নেপালের প্রাথমিক তদন্তে ইউএস-বাংলার আপত্তি

us-bangla airlines
২২ এপ্রিল ২০১৮, ঢাকায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ। ছবি: রাশিদুল হাসান

নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় দেশটির প্রাথমিক তদন্তে আপত্তি জানিয়েছে বিমান চলাচলকারী প্রতিষ্ঠানটি।

ঢাকায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত আজ (২২ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এই আপত্তি জানানো হয়।

সম্মেলনে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১২ এপ্রিল প্রকাশিত নেপাল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজের কোনো ক্রুটি পাওয়া যায়নি।

তবে, কাঠমান্ডু বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জড়িত দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রতিবেদনটিতে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ইমরান আসিফ বলেন, প্রথমত, নেপালের বিমানবন্দরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ (এটিসি) থেকে উড়োজাহাজের অবতরণ নিয়ে পাইলট আবিদ সুলতানের সঙ্গে যে বেখাপ্পা যোগাযোগ হয়েছে তা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

দ্বিতীয়ত, উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনায় পড়ার পর দুই মিনিটের মধ্যে দমকল বাহিনীর কর্মীদের সেখানে পৌঁছানোর বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধান নির্বাহী বলেন, “আমরা এই বিষয়ে সন্দিহান। যদি নেপালের কর্তৃপক্ষ দুই মিনিটের মধ্যে দমকল বাহিনীর কর্মীদের সেখানে পাঠাতে পারতো তাহলে যাত্রীদের অনেককে বাঁচানো সম্ভব হতো।”

কাঠমান্ডুর বিমানবন্দর থেকে এতো অল্প সময়ে দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে যাওয়া সম্ভব না বলেও যোগ করেন তিনি।

এটিসি থেকে পাইলটকে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ নির্দেশনা দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করা হয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে।

দুর্ঘটনায় পড়ায় কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই অডিও বার্তাটি অজ্ঞাত সূত্র থেকে অনলাইনে ছাড়া হয়। সেই অডিওতে শোনা যায় এটিসি থেকে কয়েকজন ব্যক্তি ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজটির অবতরণের বিষয়ে পাইলটকে নির্দেশনা দিচ্ছেন যা তাদের মধ্যে যোগাযোগটিকে বিভ্রান্তিকর করে তোলেন।

দুর্ঘটনার পরপরই নেপালের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ছয়জনকে সরিয়ে নেয়। এরপর, এ বিষয়ে মুখ বন্ধ করে দেয় তারা।

ইমরান আসিফ বলেন, “আমরা জানি না সেই ব্যক্তিগুলোকে কোথায় বদলি করা হয়েছে। যদি তাঁদের অবহেলা না থাকতো তাহলে তাঁদেরকে এভাবে বদলি করা হতো না।”

নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটিকে প্রথমে অবতরণ করতে বলা হয়। তারপর, একে ‘অপেক্ষা’ করার নির্দেশ দেয়। আবার একই সময়ে তারা আরও একটি উড়োজাহাজকে অবতরণ করার অনুমতি দেয়।

প্রধান নির্বাহী বলেন, “আমরা যতটুকু জানি, একটি উড়োজাহাজের উড়ার বা নামার অনুমতি বাতিল না করে দিয়ে আরেকটি উড়োজাহাজকে উড়ার বা নামার অনুমতি দেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।”

তাঁর মতে, উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে জানা যেতে পারে। কেননা, তাঁরা ব্ল্যাক বক্সের তথ্য পর্যালোচনা করেন এবং ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে দুর্ঘটনার প্রতিবেদন দেন।

সম্মেলনে ইমরান আসিফের সঙ্গে দুজন বিদেশি অ্যাভিয়েশন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। এসময় এয়ারলাইন্সের কঠোর রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন ইউএস-বাংলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চের সেই দুর্ঘটনায় ৫১ জন আরোহী নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি।

Comments

The Daily Star  | English

Jute prices jump amid supply crunch, polybag ban

Prices of raw jute, once dubbed the “golden fibre” of Bangladesh, have increased by nearly 19 percent year-on-year as demand has outpaced supply following the government’s ban on polythene bags.

12h ago