‘আমাদের মাঝ রাতে হল থেকে বের করে দেওয়া হলো’

Kabi Sufia Kamal Hall
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল। ছবি: গুগল স্ট্রিট ভিউ থেকে নেওয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষ গভীর রাতে কয়েকজন ছাত্রীকে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দিয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১০ এপ্রিল ফেসবুকে ভূয়া অ্যাকাউন্ট খুলে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তিন থেকে চার জন ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বহিষ্কৃতদের মধ্যে দুজন গত মধ্যরাতে হল ছাড়েন এবং বাকিরা হল ছাড়েন গতকাল (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায়।

তবে রাতে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানাকে বার বার ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে তিনজন ফারহিন এবং শারমিন আক্তার শুভ গণিত বিভাগের এবং কামরুন নাহার লিজা নাট্যকলা বিভাগের ছাত্রী।

দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে যে ছাত্রীকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাঁর পরিচয় জানা যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুফিয়া কামাল হলের কয়েকজন ছাত্রী বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়েছে। তারা জানান, কর্তৃপক্ষ গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আটজন ছাত্রীকে হল অফিসে তলব করে এবং তাদের মোবাইল ফোন জব্দ করে।

এরপর, কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের বলে যে তাদেরকে হল ছাড়তে হবে। তাদেরকে হল থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্যে তাদের অভিভাবকদের ডাকতে বলে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের একজন কর্মচারী জানান, তিনি বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে হল ছাড়তে দেখেছেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর একেএম গোলাম রব্বানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “ছাত্রীদের বের করে দেওয়া হয়নি। তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।…”

কেনো রাতের গভীরে এ ঘটনা ঘটলো?- এর উত্তরে তিনি বলেন, “হলের প্রভোস্টকে জিজ্ঞাস করেন।”

ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন “বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ”-এর নেতাসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী হল গেটের সামনের জড়ো হন।

পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, “কোন রকম তদন্ত অথবা আলোচনা ছাড়াই কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দিয়েছে। এটি ধৃষ্টতা। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করি এবং প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবি জানাই।”

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১০ এপ্রিল কবি সুফিয়া কামাল হলে একজন ছাত্রীকে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীর কথিত মারধরের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার পর হলটিতে বেশ গোলযোগের সৃষ্টি হয়।

আজ (২০ এপ্রিল) উপাচার্য গণমাধ্যমকে বলেছেন, অভিভাবকদের আসতে দেরি হওয়ায়, তুলে দিতে রাত হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রী ডেইলি স্টারকে বলেন “আমাদের মাঝরাতে হল থেকে বের করে দেওয়া হলো। সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা গেল না! শিক্ষকরা একবারও ভাবলেন না এতো রাতে কোথায় যাব? আমার তো ঢাকায় কোনো থাকার জায়গা নেই।”

মেয়েদের হল থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিবাদে আজ বিকেল ৪ টায় প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

8h ago