আসামে বাঙালি খেদাও, প্রতিবাদে রেল অবরোধ পশ্চিমবঙ্গে
আসামের নাগরিক তালিকায় বাঙালিদের বাদ পড়ার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে রেল অবরোধের কর্মসূচি পালন করেছে হাজার হাজার মানুষ।
অবরোধকারী মতুয়া মহাসংঘ নামের এই সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। কলকাতার পার্শ্ববর্তী উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং নদীয়া জেলায় এই সংগঠনের মানুষের বসবাস বেশি।
মাসের প্রথম দিন, কলকাতা লাগোয়া উত্তর চব্বিশ পরগনা, নদীয়া এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রেল অবরোধ শুরু করেন। কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সারা ভারত মতুয়া মহা সংঘের ব্যানারে এমন আন্দোলনে নাকাল হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
আন্দোলনকারীদের হাতে ভারতের কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি বিরোধী নানা স্লোগান সম্বলিত পোস্টার, ব্যানার দেখা যায়। একই সঙ্গে আসামের বাঙালিদের অবিলম্বে নাগরিকত্ব নিশ্চিত করারও দাবি ছিল ব্যানার-ফেস্টুনে।
তবে অধিকাংশ জায়গাতেই আন্দোলনে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসত, নিউ ব্যারাকপুরের অবরোধের পুরো নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় শীর্ষ তৃণমূল নেতারাই।
যদিও তৃণমূলে দলগত ভাবে সব ধরনের অবরোধ বিরোধী, তবুও কৌশলগত ভাবে তারা মতুয়া মহা সংঘের ব্যানারে এই অবরোধ করেছে বলে অনেকেই মনে করছে। যদিও এই অভিযোগ মানছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব।
বারাসত পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, মতুয়া মহা সংঘের এই প্রতিবাদ যৌক্তিক তাই তারা সেখানে সমবেত হয়েছেন এবং তাদের সঙ্গে আগামীতে যদি এই দাবি মানা না হয় তবে রাজ্যের সব ধরনের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হবে।
নিত্যযাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছে সেটার জন্য ক্ষমা চেয়ে মতুয়া মহা সংঘের সহসভাপতি অভিজিৎ বিশ্বাস বলেন, যারা ৫০ বছর ধরে একটা রাজ্যে রয়েছেন তাদের নাগরিকত্ব না দেওয়ার মধ্যে রাজনীতিটাই পরিষ্কার হয়েছে। আমরা চাই দ্রুততার সঙ্গে বাদ যাওয়া ৪০ লক্ষ বাঙালি নাগরিককে ভোটার অধিকার দেওয়া হোক। আর সেটা না হলে বড়সড় আন্দোলনের পথেই মতুয়া মহা সংঘ হাঁটবে।
সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা এই অবরোধ হওয়ার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও দুপুর ১২টার পর পর্যন্তও অবরোধ চলতে দেখা গিয়েছে। আর এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
এদিন বনগাঁ-শিয়ালদহ লাইনের বহু বাংলাদেশি পর্যটকও আটকা পড়েন। কারণ বনগাঁ থেকে কলকাতা যাওয়ার একমাত্র রেল লাইনই এই রুট। বেনাপোল-পেট্রাপোল দিয়ে যেসব যাত্রী ভারত ভ্রমণে আসেন, তাদের একমাত্র রাস্তা হচ্ছে বনগাঁ-শিয়ালদহ রেল লাইন। আর এদিন রেল অবরোধের কারণে বহু যাত্রীবাহী ট্রেন বাতিল হওয়ায় অনেকেই বাসে ও ট্যাক্সিতে করে গন্তব্যে পৌঁছান।
Comments