পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১২ জনের মৃত্যু, ‘নগণ্য’ বলল তৃণমূল

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে রাজ্যবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি করেও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারলেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা ব্যানার্জি। আজ (১৪ মে) সকাল সাতটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট চলাকালে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সৃষ্ট নৈরাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন এক ভোটারসহ অন্তত ১২ জন।
এছাড়াও, আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। তাঁদের মধ্যে ১৭ জন গুলিবিদ্ধ এবং সাতজন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে দুজন ভোটকর্মীর দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা ধরলে ভোট এবং ভোট সংশ্লিষ্ট সহিংসতায় পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের।
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব তথা রাজ্যটির শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই হতাহতের ঘটনাসহ গোটা রাজ্যের নৈরাজ্যকে অত্যন্ত ‘নগণ্য’ বলে অবহিত করেছেন। তিনি বলেন, “টেলিভিশনে যা দেখানো হচ্ছে সেটি অত্যন্ত নগণ্য। তবুও রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট চেষ্টা করছেন। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন চেষ্টা করে যাচ্ছে।”
বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় গোটা ঘটনাকে তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতা বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন দাবির সুপারিশ করা হচ্ছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে তিনি আলোচনা করবেন।”
সিপিআইএমের পলিটব্যুবোর সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে আজ ভোটের সহিংসতার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের মৃত্যু হলো।”
কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “নির্বাচনের নামে প্রহসনের সাক্ষী হয়ে থাকলো গোটা দেশ। লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।”
কলকাতার গণমাধ্যম, স্থানীয় সাংবাদিক এবং প্রশাসন সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, ভোট এবং ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে কলকাতার পাশের দুই জেলা উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় চারজন, নদীয়ায় দুজন, মুর্শিদাবাদে একজন, দক্ষিণ দিনাজপুরে দুজন, মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে দুজন সিপিআইএমের সমর্থকের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শান্তিপুরে নিহত হয়েছেন একজন ছাত্র। তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাশ করেছিলেন।
এদিকে ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপে এক দম্পতিকে পুড়িয়ে হত্যা করার ঘটনার ঘটে। অভিযোগ উঠছে, সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থক ছিলেন ওই দম্পতি। রাতের অন্ধকারে তাঁদের পুড়িয়ে মেরেছে তৃণমূলের কথিত সন্ত্রাসীরা।
এরই মধ্যে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ৩৪ শতাংশ আসনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছন সুপ্রিম কোর্ট। আগামী জুলাইয়ে সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানির পর সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশ করারও নির্দেশনা রয়েছে শীর্ষ আদালতের। তবে আজ যে আসনগুলোতে ভোট হলো সেগুলোর ফলাফল ঘোষণা করা হবে ১৭ মে।
Comments