে হাথুরু চলে গেছে, হাথুরুর সঙ্গে ফাইট...হাথুরুর  সঙ্গে তো ফাইট  ছিল  না। ফাইট ছিল শ্রীলঙ্কার সঙ্গে .. ১১টা  ছেলে  খেলবে ১১টা ছেলের বিপক্ষে। হাথুরু মনে হয় বেশি ছিল মাথায়। ওর আমলে কী করেছে না করেছে..। এটা নেগেটিভ মানসিকতা  ছিল। আমরা অনেকভাবে ভালো  খেলার  চেষ্টা করেছি। আসলে ম্যানেজমেন্ট তো ক্রিকেট খেলে না, খেলবে খেলোয়াড়েরা। প্রয়োগ তো খেলোয়াড়েরা করবে। তারা যদি  না করতে  পারে তবে কঠিন। বুঝতাম এদের সামর্থ্য নেই, তাহলে  মনে খারাপের  কিছু নেই। এদের তো সামর্থ্য আছে। সামর্থ্য থাকার পরও না পারলে বলতে হবে  মানসিকতা। অন্যকিছু নয়। অ্যাপ্রোচ, মাঠে অ্যাটুচিউড, মাঠে চিন্তা—সবকিছুই পিছিয়ে  ছিলাম।  

এমন হারের পর আর দায়িত্বে থাকবেন?

এটা কোচিং এর বিষয় না, মানসিকতার বিষয়। অনেক বেটার কোচিং হয়েছে এবার। আমরা পারি নাই, বলতেই হবে যে কোচরা মাঠে খেলে না। এই ছেলেরাই আগে ভালো খেলেছে। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডকে হারিয়েছি। যদি বলি ফ্লাট উইকেটেও আমরা কি করতে পারতাম। আমরা তো চিটাগাংয়েও হারতে পারতাম। আমরা তো দুইটা উইকেট নিতে পারছিলাম না। সাকিব ছিল না দেখে, কাউকে ছোট করছি না।

আমি মনে করি আমরা যদি জিততে পারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এভাবেই পারতাম। সেই সুযোগ তৈরি করছিলাম। ১০৬/৬ ছিল। দিলরুয়ান পেরেরার ক্যাচ ছাড়লাম। ওইভাবে চিন্তা করলে মিডিয়াতে আসা উচিত, ১৪০ তে অলআউট করলে। তারপর মুমিনুল যদি রান আউট হত। তাহলে কিন্তু অন্যরকম হতো। সেটা কিন্তু উইকেটের দোষ না, ক্যাচ ছাড়াটা উইকেটের দোষ না। মুমিনুলের রান আউট উইকেটের দোষ না। অন্যরা যেভাবে আউট হইছে সেসবও উইকেট দোষ না।

 

আর নিধহাস কাপে বোর্ড ঠিক করবে। কারণ পদটা তো বোর্ড আমাকে দিয়েছে। কাজ করব না এই কথা কখনই বলতে চাই না। কিন্তু বাঙালি কেউ কাজ করলে সেটা আসলে সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমি এখনো আছি টিকে এটাই সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ হেরে যাওয়ার পরে। চন্ডিকা যখন প্রথম আসল। অনেক বড় বড় কোচ আসছে খারাপ রেজাল্ট হইছে শুরুতে। খারাপ রেজাল্ট আমি নিতেই পারি। বাংলাদেশ খারাপ খেলছে এটা আমাদের প্লানিং এর ভুল হইতে পারে। এরকম আরও স্টোরি তো আছে।

পারসোনালি আমি আর আগ্রহী না। আমার আসলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেই কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। আমার আসলে নোংরা লাগছে সত্যি কথা বলতে গেলে। এতবছর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করছি, বাংলাদেশের উন্নতির জন্যই কাজ করছি। এখানে আমার কোন স্বার্থ নাই। আমি আর আগ্রহী না।

 

