রোহিঙ্গা নারীদের উদ্দেশে নোবেল বিজয়ী নারীরা

‘তোমাদের প্রতি ন্যায়বিচারের জন্যে আমরা লড়াই করবো’

মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গা নারীদের প্রতি ন্যায়বিচারের জন্যে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী নারীরা।

মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গা নারীদের প্রতি ন্যায়বিচারের জন্যে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী নারীরা।

প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারীদের কাছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বীভৎস ‘গণহত্যা’-র ঘটনা শুনে নির্যাতিতাদের উদ্দেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

নোবেল উইমেন ইনিশিয়েটিভ-এর মিডিয়া কনসালটেন্ট ভেরোনিকা পেদরোসা আজ (২৭ ফেব্রুয়ারি) বান্দরবানের নাইক্ষ্যাংছড়ির ঘুমধুমে বলেন, “নোবেল বিজয়ীরা রোহিঙ্গা নারীদের উদ্দেশে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন যে তাঁরা রোহিঙ্গা নারীদের কণ্ঠস্বর এবং তাঁরা নির্যাতিত নারীদের ন্যায়বিচারের জন্যে লড়াই করবেন।”

বাংলাদেশে স্থাপিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে আসা তিনজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী– যুক্তরাজ্যের মেরেইড ম্যাগুয়ার, ইরানের শিরিন এবাদি এবং ইয়েমেনের তাওয়াক্কল কারমানের সফরসঙ্গী ভেরোনিকা পেদরোসা নোবেল বিজয়ীদের বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে টেলিফোনে বলেন, “আমি একজন রোহিঙ্গা- একথা গর্বের সঙ্গে বলা উচিত।”

বান্দরবানের নাইক্ষ্যাংছড়ি উপজেলার ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ আটকে পড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে আজ সকালে দুই ঘণ্টা কথা বলার পর মেরেইড ম্যাগুয়ার এবং তাওয়াক্কল কারমান অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।

আমাদের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, সফররত নোবেল বিজয়ী নারীরা নাইক্ষ্যাংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ‘শূন্য রেখা’-য় আটকে থাকা কয়েক হাজার শরণার্থীর সঙ্গে কথা বলেন।

তাঁদের আগমনের খবর শুনে কয়েকশ রোহিঙ্গা নারী-শিশু ছোট খাড়ি পার হয়ে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়ে। শরণার্থীরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনা সদস্যদের হাতে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ওপর চালিত হত্যা-নির্যাতনের ঘটনাগুলো অতিথিদের শোনান।

মিয়ানমারের মংডু শহর থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ‘শূন্য রেখা’-য় আটকে থাকা ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী নোবেল বিজয়ী অতিথিদেরকে বলে, “আমার মাকে আমার চোখের সামনে হত্যা করা হয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমার বাবাকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছে। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।”

এই কিশোরী তার ছয় ভাই-বোনের সঙ্গে মংডু-র কচুগুনিয়া থেকে পালিয়ে এসে সীমান্তের ‘শূন্য রেখা’-য় আটকা পড়ে রয়েছে বলেও জানায়।

৩৫ বছর বয়সী একজন নির্যাতিতা নোবেল বিজয়ীদের জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছে। এবং তাঁর দুই বছরের শিশুকে কেড়ে নিয়ে আগুনে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত নোবেল ওমেন ইনিশিয়েটিভ-এর আয়োজনে এবং বেসরকারি সংস্থা নারীপক্ষ-এর সহায়তায় তিনজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী নারী বাংলাদেশে স্থাপিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে এসেছেন। গত রবিবার তাঁরা কুতুপালং এবং বালুখালিতে স্থাপিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago