‘বিএনপি যেন ভোটকেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপাতে না পারে’

রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগবিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রতি আবেদন রাখব, তারা [বিএনপি] যেন নির্বাচনী কেন্দ্র দখল এবং জোর করে ব্যালট পেপার ভরানোর চেষ্টার বিষয়ে সজাগ থাকেন। কেননা, এসব কাজ নিজেরাই করে বিএনপি আওয়ামী লীগকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করবে।’
সজীব ওয়াজেদ জয়

রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগবিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রতি আবেদন রাখব, তারা [বিএনপি] যেন নির্বাচনী কেন্দ্র দখল এবং জোর করে ব্যালট পেপার ভরানোর চেষ্টার বিষয়ে সজাগ থাকেন। কেননা, এসব কাজ নিজেরাই করে বিএনপি আওয়ামী লীগকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করবে।’

জয় আজ রোববার তার ফেসবুক পেজে একটি জনমত জরিপের তথ্য তুলে ধরে এই কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে বরিশাল ও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ বিশাল ব্যবধানে জয়ের পথে। যদিও সিলেটে আমরা কিছুটা এগিয়ে আছি, এই মুহূর্তে আসলে কাউকেই বিজয়ী হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।’

জয় আরও লিখেছেন, গাজীপুরের নির্বাচনের সময় বিএনপির নেতাদের টেলিফোন কথোপকথনের কথা আমরা জানি। তাদের প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারের সময় মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছে যে তাদের জেতার কোনো অবস্থা নেই। তাই তারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করে আওয়ামী লীগকে বিপদে ফেলতে চায়।’

জয় জানান, নির্বাচনের আগে রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি) নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে জরিপ করিয়েছেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘গত পাঁচ বছর ধরে আরডিসি-এর মাধ্যমে আমরা জরিপ পরিচালনা করছি। তাদের জরিপের পদ্ধতি ও ফলাফল বরাবরই আমার সঠিক মনে হয়েছে।’

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১,২৯৪ নিবন্ধিত ভোটারের মাঝে জরিপের ফলাফলের বরাতে জয় জানান, সেখানে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন পেতে পারেন মোট ভোটের ৫৮ শতাংশ। আর বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পাবেন ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট। এখানে সিদ্ধান্ত না নেওয়া ও প্রশ্নের উত্তর দিতে না চাওয়া ভোটারের সংখ্যা যথাক্রমে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ৯ দশমিক ৬ শতাংশ।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্ট

আরডিসির করা জরিপে দেখা গেছে, বরিশালে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৪৪ শতাংশ ভোটার। বিএনপির মুজিবুর রহমান সারোয়ারের প্রতি ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। এখানে কাকে ভোট দেবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া ভোটারের সংখ্যা ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি—এমন ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ১৪ শতাংশ। মোট ১ হাজার ২৪১ জন ভোটার এই জরিপে অংশ নেন।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী সিলেটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কথা জানিয়েছেন জয়। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৩৩ শতাংশ ভোট পেতে পারেন। আর বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী পাবেন ২৮ দশমিক ১ শতাংশ ভোট। এই সিটিতে সিদ্ধান্ত না নেওয়া ভোটার ২৩ শতাংশ। জরিপে অংশ নেন ১ হাজার ১৯৬ জন ভোটার।

সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, তিন সিটির ভোটার তালিকা ধরেই এ জরিপ হয়েছে। সেখানে আদমশুমারিতে জনসংখ্যার লিঙ্গভিত্তিক যে ধরন আছে, তার ওপর ভিত্তি করেই এ জরিপ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে থেকেই জরিপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। জরিপে এটা নিশ্চিত করা হয়েছে যে অংশগ্রহণকারীরা তিনি সিটির ভোটার। এখানে গ্রহণযোগ্য ভুলের মাত্রা (margin of error) হলো ২ দশমিক ৫।

সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ‘পাঁচ বছর ধরে আরডিসির মাধ্যমে আমি জনমত জরিপের কাজ করছি। তারা যে পদ্ধতি ব্যবহার করেন এবং যে ফলাফল বেরিয়ে আসে, সেসব গবেষণা থেকে তা নির্ভুল। তবে এও ঠিক, এবার যে জরিপের ফল তুলে ধরলাম, তাতে কিছুটা হেরফের হতে পারে। কারণ, এ জরিপ হয়েছে মাসজুড়ে। আর এর মধ্যে তুমুল নির্বাচনী প্রচার হয়েছে। গত রাতে সে প্রচার শেষও হয়েছে। তাই ফলাফলে কিছু হেরফের হওয়া আশ্চর্যের কিছু না। তবে আমি যথেষ্ট আস্থা নিয়ে বলতে পারি, বরিশাল ও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় হবে। সিলেটে আমরা সামান্য এগিয়ে। তবে সেখানে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।’

‘বিএনপি হেন অভিযোগ নেই যা করেনি। কিন্তু বাস্তবতা হলো তারা সমস্ত জনসমর্থন হারিয়েছে। অন্যদিকে, গত কয়েক বছরে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েছে। এখন আওয়ামী লীগের জন্য কোনো নির্বাচনে বিএনপি কোনো বিষয় নয়।’

Comments