তৃতীয়ও হতে পারল না ইংল্যান্ড
শেষ আটের গণ্ডি পেরিয়ে যখন সেমিফাইনালে উঠল, ব্রিটিশ মিডিয়ায় বিশ্বকাপ জিতে নেওয়ারই শোরগোল উঠেছিল। কিন্তু ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে তাদের প্রথমে ভড়কে দেয় ক্রোয়েশিয়া। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচেও বেলজিয়ামের কাছে পেরে উঠল না তারা। জুটল না সান্ত্বনাও। থমাস মিউনিয়ার ও এডেন হ্যাজার্ডের গোলে ইংলিশদের ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে তৃতীয় হয়ে বিশ্বকাপ শেষ করেছে বেলজিয়াম।
চলতি আসরে এ দুই দলের এটা ছিল দ্বিতীয় লড়াই। এর আগে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল বেলজিয়াম। আগেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হওয়ায় সে লড়াইয়ে গা ছাড়া ভাবে খেলেছিল দুই দলই। মূল একাদশ থেকে একদল নয়টি, আরেকদল আটটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছিল। তবে এদিন সেরা একাদশ নিয়েই মাঠে নামে তারা। ফলে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ প্রতি আক্রমণে খেলা এগিয়ে চলে।
ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে ইংলিশরা। পরিকল্পিত প্রথম আক্রমণেই গোল। নাসের ছাদলির ক্রস থেকে ডান পায়ের জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন মিউনিয়ার। এগিয়ে গিয়েও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে বেলজিয়াম। প্রথমার্ধে দুই দলই বেশ কিছু সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় দারুণ আক্রমণ করেও আর গোলের দেখা পায়নি কেউই।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মার্কাস রাশফোর্ড ও জেসে লিংগার্ডকে নামান ইংলিশ কোচ সাউথগেট। তাতে অপেক্ষাকৃত গোছানো ফুটবল খেলতে থাকে দলটি। দারুণ কিছু আক্রমণ করে তারা। ৭০ মিনিটে গোল প্রায় পেয়েও গিয়েছিলেন। বেলজিয়ান গোলরক্ষক থিবো কোর্তয়াকে বোকা বানিয়েছিলেন এরিক দিয়ের। মাথার উপর দিয়ে ভলি করে জালের দিকে বল ঠেলে দিয়েছিলেন। কিন্তু গোল লাইন পার হওয়ার আগে দারুণভাবে তা ফিরিয়ে দেন ডিফেন্ডার অ্যালডারউইয়ারল্ড।
৮২ মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় বেলজিয়াম। কার্যত তখনই শেষ হয়ে যায় ইংলিশদের আশা। কেভিন ডি ব্রুইনের পাস থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল জালে জড়ান হ্যাজার্ড। অবশ্য ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ এক সুযোগ ছিল এ গোলের মিনিট তিন আগে। দলগত ওয়ান টাচের দারুণ ফুটবল শৈলী উপহার দিয়ে পোস্টে দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন মিউনিয়ার। তবে তার চেয়ে দারুণ দক্ষতায় সে শট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড।
এরপর বেশ কিছু আক্রমণ হলেও গোলের দেখা পায়নি কোন দলই। ফলে চতুর্থ হয়েই বিশ্বকাপ শেষ করে ইংলিশরা। অথচ অপেক্ষাকৃত সহজ পথটা বেছে নিতে গ্রুপ পর্বে বেলজিয়ামের বিপক্ষে যেন হারতেই চেয়েছিল। ইংলিশদের প্রত্যাশাও পূরণ হয়। পানামা ও তিউনিসিয়াকে হারিয়ে নকআউট পর্বে একে একে পায় কলম্বিয়া, সুইডেন ও ক্রোয়েশিয়াকে। অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী ক্রোয়েশিয়ার বাধা পার হতে পারেনি দলটি। আর বেলজিয়ামের বিপক্ষে তো দুই বারই হার।
তবে হারলেও চলতি আসরের গোল্ডেন বুট প্রায় অনেকটাই নিশ্চিত ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইনের। নিজের প্রথম তিন ম্যাচে দেওয়া ৬ গোলই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এদিন গোলের দেখা পাননি তার প্রধান প্রতিপক্ষ রোমেলু লুকাকু। তবে ৩টি করে গোল দিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে আছেন আতোঁয়া গ্রিজম্যান ও কিলিয়ান এমবাপেও। ফাইনালে হ্যাটট্রিক করতে পারলেই বুট জিতবেন। তবে কাজটা বেশ কঠিনই।
Comments