ভিসি বচন এবং...

VC speech

আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কর্মপদ্ধতির মিল রয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেছেন,  ‘তালেবান জঙ্গিরা বিভিন্ন গোপন আস্তানা থেকে যে রকম উসকানিমূলক ভিডিও বার্তা পাঠায়, তার অবিকল উগ্র চরমপন্থী মতাদর্শ প্রচারণামূলক ভিডিও আমি নিজে দেখেছি।’

গতকাল উপাচার্য তার কার্যালয়ে বলেন, ‘তালেবান নেতা মোল্লা ওমর ও ওসামা বিন লাদেনের মতো ভিডিও বার্তা পাঠানো হচ্ছে।’ নিজে ফেসবুক ব্যবহার করেন না, তার এক সহকর্মী তাকে এই এমন ভিডিও দেখিয়েছেন বলে জানান তিনি।

কোটা আন্দোলনের সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতার কথা জানা আছে কিনা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোন সংগঠন জানি না। কিন্তু ফেসবুকে যে ভিডিও দেখেছি, সে ভিডিও জঙ্গিদের ধরনের। সেখানে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার কথা বলা হয়েছে। এসব দেখে মনে হয়েছে অশুভ কোনো শক্তির তৎপরতা রয়েছে।’

আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে ভিসি বলেন, ‘জঙ্গিরা যেভাবে শেষ অস্ত্র হিসেবে নারীদের ব্যবহার করে, সেভাবে কোটা আন্দোলনেও ছাত্রীদের ব্যবহার করা হচ্ছে।’

ভিসির এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কোন কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি [ভিসি] এমন কথা বললেন তা আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তারা [আন্দোলনকারীরা] কি মৌলবাদীদের মতো নাশকতা, হত্যা বা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর উস্কানি দিচ্ছেন?’

যুগটাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষ তাদের কাজ করছেন। যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে এটা ব্যবহার করায় আমি কোনো সমস্যা দেখি না। তাদের বক্তব্য ক্ষতিকর হলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। …আন্দোলনকারীরাই যেখানে নির্যাতিত হচ্ছে সেখানে উপাচার্যের এ ধরনের একপেশে বক্তব্য লক্ষ্য করার মতো, মন্তব্য সুলতানা কামালের।

তিনি আরও বলেন, যারা নিপীড়ন চালাচ্ছে তাদের কাউকে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়নি, শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। আমি এর নিন্দা জানাই। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ ছিল। আমি মনে করি এদিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যর্থ হয়েছে।

গণতান্ত্রিক সমাজে আন্দোলন করা জনগণের সাংবিধানিক অধিকার-মন্তব্য সুলতানা কামালের।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক, লজ্জাজনক ও অবিশ্বাস্য। এটা পাকিস্তান বা ব্রিটিশ আমলে ঘটেনি।’

গতকাল রোববার ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে পদযাত্রা করেন বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষকরা। কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও এই পদযাত্রায় যোগ দেন। পদযাত্রাটি শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এসব কথা বলেন তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ‘ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক আন্দোলন’ হিসেবেও উল্লেখ করেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago