কিলিয়ান ‘দুরন্ত’ এমবাপে

২০ বছর আগে প্যারিসে ব্রাজিলকে হারিয়ে যেদিন প্রথমবার বিশ্ব ফুটবলের মুকুট পরেছিল ফ্রান্স, এর মাস ছয়েক পরে জন্ম হয় কিলিয়ান এমবাপের। এবার আরেকবার যখন ফরাসীরা বিশ্ব জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা তখন কুড়িতে পড়া এমবাপেই হয়েছেন হিরো। পেয়েছেন সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
Kylian Mbappe
বিশ্বকাপের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় এমবাপে

২০ বছর আগে প্যারিসে ব্রাজিলকে হারিয়ে যেদিন প্রথমবার বিশ্ব ফুটবলের মুকুট পরেছিল ফ্রান্স, এর মাস ছয়েক পরে জন্ম হয় কিলিয়ান এমবাপের। এবার আরেকবার যখন ফরাসীরা বিশ্ব জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা তখন কুড়িতে পড়া এমবাপেই হয়েছেন হিরো। পেয়েছেন সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার।

চার বছর বয়সে ফুটবলে পায়ে নিয়ে বাবাকে বলেছিলেন একদিন ফ্রান্সের হয়ে ফুটবল খেলবেন, বিশ্বকাপও খেলবেন। বিশ্বকাপ শুধু খেললেনই না, জিতলেনও। আর তা রাজকীয়ভাবেই। বিশ্বকাপে চোখ ধাঁধানো চার গোল করেছেন যার তিনটাই নক আউট পর্বে। গোল পেলেন ফাইনালেও।

ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে দল যখন ৩-১ গোলে এগিয়ে তখন ডান পায়ের দারুণ শটে শেষ পেরেকটা ঠুকেছেন তিনিই। এর আগের গোলের উৎসও এই তরুণ। ডানদিকে গতি আর পায়ের কারিকুরিতে বক্সে ঢুকে বল বাড়িয়েছিলেন পল পগবার দিকে। দুবারের চেষ্টায় তা জালে জড়ান পগবা।

চেহারায় এখনো কৈশোরের  ছাপ। বল পায়ে এলেই ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে যান বলে নাম হয়ে গেছে- বল পায়ের উসাইন বোল্ট। গ্রুপ পর্বেই গোল পেয়েছিলেন। তবে আসল খেল দেখিয়েছেন নক আউট পর্বেই। শুরুটা আর্জেন্টিনাকে দিয়েই। দ্বিতীয় রাউন্ডে তার দৌড়ের কাছেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় লিওনেল মেসিরা। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়েই গতির ঝড়। তা এমনই দ্রুতগতির যে তাকে ঠেকানোর সাধ্য কার!

১৯৫৮ বিশ্বকাপে টিনএজার হিসেবে এক ম্যাচে একাধিক গোল দেওয়ার রেকর্ড গড়েছিলেন ফুটবল কিংবদন্তী পেলে। এতগুলো বছরেও সেখানে কেউ ভাগ বসাতে পারেননি। এবার আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জোড়া গোল করে সেখানে ভাগ বসান এমবাপে।

এমবাপের দেখানোর ছিল আরও অনেক। গোল করার পর মন দেন করানোতেও। তার অ্যাসিস্টেও গোল পেয়েছে ফ্রান্স। কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমি ফাইনালে বারবার গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন। কেবল উদীয়মান খেলোয়াড়ই না, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বলটা পেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকত না।

ক্যামেরুন বংশোদ্ভূত বাবা উইলফ্রেড এমবাপে আর আলজেরীয় মা ফাইজার সন্তান কিলিয়ান এমবাপে ফ্রান্সের উদার বৈচিত্র্যপূর্ণ বহু সাংস্কৃতিক সমাজের উদাহরণও। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন জিনেদিন জিদান, যিনিও আলজেরীয় বংশোদ্ভূত বাবা-মায়ের সন্তান।

এমবাপের যা বয়স আর প্রতিভা তাতে জিদানকেও ছাপিয়ে যাওয়ার হাতছানি তার সামনে। কে জানে হয়ত তিনি হতে যাচ্ছেন বিশ্ব ফুটবলের আরেক মহাতারকা।

Comments