আরেকবার রোনালদোকে আটকাতে পারবেন গডিন?
ক্লাব ফুটবলে তাঁরা একে অন্যের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী। রিয়াল মাদ্রিদের ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ডিয়েগো গডিন একে অন্যের মুখোমুখি হয়েছেন অসংখ্যবার। তবে এবার ক্লাব নয়, একে অন্যের মুখোমুখি হচ্ছেন দেশের জার্সি গায়ে, তাও আবার ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চে।
এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত একটিও গোল হজম না করে শেষ ষোলোতে উঠেছে উরুগুয়ে। আর উরুগুইয়ানদের ডিফেন্সের মূল স্তম্ভ অধিনায়ক গডিন। সম্প্রতি ডিয়েগো ম্যারাডোনা তাঁর প্রশংসা করে বলেছেন, ‘গডিন একজন সত্যিকারের তারকা। সে ডিফেন্ড করে, নেতৃত্ব দেয়, গোলও করে, শিরোপা জেতে আবার কোন ম্যাচ মিসও করে না।’
রক্ষণকাজটা যে ভালোই পারেন, পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে তা অনেকবার প্রমাণ করেছেন এই সেন্টারব্যাক। গত মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মোট ৩৪ টি ম্যাচে কোন গোল খায়নি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, আর এর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান গডিনের। শুধু ক্লাব নয়, দেশের হয়েও নিজের সেরাটা দিয়ে চলেছেন তিনি। ২০১৮ সালে উরুগুয়ে যে ছয়টি ম্যাচ খেলেছে, কোন ম্যাচেই দলের জালে বল ঢুকতে দেননি।
তবে এবারে সম্ভাব্য শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সামনেই পড়তে হচ্ছে গডিনকে। ৩৩ বছর বয়সী রোনালদো যে এবারের বিশ্বকাপে শিকারি মুডে আছেন! এখনও পর্যন্ত চার গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় আছেন দ্বিতীয় স্থানে। বিশ্বকাপের শুরুটাই করেছেন স্পেনের মতো দলের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে। ফেরেঙ্ক পুসকাসকে ছাড়িয়ে ইউরোপিয়ান খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক গোলের রেকর্ডটাও করেছেন এই বিশ্বকাপেই। গডিনের জন্য কাজটা তাই মোটেও সহজ হবে না। তার উপর গত দুই বছরে গডিনের অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষেই দুটি হ্যাটট্রিক করেছেন রোনালদো। আত্মবিশ্বাসের পাল্লা তাই তাঁরও বেশ ভারী থাকবে।
তবে এই দ্বৈরথে আরেক ক্লাব সতীর্থ হোসে মারিয়া গিমেনেজকেও পাশে পাচ্ছেন গডিন। অ্যাটলেটিকোর হয়ে দুজনে মিলে রোনালদোকে নিষ্প্রভ রেখেছেন বেশ কয়েকবার, আগামীকাল সোচিতেও তাঁরা রোনালদোকে আটকে রাখতে পারলে কোয়ার্টার ফাইনালের পথ অনেকটাই সুগম হবে উরুগুয়ের।
পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোস অবশ্য উরুগুয়ে ম্যাচটা সহজ হবে না বলেই মনে করছেন, ‘উরুগুয়ে একদম প্রথাগত লাতিন ফুটবল খেলে। তারা যে শুধু এই বিশ্বকাপেই গোল খায়নি তা না, পুরো ২০১৮ জুড়েই নিজেদের জাল অক্ষত রেখেছে তারা। অস্কার তাবারেজের মতো একজন কোচ আছেন তাদের, যিনি কি না আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কোচের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। খেলোয়াড়দের সাথে তাঁর বোঝাপড়া নিশ্চয়ই দারুণ।’
উরুগুয়েও কেবল রোনালদোর উপরেই নিজেদের মনোযোগ রাখতে চাইছে না। বার্নার্দো সিলভা ও গন্সালো গুয়েদেসের মতো প্রতিভাবান তরুণেরাও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন বলে মনে করছেন উরুগুইয়ান খেলোয়াড় সেবাস্তিয়ান কোয়াতেস, ‘রোনালদো সুপারস্টার হতে পারে, তবে অন্যদের যেভাবে মার্ক করি, তাঁকেও একইভাবে মার্ক করে রাখব আমরা। কেবল একজন খেলোয়াড়ের কথা ভেবে আমরা ম্যাচের প্রস্তুতি নিতে পারি না।’
Comments