ছাত্রী নির্যাতনের প্রতিবাদে গভীর রাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী কয়েক জন ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে গত রাতে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পরে অভিযুক্ত নেত্রীকে সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা আসার পর শান্ত হয় আন্দোলনকারীরা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ছাত্রী দৈনিক প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান তিন জন ছাত্রীকে একটি কক্ষে ডেকে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের শিকার ছাত্রীদের চিৎকার শুনে সেখানে যান উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মোর্শেদা খানম। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মোর্শেদা জানালার কাচে লাথি মারেন। এতে তার পা কেটে যায়। চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য ইফফাত তাদের নির্যাতন করেন বলে জানা গেছে।
হলের ভেতরে ছাত্রী নির্যাতন ও মোর্শেদার আহত হওয়ার খবর পেয়ে কয়েকশো ছাত্রী ইফফাতকে মারধর করে আটকে রাখে। এসময় অনেক ছাত্রী তাদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে ইফফাতের শাস্তি দাবিতে হলের ভেতরে স্লোগান দিতে থাকেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাত সাড়ে ১২টা থেকে কয়েক হাজার ছাত্র তাদের হল থেকে বেরিয়ে গিয়ে সুফিয়া কামাল হলের ফটকের সামনে বিক্ষোভ দেখান। রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের ছাত্রীরাও রাতে হলের ভেতরে মিছিল করেন।
কবি সুফিয়া কামাল হলের ভেতরে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা ইফফাতের গলায় জুতার মালাও পরিয়ে দেন।
অন্যদিকে ছাত্রদের হলগুলোর কলাপসিবল গেট আটকে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতারা অবস্থান নিলেও বিজয় একাত্তর হলের ফটক ভেঙে হাজারো শিক্ষার্থী বেরিয়ে গিয়ে নির্যাতনকারী ছাত্রলীগ নেত্রীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভ প্রশমনে একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী কবি সুফিয়া কামাল হলে প্রবেশ করে ইফফাতকে হল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করার ঘোষণা দেন। তারপরও বিক্ষোভ না থামায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ইফফাতকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে।
ঘটনার পরপরই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইফফাতকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
Comments