মমতার সরকারের নির্দেশনা মেনে এক দফায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নেওয়ার আগেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার রাজ্যটির পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়ার পর নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশনা মতোই নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে।
WBEC
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভবন: ছবি: স্টার

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নেওয়ার আগেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার রাজ্যটির পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়ার পর নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশনা মতোই নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে।

আগামী ১৪ মে গোটা রাজ্যেই ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। ভোটের ফল গণনা হবে ১৭ মে।

গতকাল (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কলকাতার শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে এই খবর প্রকাশ পেয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এদিন রাত আটটা পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।

তবে সন্ধ্যায় রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্ন ছেড়ে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ নিয়ে বলেছেন, “আজ পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আমরা খুব খুশি। গণতন্ত্রে নির্বাচন হোক, মানুষ সেটাই চান। বাংলার পঞ্চায়েত দেশের মধ্যে গর্বের। তারা ভালো কাজ করেছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ ও সুন্দরভাবে ভোটের কাজ সম্পন্ন হোক।

এই সময় তিনি আরও বলেন, “আমি সব রাজনৈতিক দলের কাছে বলবো কোনও অশান্তি না করে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে সহায়তা করুন।”

মমতা এ সময় বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারে বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক সংঘর্ষের ছবি প্রকাশ করার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এই ধরণের ভুয়া ছবি ব্যবহার করে রাজ্যে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করবেন না।”

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এবার এক দফায় ভোট হবে ১৪ মে। কোথাও পুনঃনির্বাচনের প্রয়োজন হলে সেটি হবে ১৬ মে এবং গণনা হবে ১৭ মে। রমজান মাস শুরু হওয়ার কারণে তিন দফার পরিবর্তে এক দফায় ভোট করা হচ্ছে।

এর আগে রাজ্য নির্বাচন কমিশন তিন-স্তরে পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত নির্বাচন ১, ৩ ও ৫ মে নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছিল। সেই হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২ এপ্রিল। শেষ হওয়ার কথা ছিল ৯ এপ্রিল। তবে মনোনয়নপত্র জমার দিন থেকেই পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এমন কি সন্ত্রাস সৃষ্টি করারও অভিযোগে সরব হন বিরোধীর। ফলে বিষয়টি গড়ায় আদালতে।

আদালত নির্বাচন প্রক্রিয়া কিছুদিন স্থগিত রাখায় নতুন করে এক দিনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন ধার্য করেছিল ২৩ এপ্রিল। তবে নির্বাচনের তারিখ সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার পর নেওয়ার কথা জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। যদিও গত চার দিনেও কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই বৈঠক করতে পারেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

ওদিকে রাজ্য সরকার বরাবর দাবি করে আসছে, রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই ভোট প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। এবং এর জন্য নির্বাচন করতে হবে এক দফায়। নির্বাচন কমিশন অবশ্য তিন দফার নির্বাচন থেকে সরে আসার যুক্তি হিসেবে আদালতের দেওয়া ভোটের নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দেয়।

তারা বলে, রাজ্য সরকার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে এক দফাতেই ভোট করা যেতে পারে। যদিও তারা কোনও চূড়ান্ত নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেনি। আর এরই মধ্যে গতকাল বিকাল ৩টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ফ্যাক্স বার্তায় নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেয়, নির্বাচন এক দফায় করতে চায় রাজ্য সরকার। এবং সেটা অবশ্যই ১৪ মে। নির্বাচন কমিশন মমতার সরকারের সেই নির্দেশনা মেনেই ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে।

মোট ৪৮ হাজার ৬৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন, পঞ্চায়েত সমিতির আসন ৯ হাজার ২১৭টি এবং জেলা পরিষদের ৮২৫টি আসনে নির্বাচন হবে। প্রায় ৫৮ হাজার বুথে ভোট নেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English
Gaza genocide

A civility test between Israelis and Palestinians

As opposed to the negative and pejorative assumptions about Palestinians, Israelis are routinely described as civilised and democratic.

8h ago