নোংরা বলতে আসলে কোনটা বোঝাচ্ছেন

সবকিছুই। আমার কথা হচ্ছে সব কিছুই। এটা আসলে বলার কিছু নাই। আপনারাও জানেন, আমরাও জানি। নোংরা বলতে গেলে। মিডিয়াতে যেভাবে লেখা হয়। আমাদের ক্রিকেটের বড় অন্তরায় হচ্ছে...মিডিয়ারও একটা ব্যাপার আছে যে আমরা এত ফিশি (সন্দেহপ্রবণ) হয়ে যাচ্ছি আসলে। এখন মিডিয়া সন্দেহপ্রবণ। মিডিয়ার কারণে আমাদের ক্রিকেট আটকায়ে আছে কিনা সেটাও কিন্তু একটা প্রশ্ন। আসলে বেসিক ফিল আমার। ক্রিকেট আমরা এতবছর ধরে খেলতেছি। এখন এত গালগপ্পোএখন । মিডিয়াতে ভাল খারাপ সবই হবে। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস নেতিবাচক হয়ে যাচ্ছি। ক্রিকেটের জন্য খুব কঠিন। একটা ছেলেকে তোলে নিয়ে আসা এত সহজ না। একটা ডেভোলাপমেন্ট থেকে আরম্ব করে তাকে তৈরি করে তোলা অনেক কঠিন আসলে বোর্ডের। কোচ কাজ করে, নাইনটিন দল, এইচপি অনেক কিছু। এই কথাগুলো যদি ঠিক না হয় তাহলে আমার মনে হয় না বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক দূর যাবে ।

মিডিয়ার উপর রাগ করে এমন সিদ্ধান্ত?

আমি তো গড না। আমি তো খালেদ মাহমুদ সুজন। আমি খুবই সামান্য একটা মানুষ। আমি মনে করি আমার সামর্থ্য কম। আমি এখানে দাঁড়িয়ে কাজ করেছি মানুষ স্বীকার করুক না করুক আমি এটা ভালোবাসি। আমি যখন শুরু করছি আপনারা হয়ত তখন খুব ছোট। জানেন না, হয়ত জানার কথাও না। আমি যখন শুরু করি ১২-১৩ বছর বয়সে। অন্য কিছু নিয়ে কথা বলা আমার মেজাজ খারাপ হতে পারে। টেকনিক্যাল হয়ত খারাপ হতে পারি। কিন্তু অন্য বিষয় নিয়ে যখন কথা বলে তখন এটা আমাকে খুবই আহত করে। সত্যি কথা বলতে গেলে যখন আসে যে আমি আবাহনীর হেড কোচ। আমি মোসাদ্দেককে খেলাই নাই এই কারণে যে আবাহনীতে খেলার জন্য। যখন ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট নিয়ে কথা বলে তখনই এটা খুবই আহত করে। আমি মনে করি না বাংলাদেশের থেকে আবাহনী বা অন্য কিছু আমাকে টাচ করতে পারে। জীবনেও ছুঁতে পারবে না, ছুঁতে পারেওনি। এইগুলা নিয়ে যখন কথা বলা হয় তখন আহত হই খুব। তখন মনে হয় এত বছর ক্রিকেটের সঙ্গে থেকে আসলে কি লাভটা হইল। মোসাদ্দেক আর আবাহনী যদি বাংলাদেশের ম্যাচ হারার কারণ হয়ে যায়। তাহলে খুব কঠিন আসলে। ৫৩ বলে ৯ (আসলে 8) রান করছে আমিও দেখছি। আমারও ক্রিকেট জ্ঞান আছে, আমিও দেখছি। ৮৩ সালে ক্রিকেট খেলা শুরু করছি। অনেক বছর হয়েছে। চুলও পেকে গেছে এখন। কে পারে, কে পারে না। কখন কাকে দরকার। এটা আমরাও বুঝি। আপনারা হয়ত আরও ভালো বুঝেন। এতকুট বোঝার ক্ষমতা আছে।

এটা মনে হয় যে আমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভাল কিছু করতেছি না। তাহলে আমার এখানে থেকে লাভটা কি। স্বার্থের জন্য আসিনি। আমার যা আছি আমি খুব ভালো আছি। আমি খুব খুশি, এখানে চাকরি করি, যতটুকু পাই, বা যেভাবে চলি।

মিডিয়ার দাবি মেনে নিচ্ছেন?

