সেই নেইমার এখন ব্রাজিলের 'ভিলেন'

দুর্দান্ত এক দল নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে পা রেখেছে পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। কিন্তু প্রথম ম্যাচে নিজেদের মতো খেলতে পারেনি দলটি। সে ম্যাচে সুইসদের মূল প্রতিপক্ষই যেন ছিল পিএসজি সুপারস্টার নেইমার। পায়ে বল গেলেই ফাউল করে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। কিন্তু এতো মার খাওয়ার পর সহানুভূতি তো দূরের কথা উল্টো তাকেই দুষছে ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যম।
Neymar

দুর্দান্ত এক দল নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে পা রেখেছে পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। কিন্তু প্রথম ম্যাচে নিজেদের মতো খেলতে পারেনি দলটি। সে ম্যাচে সুইসদের মূল প্রতিপক্ষই যেন ছিল পিএসজি সুপারস্টার নেইমার। পায়ে বল গেলেই ফাউল করে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। কিন্তু এতো মার খাওয়ার পর সহানুভূতি তো দূরের কথা উল্টো তাকেই দুষছে ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যম।

রোববার সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের ১১ মিনিটে কৌতিনহোর নান্দনিক এক গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ওই পর্যন্তই। এরপর ভালো কোন সুযোগও তৈরি করতে পারেনি দলটি। দলের সেরা তারকা নেইমার ছিলেন নীরব। একেক প্রচেষ্টায় বেশ কয়েকবারই আক্রমণ শানাতে চেষ্টা করছেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন সুইস ডিফেন্ডারদের আগ্রাসনে। পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয় সেলেকাওদের।

মূলত নেইমারের এই একক প্রচেষ্টাকেই ভালো চোখে দেখেনি ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যম। সেটা না করে সতীর্থদের বল পাস দিলে আরও ভালো কিছু হতো বলেই তাদের বিশ্বাস। ইএসপিএনের ব্রাজিলিয়ান প্রতিবেদক আরনল্ড রিবেইরো সরাসরিই বলেছেন, ‘নেইমার ছিল সম্পূর্ণ বিপর্যয়কর। সে পুরো ম্যাচ খেলার মতো ছিল না। তাকে অবশ্যই তুলে নিয়ে নেওয়া উচিত ছিল। ব্রাজিল দারুণ দলটি দল। সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার মতো মেধা আছে। কিন্তু নেইমার নিজের জন্যই ম্যাচটা জিততে চেয়েছে এবং সে ব্যর্থ হয়েছে।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ইনজুরিতে পড়েছিলেন নেইমার। এরপর প্রায় তিন মাস মাঠের বাইরে থাকার পর ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফেরেন তিনি। এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেননি। আর এটাকে স্রেফ অজুহাত হিসেবেই দেখছেন রিবেইরো, ‘সে তার সাম্প্রতিক অস্ত্রোপচারের অজুহাত দেখাচ্ছে। কিন্তু সে ভালো খেলতে পারেনি এবং দলের জন্য ভালো কিছুই করতে পারেনি। আমার মনে হয়, তার চেয়ে ডগলাস কস্তাই ভালো খেলতে পারত। আমি এখনও কিছুতেই বুঝতে পারছি না, সে কেন খেলতে পারছে না।’

শুধু রিবেইরোই নন, তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন অনেক সাবেক ফুটবলারই। সাবেক ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ও বর্তমান ইএসপিএন ধারাভাষ্যকার জি ইলিয়াস বলেছেন, ‘মাঠে সে (নেইমার) ছিল স্বার্থপর। সে কারণেই সে বেশি বেশি ফাউলের শিকার হয়েছে। তবে আমি মনে করি না, তাকে লক্ষ্য করেই তারা (সুইজারল্যান্ড) খেলেছে। সমস্যা হলো, নেইমার দলের হয়ে খেলাটা ভুলে গেছে এবং বল পাস না দিয়ে ধরে রেখেছে।’

নেইমারের উপর তোপ দাগিয়েছেন ফক্স স্পোর্টস ব্রাজিলের প্রতিবেদক ওসভালদো প্যাসকলও। নেইমারের খেলাকে রীতিমতো অমার্জিত বলেছেন তিনি, ‘সে আসলে অমার্জিত ফুটবল খেলেছে। বিস্ময়কর হলো, কোচ তিতে তাকে (ডগলাস কস্তা) এক মিনিটও খেলার সুযোগ দেয়নি।’

আর ও’তেম্পো ব্রাজিলের ফুটবল লেখক থিয়াগো নগেইরা তো আর এক কাঠি সরেস। ব্রাজিলের জয় না পাওয়ার জন্য নেইমারই দায়ী করেছেন এ ফুটবল বোদ্ধা, ‘ম্যাচে নেইমারের অবদান সামান্যই। প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম। আর এ কারণেই ব্রাজিল সুইজারল্যান্ডকে হারাতে পারেনি।’

মোদ্দাকথা, পুরো ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যম নেইমারের উপর বেশ খেপেই আছে। অথচ কদিন আগেও এই নেইমারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল তারা। মাত্র ২৬ বছরেই নেইমার জাতীয় দলের জার্সিতে ৫৫টি গোল দিয়ে ছুঁয়েছেন রোমারিওকে। তার সামনে কেবল রয়েছেন রোনাল্ডো ও পেলে। ক্যারিয়ারের বড় ধাক্কা না লাগলে তাদের ছাড়িয়ে যাওয়া কেবল সময়ের ব্যাপারই মাত্র।

Comments