‘হামলাকারীর প্রতি রাগ নেই, দুঃখ আছে’
হামলাকারীর প্রতি কোনো রাগ কিংবা ক্ষোভ নেই বরং তার জন্য এক ধরনের দুঃখ বোধ আছে বলে জানালেন লেখক ও অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১১ দিন থাকার পর সিলেট যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন তিনি।
জাফর ইকবাল বলেন, প্রগতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে হামলা কখনো বাধা হতে পারবে না। বরং তার উল্টোটাই হয়েছে। মানুষ তাদের মানসিকতার ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে। আমি কখনোই ভয় পাইনি, এখনও ভয় পাচ্ছি না।
নিজের ক্যাম্পাসে ফিরে মুক্ত মঞ্চে তিনি তার শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলবেন বলেও এসময় তিনি জানান। স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের পাশে এসময় তাকে তার স্বভাবসুলভ হাস্যোজ্জল ভঙ্গিতে দেখা যায়।
অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, “দেশকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যেন এ ধরনের জঙ্গিশক্তি গড়ে উঠতে না পারে। কারও মানসিকতাও যেন এমনভাবে গড়ে না ওঠে।”
এসময় সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান হামলার ঘটনায় তার মনে ক্ষোভ রয়েছে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, “কারও প্রতি কোনো রাগ নেই। বরং তাদের (হামলাকারী) প্রতি একধরনের দুঃখ আছে। দেশটা এত সুন্দর, এখানে অনেক কিছু করার আছে। তারাও যেন সেই কাজ করে। তা না করে তারা যা করছে, তা নিয়ে আমার দুঃখবোধ আছে।”
নিরাপদ বোধ করছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমি অবশ্যই নিরাপদ বোধ করছি। আমার নিরাপত্তা আমার পরিচিত মানুষ, আমার দেশে মানুষ, আমার ছাত্রছাত্রী শুভানুধ্যায়ী। পুলিশ সেনাবাহিনী তারা তো আছেই।
তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে বলেন, ভালো আছি। আমার মাথায় চারটি আঘাত আছে। সেটা আড়ালে রাখতে মাথা টুপি দিয়ে ঢেকে রেখেছেন বলেও তিনি জানান।
হাতে ও পিঠে আঘাতের কথা জানিয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ডাক্তার ওষুধ দিয়েছেন। তারা খুবই সন্তুষ্ট, বিশ্রাম নিতে বলেছেন। আহত জায়গার সেলাই কাটতে তাকে আগামী ১৮ তারিখ আবার ডাক্তারের কাছে যেতে হবে বলেও তিনি এসময় জানান।
হাসপাতালের বেডে থাকা অবস্থায় লেখালেখির প্রসঙ্গ আসতেই তিনি তার বাম হাতের ব্যান্ডেজ দেখিয়ে বলেন, সৌভাগ্যক্রমে ডান হাতটা সচল ছিল তাই লিখতে পেরেছি।
৩ মার্চ সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান চলাকালে জাফর ইকবাল হামলার শিকার হন। অনুষ্ঠানে ফয়জুর রহমান নামের এক যুবক ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে পেছন থেকে আঘাত করেন। সেখান থেকে তাকে দ্রুত ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে রাতেই এয়ার এম্বুলেন্সে করে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আজই তিনি প্রথম গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন।
নিজ ক্যাম্পাসে যেখানে হামলার কবলে পড়েছিলেন ঠিক সেখানেই আজ বিকাল ৪টায় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দিবেন।
Comments