না মিডিয়ার দাবি মানছি না। আমি বলতে চাচ্ছি , আপনারা এটা প্রতিষ্ঠিত করতে চান। চান্দিকা চলে গেল কেন। এটা প্রতিষ্ঠা করানো হয়েছে। আমরা তো বাচ্চা খোকা না এখন। সবাই তো বড় হয়েছি। অনেক কিছু প্রতিষ্ঠা করা হয়। আমার পিছে যদি লেগে থাকা হয়, আমি কোনদিন ভালো করলেও ভাল হব না। এতবছর কাজ করছি ভাল করছি এটা তো শুনি নাই। সোশ্যাল মিডিয়া বলেন, মিডিয়া বলেন। আজকে এমনও শুনছি যে রাস্তায় গেলে আমাকে মাইরও খাইতে হতে পারে। তো ক্রিকেট খেলার জন্য মাইর খাইত হইলে এটা তো অকওয়ার্ড আসলে। কথার কথা বলতেছি।

মিডিয়া না সোশ্যাল সাইট

সব কিছুই। আমার কথা হলো কি দেখেন, মানুষের বোঝাপড়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। ড্রেসিং রুমের কাচের ভেতর কি হয়। কাচের ভিতরে বসে খেলা দেখা, আর মাঠে এসে খেলা। আমরা যারা খেলছি। যতই আমরা প্লানিং দেই। প্রেসার সিচুয়েশন আসে যখন বড় ব্যাটসম্যানও ভুল করে। এটা কেউ মানতে পারে না। আমরা মনে করি আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল। আমরা সব কিছুই জিতব। এই কাচের ভিতর থেকে যারা কাজ করি তাদের জন্য এতটা সহজ না আসলে। আমি ইমোশনাল হয়ে গেছি হয়তবা। আশা ছিল এই সিরিজটা জিতব। ওয়ানডেতে যেভাবে শুরু করেছিলাম, জেতা উচিত ছিল।

আর আমি কোন অজুহাত দিতে চাই না। টার্নিং উইকেট, বাউন্সি উইকেট। আমি যদি প্লেয়ার হই সব উইকেটে ভালো খেলার কথা। উইকেট কেন দোহাই দেব। রোশন ডি সিলভা সেকেন্ড টেস্ট ম্যাচ খেলেছে, সে এত ভাল খেললো কেমনে? ওর কাছে উইকেটটা টাফ না? হি স্ট্রাগল, হি ফাইটস। আমি তো ফাইট দেখি না। আমি তো দেখি না অনেকক্ষণ স্ট্রাগল করে ব্রিলিয়ান্ট একটা ডেলিভারিতে আউট হয়েছে। এমনতো হয় নাই।

