কে হবেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়?
প্রতিটি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়কে তার পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি হিসেবে দেয়া হয় গোল্ডেন বল পুরষ্কার। গতবার এই পুরষ্কার জিতেছিলেন লিওনেল মেসি। তবে এবার আগেভাগেই বিদায় নেয়ায় নিশ্চিতভাবেই অন্য কারোর হাতে উঠতে যাচ্ছে গোল্ডেন বল। কিন্তু কে হতে পারেন তিনি? টুর্নামেন্টের এখনও পর্যন্ত পারফরম্যান্স অনুযায়ী গোল্ডেন বলের যোগ্য দাবিদার হিসেবে সামনে চলে আসছে তিনজনের নাম- লুকা মদ্রিচ, এডেন হ্যাজার্ড ও আতোঁয়ান গ্রিজম্যান।
লুকা মদ্রিচ; ক্রোয়েশিয়া:
অধিনায়কোচিত পারফরম্যান্স বলে যদি কিছু থেকে থাকে, সেটা এবারের বিশ্বকাপে দেখাচ্ছেন মদ্রিচ। ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠের প্রাণভোমরা হয়ে নিয়ন্ত্রণ করছেন গোটা দলের খেলাকে। মানজুকিচ-ক্রামারিচদের উদ্দেশ্যে একের পর এক বল তো বাড়াচ্ছেনই, নিজেও গোলের দেখা পেয়েছেন। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচেই গোল করেছেন, আর্জেন্টিনার বিপক্ষে করা গোলটি তো এই বিশ্বকাপেরই সেরা গোলের তালিকায় থাকার দাবিদার।
পুরো মাঠ জুড়ে দৌড়ে দলের রিদম ঠিক রেখেছেন, ম্যাচপ্রতি গড়ে দৌড়েছেন ১০ কিলোমিটারেরও বেশি। দুই গোলের পাশাপাশি সতীর্থকে দিয়ে করিয়েছেন এক গোল। সতীর্থদের উদ্দেশ্যে পেনাল্টি বক্সে মোট ১১ টি বল বাড়িয়েছেন। শুধু মিডফিল্ডে নয়, দলের রক্ষণে নেমেও খেলেছেন, যার প্রমাণ তার ৮ টি ট্যাকল। ক্রোয়াট কোচ তো বলেই দিয়েছেন, এবারের গোল্ডেন বলটা মদ্রিচেরই প্রাপ্য। ক্রোয়েশিয়া শিরোপা জিতুক কিংবা নাই জিতুক, গোল্ডেন বলের বড় দাবিদারই থাকবেন মদ্রিচ।
এডেন হ্যাজার্ড; বেলজিয়াম:
ক্রোয়েশিয়ার জন্য মদ্রিচ যা করছেন, বেলজিয়ামের জন্য ঠিক একই কাজ করছেন এডেন হ্যাজার্ড। মদ্রিচের মতো তিনিও দলের অধিনায়ক, আর অধিনায়কত্বের সেই দায়িত্ব সামলে চলেছেন ভালোভাবেই। টুর্নামেন্টে চার ম্যাচ খেলে দুই গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়েও দুই গোল করিয়েছেন। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথমার্ধে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্সকে নিজের গতি দিয়ে নাচিয়ে ছেড়েছেন, বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এক ম্যাচে ১০ টি ওয়ান-অন-ওয়ান সিচুয়েশনের সবকয়টিই জিতেছেন।
সতীর্থদের উদ্দেশ্যে পেনাল্টি বক্সে ১১ টি বল বাড়িয়েছেন, লুকাকু-মার্টেন্সদের জন্য প্রচুর সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছেন প্রতি ম্যাচেই। এমন ফর্ম ধরে রাখতে পারলে হ্যাজার্ডের গোল্ডেন বল জেতার খুব ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
আতোঁয়ান গ্রিজম্যান:
ফ্রান্স দলের প্রাণভোমরা বলা চলে গ্রিজম্যানকে। গোল্ডেন বলের লড়াইয়ে থাকা তিনজনের মধ্যে গ্রিজম্যানের গোলই সবচেয়ে বেশি, ৩ টি। অনেক বড় বড় খেলোয়াড়ই যেখানে নকআউট পর্বে এসে হারিয়ে খোঁজেন নিজদের, সেখানে নকআউট পর্বের দুই ম্যাচেই গোল করেছেন তিনি। নিজে গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়েও একটি গোল করিয়েছেন। ইউরো ও বিশ্বকাপ মিলিয়ে নিজের শেষ ছয়টি নকআউট ম্যাচে সাত গোল করেছেন গ্রিজম্যান। নকআউট পর্বে গোল করার এই বিস্ময়কর ধারাবাহিকতা যদি বজায় রাখতে পারেন সামনের দুটি ম্যাচেও, গ্রিজম্যানের গোল্ডেন বল জেতার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে অনেকটাই।
Comments