হাকালুকি হাওরে অতিথি পাখির সংখ্যা কমেছে

winter birds hakaluki haor
দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও বৃষ্টি অতিথি পাখিদের জন্যে সমস্যা সৃষ্টি করায় এ বছর তাদের উপস্থিতি কম দেখা যায়। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা

দেশের সবচেয়ে বড় হাওর হিসেবে খ্যাতি রয়েছে হাকালুকির। শীত এলেই এখানে শোনা যায় নানান প্রজাতির পাখির কিচিরমিচির শব্দ। প্রতি বছর এই হাওরে হাজারো পাখির মেলা দেখে মুগ্ধ হন দর্শনার্থীরা।

অথচ, গত বছরের তুলনায় হাকালুকি হাওরে এ বছর অতিথি পাখির সংখ্যা কমেছে অনেক।

বাংলাদেশে জলচর পাখি জরিপের জাতীয় সমন্বয়ক ও বিশিষ্ট পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, “আমরা গত ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি হাকালুকি হাওরের ৪০টি জলাশয়ে জরিপ চালিয়ে ৪৪ প্রজাতির ৪৫ হাজার ১০০ পাখি গণনা করেছি। অথচ গত বছর আমরা ৫০ প্রজাতির ৫৮ হাজার ২৮৯ পাখি দেখেছিলাম।”

ইউএসএইড-এর ক্লাইমেট-রেসিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেমস অ্যান্ড লাইভলিহুডস (ক্রেল) প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাব এই জরিপের আয়োজন করেছিলো।

পরিযায়ী পাখিদের আনা-গোনা স্থানীয় পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে ইনাম আল হক আরো বলেন, “দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও বৃষ্টি অতিথি পাখিদের জন্যে সমস্যা সৃষ্টি করে।”

২০১৬ সালে সংস্থাটি হাকালুকি হাওরে দেখেছিলো ৫৬ প্রজাতির ৩৪ হাজার ২৬৪ পাখি। এর আগের বছর দেখা গিয়েছিলো ২১ হাজার ৬৩২ পাখি।

ক্রেল প্রকল্পের আঞ্চলিক সমন্বয়ক পলাশ সরকার জানান, গত বছরে প্রলম্বিত বন্যা ও বৃষ্টির কারণে অতিথি পাখিদের জন্যে সহায়ক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার অধিবাসী মতিন মিয়া বলেন, হাওরে এখনো অনেক পানি থাকায় অতিথি পাখিদের খাদ্য জলজ উদ্ভিদগুলো পানির নিচে রয়েছে। যে কারণে এবারের শীতে অতিথি পাখির সংখ্যা কম দেখা গিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, চাতালবিল ও দহবিলে তারা জল-সহনীয় হিজল, করচ, বরান ও মুর্তা গাছ লাগিয়েছেন যাতে অতিথি পাখিরা সেখানে বসে বিশ্রাম নিতে পারে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় এই প্রচেষ্টা নগণ্য বলেও উল্লেখ করেন তারা।

১৮ হাজার ১১৫ হেক্টর আয়তনের হাকালুকি হাওরের বিস্তার মৌলভীবাজার এবং সিলেট জেলার ছয়টি উপজেলা জুড়ে।

১৯৯৯ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর হাকালুকি হাওরকে পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে। কেননা, অতিথি পাখিদের বিশ্রামস্থল হিসেবে পরিচিত হিজল ও করচ গাছ ধ্বংস করে ফেলায় অতিথি পাখির সংখ্যা কমে গেছে বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সময় উপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ায় পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়। এর পাশাপাশি স্থানীয়দের মধ্যে নানা রকমের সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Pilots faked flying records

CAAB inquiry finds, regulator yet to take action

10h ago