আসল ব্যাপার কি একজন বললে এটা ছোঁয়াচের মত হয়। দশজন বললেও হয়, উইকেট এভাবে বানানো উচিত হয় নাই। উইকেট যে এমন হবে এটা ১৫-২০ দিন আগে থেকে সবাই জানে। এই ইনফরমেশন ছিল সবার কাছে যে আমরা এই উইকেটে যাচ্ছি। তবে আমরা আনলাকি যে চিটাগংয়ে এই উইকেট হওয়ার কথা ছিল হয় নাই। সেটা যে কারণেই হোক হয় নাই। তারপরে ঢাকায় হয়েছে সেটা আমরা জানতাম যে হবে। অস্ট্রেলিয়ার সাথে টার্নিং উইকেটে খেলা যাবে কেন শ্রীলংকা কি গড? এমন কি আছে শ্রীলঙ্কার সাথে আমরা খেলতে পারবো না? ব্যাটিং লাইনআপ যদি দ্যাখেন, কুশল মেন্ডিস, ধননঞ্জয়, এরা কে কয়টা টেস্ট ম্যাচ খেলেছে? আমাদের স্ট্রেংথ , তাদের স্ট্রেংথ। আমাদের স্পিনার নেই। বলতে পারেন আমাদের সাকিব নেই। আমাদের রাজ্জাক ৫০০ উইকেট পাওয়া ফার্স্ট ক্লাস বোলার। কীভাবে বলবো অভিজ্ঞতা নেই? তাইজুলকে যদি দেখেন। আকিলা ফার্স্ট টেস্ট ম্যাচ খেলে ৫ উইকেট নিলো। তাইজুলতো আরও বেশি খেলতেছে। মিরাজ ইংল্যান্ডের সাথে ১৯ উইকেট নিয়েছে। আমরা কীভাবে বলবো আমাদের  অভিজ্ঞতা নেই। আমার কথা হলো আমরা কেউ এই জিনিসগুলো চিন্তা করি না। আমরা বলি শ্রীলৈঙ্কার বিপক্ষে আমাদের উচিত হয়েছে কী না। নে হবে না? শ্রীলঙাকা কি গড? ওদের প্লেয়াররকি গড? ওরা কি স্টিভ স্মিথ? বা এরকম কিছু যে ২শ টেস্ট ম্যাচ খেলা প্লেয়ার। কেন এগুলো চিন্তা করি না আমাদের প্লেয়াররাই ভুল খেলেছে।

ময়না তদন্ত করলে...

আমি যাইতে চাই না এগুলাতে। কাটাছেড়া করলো অনেককিছুই কাটা ছেঁড়া করা হয়। একটা দলের ভাল মন্দ একটা দলের ভেতরকার কথা। দলে এখানে অনেক কিছু হতে পারে। আমরা হারছি এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। সেটাতে আমরা কোচরা এসে বলবো না। আমাদের বলার দরকার নেই। বাইরে থেকও বলার দরকার নেই। আমরা খেলায় হেরেছি মেনে নিতে হবে। আপনি গায়ের জোরে বলতে পারবেন না যে ফ্ল্যাট উইকেট হলে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত। আপনি এটা বলতে পারবেন যে ফ্ল্যাট উইকেট হলে শ্রীলঙ্কার সাথে আবার টেস্ট ম্যাচ হলে আবার চ্যাম্পিয়ন হবো এটা বলতে পারবেন আপনি? এর গ্যারান্টি নেই। এটা হলো আপনার প্রয়োগ আপনি কীভাবে খেলবেন। আমরা অস্ট্রেলিয়ার সাথে ইংল্যান্ডের সাথে যদি জিততে পারি শ্রীলঙ্কার সাথে হারের কারণ তো উইকেট হতে পারে না।

গামিনিকে নিয়ে অনেক কথা হয়। গামিনির কি ব্যাপার। ওতো চাকরি করে। ওকে বলা হয়েছে বোর্ড থেকে ও সেভাবেই উইকেট বানিয়েছে। ওর দোষ কি? ওর চাকরি খাওয়া দরকার হয়ে গেছে। কেন আমরা ওর চাকরির পেছনে লাগলাম। উনি কি এতবছর বাংলাদেশের জন্য ভাল কাজ করে নাই। চান্দিকা যেভাবে উইকেট ছেয়েছে সেভাবে বানিয়ে দেয় নাই? এই উইকেট আমরা চাইছি. গামিনি ইচ্ছে করে বানিয়ে দেয় নাই। সেই কথাগুলাই আমার কাছে খারাপ লাগে। আমার কথা হলো ওর ব্যাপারটাও দেখতে হবে। ও একটা বিদেশী মানুষ বলে ওর ওপর চাপিয়ে দিয়ে বললাম ওকে শুলে চড়াও, ওকে মাইরা ফালাও। এটা ঠিক না। আমি কয়টা কিউরেটর তৈরী করতে পেরেছেন। কী পেরেছেন। আমরা হারছি একটাই কারণ আমরা ভাল ক্রিকেট খেলিনি।      

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago