শেষ ওভারের নাটকীয়তায় এক রানের আক্ষেপ

মুশফিকুর রহিমের রোমাঞ্চকর ব্যাটিংয়ে এবার জয়ের একদম কাছে গিয়েও পারল না বাংলাদেশ। শেষ দুই ওভারের নাটকীয়তার আফগানিস্তান থেকে ঠিক এক রান কম করেছে সাকিব আল হাসানের দল।
শেষ দুই ওভারে জেতার জন্য ৩০ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। রশিদ খানের এক ওভার হাতে থাকায় ১৯তম ওভারেই বড় কিছু করতে হতো। মুশফিকুর রহিম তাই বেছে নিলেন করিম জানাতকে। টানা পাঁচ চারে এক ওভারেই নিলেন ২১ রান। শেষ ওভারে দাঁড়ায় ৯ রানের। রশিদের প্রথম বলেই মুশফিকের আউট হওয়ার পর ৫ বল থেকে এলো ৫ রান। শেষ বলে দরকার ছিল বাউন্ডারির। সেই চেষ্টায় অনেকটা সফলও হয়েছিলেন আরিফুল হক। কিন্তু অসম্ভব ক্ষিপ্রতায় বাউন্ডারি লাইন থেকে বল ফিরিয়ে দেন শফিকুল্লাহ। তিন রান নিতে গিয়ে কাটা পড়েন মাহমুদউল্লাহ।
১৪৬ রান তাড়ায় গিয়ে তাই ১৪৪ রানে থেমে যেতে হয় টাইগারদের। এই জয়ে তিন ম্যাচের সবগুলোতেই জিতে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করল আফগানিস্তান। এই প্রথম টেস্ট খেলুড়ে কোন দেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করল আফগানিস্তান।
১৪৬ রানের লক্ষ্যে শুরুটা একদম নড়বড়ে হয় বাংলাদেশের। উইকেটে হাঁসফাঁস করতে থাকা তামিম ৫ রান করেই ফেরত যান। কিছুটা স্বচ্ছন্দে ব্যাট করছিলেন লিটন দাস। ওয়ানডাউনে নেমে তার সঙ্গে যোগ দেন সৌম্য সরকার। নেমেই ছটফট করতে থাকা সৌম্য মুজিব উর রহমানকে রিভার্স সুইপে ছক্কা মেরে সরিয়েছিলেন চাপ। এক ওভার থেকে ১৩ রান তুলে দিয়েছিলেন স্বস্তি। তবে পরের ওভারেই অবিশ্বাস্যভাবে একইরকমভাবে রান আউট হয়েছেন দুজনেই।
মোহাম্মদ নবীর বলে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগে পাঠান লিটন। সৌম্যের ডাকে রান নিতে প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। কিন্তু অতি উৎসাহী হয়ে সৌম্য তখন অনেকটা এগিয়ে গেছেন। ফিরতে পারেননি সময়মত। ঠিক তিন বল পর হুবহু একই দৃশ্য দেখিয়েছেন লিটন নিজেও। এবার স্ট্রাইকিং প্রান্তে মুশফিক ছিলেন হতভম্ব।
খানিক পরে ১০ রান করে করিম জানাতকে উইকেট দিয়ে ফিরে যান সাকিবও। ৩২ থেকে ৫৩ রানে যেতে আরও তিন উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। ওখান থেকেই মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে চেষ্টা করেছিলেন টেনে তোলার। ৮৪রানের জুটিতে দেখাচ্ছিলেন আশা। ম্যাচ শেষ দুই ওভারে নিয়ে এসেও শেষ পর্যন্ত তীরে ভেড়াতে পারেননি তরী।
৩৭ বলে সর্বোচ্চ ৪৬ করেন মুশফিক। শেষ বলে রান আউটের আগে মাহমুদউল্লাহর রান ছিল ৩৮ বলে ৪৫।
রশিদ-মুজিবকে আগের দুই ম্যাচের অনেকটা ভালো সামলেছিলেন ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু ছোটখাটো কয়েকটি ভুল কেড়ে নিয়েছে সম্ভাবনা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া আফগানিস্তানকে বেশ চেপেই রেখেছিলেন বোলাররা। মেহেদী হাসান মিরাজ ছাড়া সব নিয়মিত বোলারই মিটিয়েছিলেন দলের চাহিদা। বিশেষ করে দুই বাঁহাতি স্পিনার অধিনায়ক সাকিব ও নাজমুল ইসলাম অপু করেছেন আঁটোসাঁটো বোলিং। সাকিব ১৬ রানে ১ ও অপু ১৮ রানে নেন ২ উইকেট। তবু আফগানদের ১৪৫ রানে আটকে রেখেও লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ।
হতাশার সিরিজে প্রায় সব কিছুই গেছে নিজের বিপক্ষে।
Comments