কোমায় মা, আবিদ সুলতানের লাশ নিলেন ছেলে

তামজিদ

কাঠমান্ডু থেকে ইউএস-বাংলার পাইলট আবিদ সুলতানের মৃত্যুর খবর আসার পর মাকে নিয়েই ব্যস্ত ছিল তাদের একমাত্র ছেলে তামজিদ। বাবা হারানোর কষ্ট নিয়েও সারাক্ষণ মাকে সান্ত্বনা দিতেই তার সময় গেছে।

কিন্তু দুঃখের শেষ ছিল না এখানেই। স্বামী হারানোর শোক বুকে নিয়েই রবিবার ভোরে স্ট্রোক আক্রান্ত হন আফনাসানা খানম টফি। আগারগাঁয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে লাইফ সাপোর্টে এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তিনি। হাসপাতালে মাকে এই অবস্থায় রেখেই কিশোর তামজিদকে আর্মি স্টেডিয়ামে ছুটতে হয়েছে বাবার লাশ নিতে।

চাচার সাথে গিয়ে আর্মি স্টেডিয়ামে যখন জানাজায় অংশ নেয় তামজিদ তখন যেন সে অধিক শোকে পাথর। “এই অল্প বয়সেও মায়ের পাশে থেকে সে তার বাবার লাশ নেওয়ার জন্য তৈরি ছিল। কিন্তু মৃত্যুর সাথে পাঞ্জারত অবস্থাতেই মাকে ফেলে বাবার লাশ নিতে হলো তাকে। এই শোক সহ্য করা তার জন্য আসলেই খুব কঠিন।” এভাবেই বলছিলেন তার এক আত্মীয়।

তামজিদের চাচা মাহবুব আলম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মাকে নিয়ে যেতে না পারায় স্টেডিয়ামে যাওয়ার পথে সে শুধুই অনুশোচনা করছিল। জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে বাবার দাফনে নীরবেই কাজ করে সে।

কিন্তু এখানেই তার বিশ্রাম নেই। মায়ের জীবন বাঁচানো এখন তার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। সে কারণেই বনানী থেকে সে সরাসরি চলে যায় হাসপাতালে তার মায়ের অবস্থার কথা জানতে। অবশ্য সেখানে তাকে বেশিক্ষণ থাকতে দেওয়া হয়নি। স্বজনরা এসে তাকে বাসায় নিয়ে গিয়েছেন।

মাহবুব বলেন, “ওকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা। শুধু ভাবছি আরেকটা দুঃসংবাদ এলে তামজিদ কিভাবে তা সহ্য করবে।”

ডাক্তাররা জানান, ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ শেষে আফসানার অবস্থা সম্পর্কে বলা যাবে। এটাই হয়ত হতে চলেছে তামজিদের জীবনের দীর্ঘতম ৭২ ঘণ্টা।

Comments

The Daily Star  | English

CA approves draft Anti-Terrorism Ordinance

Draft includes provision to ban an entity's activities, restrict terrorism-related content online

18m ago