প্রতারণার অভিযোগে ‘ট্যারট বাবা’ রাদবি রেজা গ্রেফতার

​ডিজিটাল প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ‘ট্যারট বাবা’ এমএম জাহাঙ্গীর ওরফে রাদবি রেজা। গত বৃহস্পতিবার তাকে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। মানুষের ভবিষ্যৎ বলে দেওয়াসহ নানা কায়দায় মানুষের সাথে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
'ট্যারট বাবা' রাদবি রেজা

ডিজিটাল প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ‘ট্যারট বাবা’ এমএম জাহাঙ্গীর ওরফে রাদবি রেজা। গত বৃহস্পতিবার তাকে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। মানুষের ভবিষ্যৎ বলে দেওয়াসহ নানা কায়দায় মানুষের সাথে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ট্যারট কার্ডের (জাদুকরদের ব্যবহৃত এক ধরনের তাস) মাধ্যমে মানুষের ভবিষ্যৎ বলে দেওয়ার দাবি করেন তিনি। সেই সাথে নিজের অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা দিয়ে খালি হাতে জিন-ভুত ধরারও দাবি করেন। প্রতারণার এসব পসরা সাজিয়ে মাঝে মাঝেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে তিনি জাদু দেখাতেন। বলতেন ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা সামাজিক সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা রয়েছে তার হাতে। ফেসবুক লাইভে এসেও ট্যারট কার্ড দিয়ে ভবিষ্যৎ বলে দেওয়ার দাবি করতেন তিনি।

এই কারণেই ট্যারট বাবা হিসেবে পরিচিতি পান এবিসি রেডিও ৮৯.২ এফএম-এর সাবেক হোস্ট রাদবি রেজা। ফেসবুক একাউন্টের তথ্য অনুযায়ী, তার বাড়ি সুনামগঞ্জে, উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন ব্রিটেনে।

সিআইডির স্পেশাল সুপারিন্টেনডেন্ট মোল্লা নজরুল ইসলাম ডিবির সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাদবি বলতেন তার অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা রয়েছে। সেই সাথে আগে থেকেই খেলার ফলাফল বলে দেওয়া ও লটারি জিতিয়ে দেওয়ারও দাবি করতেন তিন।

শুধু তাই নয়, ক্যান্সার ও প্যারালাইসিসের মত দুরারোগ্য ব্যাধি সারিয়ে দেওয়ার নামেও মানুষের সাথে তিনি প্রতারণা করতেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা একটি মামলায় রাদবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সিআইডির ওই কর্মকর্তা জানান। আদালতে সোপর্দ করার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।

মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে এবিসি রেডিওতে “অতিপ্রাকৃত গবেষক” হিসেবে কাজ শুরু করেন রাদবি রেজা। সেখানে তিনি “ডর” নামের একটি অনুষ্ঠানে ট্যারট কার্ড ব্যবহার শুরু করেন। শ্রোতারা তাদের নাম ও মোবাইল ফোন নাম্বার দিয়ে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হতেন। এই তথ্য ব্যবহার করে রাদবি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নানা তথ্য বের করে তাদের চমকে দিয়ে বলতেন যে তিনি তার অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা দিয়ে এসব জেনেছেন।

মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে জিনের ভয় দেখিয়ে টাকাসহ বিভিন্ন সুযোগ দাবি করতেন রাদবি রেজা। পরামর্শের জন্য দেখা করতে গেলে দুই ঘণ্টায় ২০ হাজার ৪০০ টাকা নিতেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানেরই আরেকজন হোস্ট আরজে কিবরিয়া সরকার তাকে লেনদেনে সহায়তা করতেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ জানায়, ২০টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ ২০১২ সালের ১৪ জানুয়ারি শেরেবাংলা নগর থানা-পুলিশ রাদবিকে গ্রেফতার করেছিল।

রাদবির ব্যাপারে এবিসি রেডিওর হেড অব প্রোগ্রাম এহসানুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রাদবি ‘ডর’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যুক্ত হতেন। প্রতারণার অভিযোগ সামনে আসার পর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাদবিকে বাদ দেওয়া হয়। ওই একই কারণে তিন মাস পর আরজে কিবরিয়াকেও চাকরিচ্যুত করা হয়।

প্রতারণায় কিবরিয়ার জড়িত থাকার ব্যাপারেও এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির স্পেশাল সুপারিন্টেনডেন্ট মোল্লা নজরুল ইসলাম।

Comments