ইংরেজি বাংলার হেরফেরে সোনা নিয়ে বিভ্রান্তি: বাংলাদেশ ব্যাংক

‘ফেসবুক পোস্টের’ জেরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
ছবি: সংগৃহীত

ভল্টে রাখা সোনার বারে ভেজাল ধাতু পাওয়া যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের সোনা জমা রাখার সময় সোনা ৪০ শতাংশই ছিল। কিন্তু ইংরেজি–বাংলার হেরফেরে সেটা ৮০ শতাংশ লিখে ভুলবশত নথিভুক্ত করা হয়েছিল। এটি নিছক করণিক ভুল বলেও দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এসএম রবিউল হাসান মতিঝিলে ব্যাংকের সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত স্বর্ণকার এই ভুলটি করেছিলেন। এ কারণেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা সোনা পরীক্ষা করে তাতে মিশ্র ধাতু ধরা পড়েছে, গতকাল দৈনিক প্রথম আলো-তে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর জরুরি ভিত্তিতে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

সংবাদে বলা হয়, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে কাস্টম হাউসের একজন কর্মকর্তা একটি সোনার চাকতি এবং একটি সোনার রিং বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই চাকতি এবং আংটি যথাযথ ব্যক্তি দিয়ে পরীক্ষা করে ৮০ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা হিসেবে গ্রহণ করে প্রত্যয়নপত্র দেয়। কিন্তু দুই বছর পর পরিদর্শন দল ওই চাকতি ও আংটি পরীক্ষা করে তাতে ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ সোনা পায়।

এখন বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বাংলায় চার (৪) ও ইংরেজির আট (৮) এর মধ্যে মিল থাকায় এই বিভ্রাট ঘটেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত স্বর্ণকার ‘শখ জুয়েলার্স’ এই ভুল করেছে। ভুলের কথা স্বর্ণকার নিজেও স্বীকার করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট পরিদর্শন করে শুল্ক গোয়েন্দা কমিটি সোনার বিশুদ্ধতায় গড়বড় হওয়ার বিষয়টি জানতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের বলেছে, সোনা জমা রাখা সংক্রান্ত নথিপত্রেই ভুল ছিল। এসব বিষয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর গত ১১ জুলাই এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়ে জবাব দেন।

তবে শুধুমাত্র ভুলবশত নথিভুক্ত হওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে- মানতে চাইছে না শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

এ ব্যাপারে শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সবকিছুই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতেই করা হয়েছিল। সেখানে বাইরের কেউ ছিলেন না। তারা [বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা] ২২ ক্যারেট হিসেবেই সোনা নিয়েছিল। আমাদের কাছে এসবের নথিপত্র রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, একটি কমিটির মাধ্যমে তদন্তটি হয়েছে। যা কিছু হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই হয়েছে। তখন তাদের কোনো ভিন্ন বক্তব্য থাকলে তো সেটা তদন্ত প্রতিবেদনেও উল্লেখ থাকত।

বাংলাদেশ ব্যাংকে কোনো জালিয়াতির ব্যাপারে সন্দেহ করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের পর্যবেক্ষণের কথা আমরা পাঠিয়েছি।’

সংবাদ সম্মেলনে রবিউল হাসান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট কঠোর নিরাপত্তায় থাকে। সেখানে অন্য কেউ প্রবেশ করে সোনা বদলে ফেলার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত স্বর্ণকারের মাধ্যমে সোনার মান যাচাই করা হয়। তারা কষ্টিপাথরে সোনার মান যাচাই করে। অন্যদিকে শুল্ক গোয়েন্দা সোনা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে মেশিনের ব্যবহার করেছে। বাইরে থেকে ভাড়া করা মেশিনের মাধ্যমে তারা সোনার মান যাচাই করেছে। তাই সোনার মানের হেরফের হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। ২২ ক্যারেটের জায়গায় ১৮ ক্যারেট হওয়ার বিষয়টি দুটি ভিন্ন যন্ত্রে পরিমাপের কারণেই হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh asks India to halt border push-ins, cites security concerns

The move follows reports that BSF pushed in around 300 people into Bangladesh between May 7 and May 9

39m ago