এবার টাইব্রেকারে স্বপ্নভঙ্গ স্বাগতিক রাশিয়ার

ইভান রকিতিচ যখন শেষ পেনাল্টিটি নিতে আসলেন সোচির ফিস্ট স্টেডিয়ামের প্রায় ৪৪ হাজার দর্শক তখন তাকিয়ে ছিল ইগোর আকিনফেভের দিকে। এ নায়কই যে স্পেনকে বিদায় করে শেষ আটে এনেছিল দলকে। কিন্তু এদিন পারলেন না। ভাগ্যটা তাকে সঙ্গ দেয়নি। আর তাতে কোয়ার্টার ফাইনালেই রূপকথার গল্পটা শেষ হয় স্বাগতিকদের। ১৯৯৮ সালের পর আবার সেমিফাইনালে উঠল ক্রোয়েশিয়া।



হিরো থেকে জিরো কিভাবে হয় এদিন কাছ থেকেই দেখলেন মারিও ফার্ন্দান্দেজ। অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে পিছিয়ে থাকা রাশিয়া তার গোলেই ফেরে সমতায়। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে গিয়ে তিনিই বাইরে মেরে দেন শট। ভাগ্যও ছিল না। তা না হলে লুকা মদ্রিচের নেওয়া পরের শটটি প্রায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আকিনফেভ। কিন্তু বারে লেগেও তা জালে প্রবেশ করে।

আর তাতে প্রথমবারের মতো স্বাগতিকদের বাধা পার করতে পারল ক্রোয়েশিয়া। এর আগে দুইবার স্বাগতিকদের সামনে পড়ে হারতে হয়েছিল তাদের। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের কাছে ১-২ গোলে আর ২০১৪ সালে ব্রাজিলের কাছে ১-৩ গোলে হারে। তবে এবার ম্যাচ জিততে না পারলেও পরের রাউন্ডের টিকেট কেটে নিয়েছে মদ্রিচের দল। আর ১৯৯০ সালের পর এবারই প্রথম কোন স্বাগতিক দলের দৌড় থামল কোয়ার্টার ফাইনালে।

অথচ শেষ ষোলোর গণ্ডিটা টাইব্রেকারের ভাগ্য পরীক্ষা দিয়েই পার করেছিল রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া। আর তাতে নায়ক ছিলেন দুই দলের গোলরক্ষক। সেমিফাইনালের যাওয়ার পথে আকিনফেভকে ঠেলে নায়ক হলেন ক্রোয়েট গোলরক্ষক ড্যানিয়েল সোবাসিচ।

ভাগ্যটা সঙ্গে ছিল বলেই ম্যাচে খেলা হয় সোবাসিচের। ৮৯ মিনিটে ইনজুরিতে পড়েছিলেন। খেলোয়াড় বদল করার সুযোগ থাকলে তখনই বদল করা হতো। কিন্তু কোন মতে খোঁড়া পায়েই খেলেন। তবে অতিরিক্ত সময়ে নামার আগে শুশ্রূষায় ঠিক হলেন। ওই দিকে মাঠে নেমেই ইনজুরিতে সিমি ভ্রাসাইকো। বদল ছাড়া উপায় নেই। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকলেন সোবাসিচ।

সোচিতে এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই সমান তালে লড়াই করেছে রাশিয়া। হয়তো আক্রমণ কিছু বেশি করেছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু তাদের দারুণ ভাবেই সামাল দিচ্ছিল রুশ ডিফেন্ডাররা।  এমনকি শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল তারাই। ম্যাচের ৩১ মিনিটে আরতেম জুবার কাছ থেকে বল পেয়ে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন ডেনিশ চেরিশেভ। 

তবে সমতায় ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি ক্রোয়েশিয়া। চার মিনিট পরই ম্যাচে ফেরে তারা। মান্দজুকিচের ক্রস থেকে ফাঁকায় পেয়ে যান আন্দ্রেজ ক্রামারিচ। দারুণ হেডে বল জালে জড়ান তিনি।  ৫৯ মিনিটে ক্রামারিচের হেড ঠিকভাবে ফেরাতে পারেননি রাশিয়ান ডিফেন্ডাররা। বল পেয়ে যান ইভান পেরিসিচ। তবে দুর্ভাগ্য ক্রোয়েশিয়ার। ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও বারে লেগে ফিরে আসে বল।

৯৯ মিনিটে দিনের সেরা সুযোগটি পেয়েছিলেন রাশিয়ার ফেদর স্মোলোভ। গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে কিছুটা দেরি করে ফেলায় পেছন থেকে দারুণ ট্যাকেল করে বিপদমুক্ত করেন দেজান লোভরেন। পরের মিনিটেই স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দেন দোমাগোজ ভিদা। কর্নার থেকে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।

১১৪ মিনিটে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় রাশিয়া। সেই ফ্রি কিক থেকে দারুণ এক হেডে থেকে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম গোল করে স্বাগতিকদের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখেন মারিও ফার্নান্দেজ। উল্লাসে মাতে রুশরা। কিন্তু স্নায়ু পরীক্ষায় এবার আর নতুন রূপকথা না হলে শেষ আটেই থামতে হয় তাদের।

Comments

The Daily Star  | English

Israel launches major attack on Iran

‘Nuclear plant, military sites’ hit; strikes likely killed Iranian chief of staff, top nuclear scientists; state of emergency declared in Israel, fearing Iranian retaliation

56m ago