রাঙ্গামাটিতে ‘নির্যাতিত’ ২ মারমা বোনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না

রাঙ্গামাটিতে কথিত ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার দুই মারমা বোনকে গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতাল থেকে পুলিশের উপস্থিতিতে অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
Rangamati map

রাঙ্গামাটিতে কথিত ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার দুই মারমা বোনকে গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতাল থেকে পুলিশের উপস্থিতিতে অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

পুলিশ ও তাদের স্বজনদের সূত্র মতে, গত রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাদের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। গত মাসে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাতে নির্যাতিত হন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রাঙ্গামাটি সদর) রুহুল আমিন সিদ্দিকী বলেন, “সন্ধ্যায় আমরা মারমা বোন দুজনকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি।… তবে তারা এখন কোথায় রয়েছে তা জানা যায়নি। তাদেরকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাও জানা যায়নি।”

আদালতের নির্দেশ নিয়ে গতকাল বিকেলে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে দুই মারমা বোনের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে আসেন। তারা মেয়ে দুজনের হেফাজতের দায়িত্ব নিতে চান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোন দুজন তাদের সঙ্গে যেতে অস্বীকার করে।

এক পর্যায়ে, মেয়েরা তাদের পরিবার ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়। তখন তারা আদালতের নির্দেশ অনুসরণ করার কথা তাদেরকে জানান। হাসপাতালের নারী ও শিশু বিভাগে এই তর্ক অনেকক্ষণ ধরে চলে। পরে অবশ্য মেয়ে দুজন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যেতে বাধ্য হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা উল্লেখ করেন।

১৮ বছর ও ১৩ বছর বয়সী দুই মারমা বোনকে গত ২২ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিলাইছড়িতে তাদের গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অভিযান চলাকালে বড় বোন ধর্ষণ এবং ছোট বোন যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলো বলে উল্লেখ করা হয়।

মেয়েদের বাবার রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মেয়ে দুজনকে তাদের বাবার কাছে হস্তান্তরের জন্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালকে নির্দেশ দেন।

মেয়েদের বাবার আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কাচি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মেয়ে দুজনের “আটকে রাখা”-কে কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর ব্যাখ্যাও চেয়েছেন আদালত।

তিনি আরো বলেন, উচ্চ আদালত বলেছেন মেয়ে দুজনের বাবাই তাদের আইনগত অভিভাবক এবং তিনিই তার মেয়েদের হেফাজত করার অধিকার রাখেন।

এদিকে গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের আদেশের স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছে।

মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল এই আবেদনে দাবি করেন যে মেয়ে দুজন চাকমা সার্কেল প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়ের কাছে যেতে চায়। তিনিই তাদের নিরাপত্তা দিতে পারবেন।

আপিল বিভাগের চেম্বার জজ হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি এই আবেদন শুনানির তারিখ ঘোষণা করেছেন।

Comments