কর্ণাটকে সরকার গড়বে কে? অঙ্ক নিয়েই রহস্য

কথায় বলে, প্রেম আর যুদ্ধ; দুটোতেই কোনও নীতি নেই। কথাটা যে ভোটযুদ্ধেও সমানভাবে প্রযোজ্য তা দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের নির্বাচনোত্তর মসনদ দখলের লড়াই থেকেও বোঝা যাচ্ছে।
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের নির্বাচনোত্তর মসনদ দখলের যুদ্ধ
কর্ণাটকের নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন ভারতীয় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। কিন্তু দেবগৌড়ার দল জেডিএসের সঙ্গে জোট গঠনের পরও সরকার গঠন নিয়ে এখন অনিশ্চয়তায় রয়েছে তারা। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে

কথায় বলে, প্রেম আর যুদ্ধ; দুটোতেই কোনও নীতি নেই। কথাটা যে ভোটযুদ্ধেও সমানভাবে প্রযোজ্য তা দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের নির্বাচনোত্তর মসনদ দখলের লড়াই থেকেও বোঝা যাচ্ছে।

২২৪ আসনের বিধানসভায় জয়ের সংখ্যার দিকে অন্য দলগুলোর থেকে এগিয়ে থেকেও সরকার গঠনে ‘ম্যাজিক’ সংখ্যায় পৌঁছতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি। অন্যদিকে বিজেপির চেয়ে পিছিয়েও ক্ষমতা দখলে এগিয়ে কংগ্রেস।

১৫ মে প্রকাশিত ফলাফলে প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস, জেডিএসের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিল বিজেপি। বিজেপি রাজ্যটির ১০৪, কংগ্রেস ৭৮, জেডিএস ৩৭ এবং নির্দল প্রার্থী ৩টি আসনে জয়লাভ করে। ২২৪ আসনের বিধানসভা হলেও দুটি আসনে ভোট স্থগিত থাকায় ভোট হয়েছিল ২২২ আসনে। হিসাব অনুযায়ী সরকার গঠন করতে প্রয়োজন হয় ১১২ ‘ম্যাজিক ফিগার’।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর কংগ্রেস-জেডিএস জোট করে ১১২ আসনের টার্গেট অতিক্রম করে সরকার গঠন করতে রাজ্যপালের কাছে আবেদন করবে বলে দুই দলের নেতারা ঘোষণা করেন। জেডিএস প্রধান দেবগৌড়ার ছেলে কুমারাস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়ে কংগ্রেস-জেডিএসের জোট সরকারের প্রায় রূপরেখা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেন সোনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। এমনকি মায়াবতীও দৌবেগৌড়াকে কংগ্রেসের এই প্রস্তাব মেনে নেওয়ার অনুরোধ করেন।

কিন্তু রাজ্যপাল ভাজুভাইয়া বুধবার সকাল পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলকে তার সঙ্গে দেখা করার সময় দেননি।

জনশ্রুতি রয়েছে, বিজেপি ঘনিষ্ঠ রাজ্যপাল। আর তাই বিজেপিকে সরকার গঠনের সুযোগ করে দিতেই তিনি কালক্ষেপণ করছেন- ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর এমনটাই দাবি।

রাজ্যপাল সময় না দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, এরই মধ্যে বিজেপি তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ছক কষে ফেলবে- এমন অভিযোগ করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলটির দাবি, রাজ্যপাল যদি শেষ পর্যন্ত বিজেপিকে সরকার গড়ার জন্য ডাক দেন তবে তারা আদালতের দ্বারস্থ হবেন।

ভারতের গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, ফল প্রকাশের পর থেকেই আত্মবিশ্বাসী বিজেপি সরকার গঠন করবে সেই দাবি জানিয়ে আসছিল। বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ‘ম্যাজিক ফিগার’ ছুঁতে না পারলেও তারা কংগ্রেস, নির্দল এবং জিডিএসের অন্তত ১০ জন বিধায়ককে পাশে পাচ্ছেন বলেও পত্রপত্রিকার খবরে বলা হচ্ছে। ক্ষমতায় বসার জন্য ভারতের এই ধরনের বিধায়ক কেনা-বেচার ইতিহাস খুবই শক্ত। কর্ণাটকে বিজেপি সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বলে দাবি করছেন দলটির সভাপতি অমিত শাহ।

যদিও কংগ্রেস নেতা গোলাম নবী আজাদ ও অশোক গলৌতের দাবি, দিনের শেষে কংগ্রেসেরই জয় হবে। বিজেপি বিরোধী জোট কর্ণাটকে তাদের রায় জানিয়েছেন। সেই রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই জেডিএসের সঙ্গে সরকার গঠন করা হবে। কংগ্রেসের স্পিকার আর জেডিএসের মুখ্যমন্ত্রী পদের ভাগাভাগিতেই এই সরকার গঠন করা হবে।

Comments