চলচ্চিত্রে দিবসে কেন এই বিভাজন?
আজ (৩ এপ্রিল) আলাদা আলাদাভাবে পালন করা হচ্ছে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। এ দিনটি উদযাপনে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) কর্তৃপক্ষ এবং চলচ্চিত্র পরিবার আলাদাভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। কিন্তু কেন এই বিভাজন? কেন এক হয়ে আয়োজন করা গেলো না জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস?- এমন প্রশ্ন চলচ্চিত্র-প্রেমীদের।
এই বিভাজনের পেছনের কারণ যেটা জানা গিয়েছে, তা হলো: বরাবরই জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসকে কেন্দ্র করে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে থাকতেন নায়করাজ রাজ্জাক। তিনি এখন আমাদের মাঝে নেই। এ জন্য চলচ্চিত্র পরিবার সৈয়দ হাসান ইমামকে সভাপতি করার অনুরোধ করেছিলেন। এতে আপত্তি জানায় বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ।
এর ফলে নাখোশ হয় চলচ্চিত্র পরিবার। চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির ব্যানারে আলাদাভাবে দিবসটি পালনের ঘোষণা দেয় চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। সে কারণেই আলাদা আলাদাভাবে আয়োজন করা হচ্ছে চলচ্চিত্র দিবসের অনুষ্ঠানমালা।
‘ঐতিহ্যের ভিত্তি ধরি, দেশের ছবি রক্ষা করি’- এ স্লোগান নিয়ে আজ সকাল নয়টায় (বিএফডিসি) চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্প অর্পণের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমত উল্লাহসহ অনেকে।
এদিকে বিএফডিসিতেই অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আয়োজনে ছিলেন কমিটির চেয়ারম্যান অভিনেতা ফারুক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, বদিউল আলম খোকন, শাহীন সুমন, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানসহ অনেকে।
এছাড়াও, উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান, ইলিয়াস কাঞ্চন, সাইমন সাদিক, পপি, মতিন রহমান, সোহানুর রহমান সোহান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন পরিচালক মোহাম্মাদ হোসেন জেমি। অনুষ্ঠান শেষে চলচ্চিত্রকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে যোগ দেন। এরপর তাঁরা ঘোড়া গাড়িতে চড়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
সারাদিন আলাদা আলাদাভাবে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিবেন রোজিনা, সাইফ খান, নিপুণ, পপি, জায়েদ খান, সাইমন সাদিক, মাহিয়া মাহি, জয় চৌধুরী, রোমানা নীড়, সানজু জন, বিপাশা কবির, আসিফ নূর, মিষ্টি জান্নাত, শিপন মিত্র, শিরিন শিলাসহ এ প্রজন্মের নায়ক-নায়িকারা।
কিন্তু, ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই দৈন্যদশায় জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসকে বিভেদের মধ্য দিয়ে উদযাপন করার ঘটনাটি সামগ্রিক চলচ্চিত্রের জন্যে কোনো সুফল বয়ে আনবে কি? এমন প্রশ্নই শোনা যায় বিএফডিসির চত্বরে। শত বিভেদকে দূরে সরিয়ে দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে পরিচালক-শিল্পী-কলা-কুশলী ও সংশ্লিষ্টরা এক মঞ্চে দাঁড়ালেই তো দেশবাসী চলচ্চিত্রের সুদিন নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারতেন- এমন অভিমতও প্রকাশ করেন বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের শুভাকাঙ্খীরা।
Comments