শোলাকিয়া ঈদগাহে উড়বে শক্তিশালী ক্যামেরাসমৃদ্ধ ড্রোন
দেশে প্রথমবারের মতো নিরাপত্তা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। আর তা ব্যবহার করা হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
বার্তা সংস্থা বাসস আজ (১৫ জুন) এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রথমবারের মতো নিরাপত্তা কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ড্রোন। মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি থাকবে বিজিবিও।
প্রতিবেনটিতে আরও বলা হয়, দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাতের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানকে। এখানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়।
এ ছাড়া দূরের মুসল্লীদের জন্য থাকছে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস।
১৮২৮ সালে ঈদের জামাতে এখানে সোয়া লাখ মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। যা এখন ‘শোলাকিয়া’ নামে পরিচিত।
এবার শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে ১৯১তম ঈদ-উল ফিতরের জামাত। এতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
ইতোমধ্যে মাঠ সংস্কারের কাজসহ সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। শোলাকিয়ায় ঈদের নামাজ পড়লে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়- এমন বিশ্বাসে প্রতিবছর দেশ-বিদেশের লাখো মানুষের ঢল নামে এখানে।
এদিকে, ঈদ জামাত নির্বিঘ্ন করতে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, ঈদের দিন র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করবে সাদা পোশাকের নিরাপত্তা বাহিনী। মাঠের প্রতিটি প্রবেশ পথে থাকছে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। নামাজ শুরুর আগে পুরো মাঠ মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হবে। মাঠের চারপাশে থাকবে বিজিবি সদস্যরা।
নিরাপত্তার স্বার্থে পাতলা জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে নিয়ে মাঠে প্রবেশ করা যাবে না বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, চারস্তরের নিরাপত্তায় বলয়ে পুরো এলাকাকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। ২৪টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৬ সালের জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, ১২জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পাঁচ প্লাটুন বিজিবি সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাসউদ জানান, মুসল্লিদের যাতায়তের সুবিধার্থে ঈদের দিন ভোরে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন কিশোরগঞ্জ আসবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ভৈরব থেকে ভোর ৬টায় একটি ট্রেন শোলাকিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। পৌঁছবে সকাল ৮টায়। ভোর পৌনে ৫টায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা অপর ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে সকাল সাড়ে ৮টায়। নামাজ শেষে দুপুর ১২টায় ট্রেন দুটি আবার মুসল্লিদের নিয়ে ময়মনসিংহ ও ভৈরব ফিরে যাবে।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ইদগাহের জন্য জমি ওয়াকফ করেন, ঈশা খাঁর বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খান। তারও দু’শ বছর আগে থেকে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রায় সাত একর জমির উপর অবস্থিত শোলাকিয়া মাঠের পশ্চিম সীমারেখা উত্তর-দক্ষিণে ৩শ ৩৫ ফুট এবং পূর্ব সীমা রেখা উত্তর দক্ষিণে ৩শ ৪১ ফুট, উত্তর সীমারেখা পূর্ব পশ্চিমে ৭শ ৮৮ ফুট এবং দক্ষিণ সীমারেখা পূর্ব-পশ্চিমে ৯শ ১৪ ফুট।
Comments