আর্জেন্টিনাকে উড়িয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ক্রোয়েশিয়া

দুর্ভাগ্যটা বয়ে এনেছিলেন গোলরক্ষক উইলফ্রেদো কাবায়েরো। এরপর লুকা মাদ্রিচের নয়ন জুড়ানো গোল। শেষদিকে অলআউট খেলতে গিয়ে খায় আরও একটি। সবমিলিয়ে প্রথম রাউন্ড থেকে আর্জেন্টিনার বিদায়ের ব্যবস্থা প্রায় করে দিল ক্রোয়েশিয়া। আর নিজেরা নিশ্চিত করেছে দ্বিতীয় রাউন্ড। পাশাপাশি ১৯৯৮ বিশ্বকাপে হারের প্রতিশোধটা ভালোভাবেই নিল ভ্যাতরেনিরা।

কাগজে কলমে হয়তো এখনও সুযোগটা আছে আর্জেন্টিনার। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ ভাগ্যের সুতোয়। অন্য দলের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের। আর ভাগ্যটা যদি তাদের সঙ্গেই থাকতো তাহলে কি এমন সহজ ভুল করেন কাবায়েরো। ৫৩ মিনিটে তার ভুলে বল গোল করেন আন্তে রবিচ। উপহার পেলেও দারুণ ফিনিশিং দিয়েছেন এ ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড। এরপর ম্যাচের উত্তেজনা বাড়লেও আর্জেন্টাইনদের আক্রমণের ধার বাড়েনি।

শান্ত স্বভাবের মেসিও এদিন নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। মেজাজ হারিয়ে বেশ কয়েকবারই বানানুবাদে জড়িয়েছেন আর্জেন্টাইনরা। কাজের কাজ যেটা, সেটা করতে চরমভাবে ব্যর্থ দলটি। মাঝ মাঠ থেকে সংঘবদ্ধ আক্রমণগুলো অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়েই খেই হারিয়েছে। অলআউট খেলতে গিয়ে উল্টো ৮০ মিনিটে আবারো গোল খেয়ে বসে দলটি। ডি বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত শটে বল জালে জড়ান অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ।

ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে গোল খায় আরও একটি। আন্দ্রেজ ক্রামারিচের বাড়ানো বলে অফ সাইডের আবেদন করেছিলেন আর্জেন্টাইনরা। গা যেন নড়ছিল না তাদের। তাতে কি আর বসে থাকে ক্রোয়েটরা। নিজেদের মধ্যে দেয়া নেওয়া করে নিখুঁতভাবে বল জালে জড়ান ইভান রকিতিচ। গোল হতে পারতো আরও। ৮৬ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে নেওয়া রকিতিচের শট বারে লেগে ফিরে না আসলে লজ্জাটা আরও বড় হতো আলবিসেলেস্তাদের।

নিঝনি নোভগোরোদে বৃহস্পতিবার গোল করার মতো সুযোগ এদিন প্রথম পায় ক্রোয়েশিয়া। ৫ মিনিটে রকিতিচের পাস থেকে বার পোস্টের ডান প্রান্তে কোনাকোনি শট নিয়েছিলেন ইভান পেরিসিচ। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে যাত্রায় দলকে রক্ষা করেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক কাবায়েরো। ১২ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। মেক্সিমিলিয়ো মেজার বাড়ানো বল নাগাল পাননি মেসি।

আর্জেন্টিনার হয়ে ৩০ মিনিটে দিনের সেরা সুযোগটি পেয়েছিলেন এনজো পেরেজ। ডি বক্সের মাঝে ফাঁকায় বল পেয়েও বাইরে মারেন তিনি। তিন মিনিট পর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়াও। সিমে ভ্রসালজিকোর ক্রসে মারিও মানজুকিচ মাথা ছোঁয়াতে পারলে এগিয়ে যেতে পারতো তারা।  প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন রেবিচ। লুকা মাদ্রিচের বল প্রথম প্রচেষ্টায় বল ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারলে এগিয়ে যেতে পারতো তখনই।

আগের ম্যাচে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে বারে ১১টি শট নিয়েছিলেন মেসি। দলের সব খেলোয়াড়কে দেখা গিয়েছিল মেসিকে পাস দিতে। কিন্তু এদিন যেন তারা প্রমাণ করতে নেমেছিলেন দলটি আর মেসি নির্ভর নয়। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকলেও প্রায় দেখা গিয়েছে মেসিকে পাস না দিয়ে নিজেরা বারে শট নিয়েছেন। হয়তো দলের কৌশল এমনই ছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। উল্টো বড় হারের লজ্জায় দেশের বিমান ধরার পথে রয়েছে দলটি।

আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় রাউন্ড এখন সম্পূর্ণ নির্ভর করছে অন্যদলগুলো ফলাফলের উপর। শেষ ম্যাচে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জিততে তো হবেই। পাশাপাশি শুক্রবার আইসল্যান্ডের বিপক্ষে সুপার ঈগলদের জয় কামনা করতে হবে। আর ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষেও জয়হীন থাকতে হবে আইসদের। আর যদি কাল আইসল্যান্ড জিতেই যায় তাহলে শেষ ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে হারতেই হবে। এবং নাইজেরিয়ার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিততেই হবে আর্জেন্টিনার।

Comments

The Daily Star  | English

Pilots faked flying records

CAAB inquiry finds, regulator yet to take action

10h ago