লিটন ঝড়ের পর দারুণ বোলিংয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

লিটন দাসের ঝড়ো ফিফটিতে বড় সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিস্কোরক সব ব্যাটসম্যানদের থামাতে দরকার ছিল মাপা বোলিং। ফ্লোরিডায় সব মিলেছে একসঙ্গে। ওয়ানডের পর তাই টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে নিয়ছে বাংলাদেশ।
Liton Das

লিটন দাসের ঝড়ো ফিফটিতে বড় সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিস্কোরক সব ব্যাটসম্যানদের থামাতে দরকার ছিল মাপা বোলিং। ফ্লোরিডায় সব মিলেছে একসঙ্গে। ওয়ানডের পর তাই টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে নিয়ছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে ফ্লোরিডার লডারহিলে বাংলাদেশের দেওয়া ১৮৫ রনের লক্ষ্যে নেমে ১৭. ওভারে ৭ উইকেটে ক্যারিবিয়ানরা ১৩৫  তুলতেই নামে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিতে আ আর খেলা শেষ করা সম্ভব হয়নি। ডি/এল মেথডের ফয়সালায় তাই ১৯ রানে জেতে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতল সাকিব আল হাসানের দল। সেন্ট কিটসে প্রথম টি-টোয়েন্টি হারার পর ফ্লোরিডায় এসে প্রবাসী দর্শকদের সামনে বাকি দুই ম্যাচই জিতল বাংলাদেশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর হতাশা ভর করেছিল দেশের ক্রিকেটে। টুকটাক যাও আশা ছিল ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে, টি-টোয়েন্টিতে অনেক এগিয়ে থাকা ক্যারিবিয়নদের সঙ্গে জেতার আশা ছিল একটু বাড়াবাড়ি। কিন্তু রঙিন পোশাক গায়ে চাপিয়েই বাংলাদেশ দিয়েছে ভিন্ন বার্তা। ওয়ানডে সিরিজ দাপটের সঙ্গে ২-১ ব্যবধানে জেতার পর একই ফল দেখিয়ে দিল টি-টোয়েন্টিতেও।

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান ওপেনার লিটনের। তার ৩২ বলে ৬১ রানের ইনিংসেই বড় সংগ্রহের ভীত পায় বাংলাদেশ। পরে বল হাতে সবার সম্মিলিত প্রয়াস ছিল দেখার মতো।

আগেরদিন টস হেরে ব্যাটিং পেয়েছিল বাংলাদেশ। এদিন টস জিতেও ব্যাট করার সিদ্ধান্তই  নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিস্ফোরক শুরুতে অধিনায়কের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি কাজে লাগান দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। ৩.৪ ওভারের মধ্যে ৫০ ছাড়িয়ে যায় দলের সংগ্রহ।টি-টোয়েন্টিতের এটাই বাংলাদেশের দ্রুততম দলীয় ফিফটি। বেশি আগ্রাসী ছিল লিটনের ব্যাট। অ্যাশলে নার্সের করা প্রথম ওভারেই দুই ছক্কা আর এক চারে নেন ১৭ রান। পরে তার সঙ্গে তাল মেলান তামিম।

পঞ্চম ওভারে ৬১ রানে গিয়ে ভাঙে এই জুটি। কার্লোস ব্র্যাথওয়টের বলে শর্ট ফাইন লেগে ধরা পড়েন আগের ম্যাচের হিরো। ১৩ বলে ২১ রানের ইনিংসে ৩ চার আর এক ছক্কা মেরেছেন তামিম।

তামিম ফিরলেও চালিয়ে গেছেন লিটন। কিন্তু অন্যপ্রান্তে ফের হতাশ করেন সৌম্য সরকার। বাউন্ডারি দিয়ে শুরু পর এই বাঁহাতি টিকেছেন মোট চার বল, করেছেন মাত্র ৫ রান। আরও এক সিরিজে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ সৌম্যর জাতীয় দলে টিকে থাকা এখন ভীষণ কঠিন হয়ে গেল। রান পাননি মুশফিকুর রহিমও। দেখেশুনে শুরুর পর ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।

এসবের মাঝে নিজের কাজটা করে গেছেন লিটন। ২৪ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটির পর ইনিংস আরও লম্বা করার ইঙ্গিত ছিল তার ব্যাটে। শেষ পর্যন্ত তাকে ফেরান কেসরিক উইলিয়ামস। উইলিয়ামসের স্লোয়ার বুঝতে না পেরে চালাতে গিয়ে ৬১ রানে লিটন ক্যাচ দেন লং অফে। ৩২ বলের ইনিংসে ছয় চারের সঙ্গে ৩ ছক্কা মেরেছেন এই ওপেনার।

আগের ম্যাচে ফিফটি পাওয়া সাকিব আল হাসানও দেখেশুনে ব্যাট করছিলেন। ২২ রানে তাকে থামান কেমো পল। শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহর ২০ বলে ৩২ আর, আরিফুল হকের ১৬ বলে ১৮ রানে ১৮৪ পর্যন্ত যায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের দেওয়া বড় লক্ষ্যের জবাবে শুরুটা একদম মনমতো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। চতুর্থ ওভারে ২৬ রানের মাথায় আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। ফিরিয়ে দেন বিপদজনক আন্দ্রে ফ্লেচারকে। নাজমুল ইসলাম অপুর চোটে ফাঁকতালে বল হাতে পেয়েছিলেন সৌম্য সরকার। অসমাপ্ত ওভার করতে এসেই তুলে নেন চ্যাডউইক ওয়ালটনকে। ৩০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ার পর দুই রান যোগ করতেই সাকিবের আঘাতে ফেরেন মারলন স্যামুয়লস। সাকিবের নিচু হওয়া বল হতচকিত হয়ে বোল্ড হন ওয়ালটন।

এরপর খানিকটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ওয়েস্ট ইন্ডিজের। রোবম্যান পাওয়েল আর দিনেশ রামদিন দলকে নিয়ে যান ৭৭ পর্যন্ত। রুবেলের দারুণ বল রামদিনের বেল ফেলে দিলে বিপদ বাড়ে ব্র্যথওয়েটের দলের। ওই অবস্থা থেকে বিস্ফোরক ইনিংসে বাংলাদেশকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল। ২১ বলে ৪৭ রান করা রাসেল ঝড় থামান মোস্তাফিজ। এই ইনিংসে ছয় ছয়টি ছক্কা মেরেছেন এই ব্যাটসম্যান। আরেকটি মারতে গিয়ে আরিফুলের হাতে ধরা পড়েন। তার আগে পাওয়েলকেও ফেরান মোস্তাফিজ।

বৃষ্টি নামার আগে কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে ফিরিয়ে সব শঙ্কা দূর করেন আবু হায়দার। আফগানিস্তানের কাছে ৩-০ তে টি-টোয়েন্টিতে হারা বাংলাদেশ এই ফরম্যাটে একদম খাপ খাওয়াতে পারছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজ জেতা নিশ্চিতভাবে দলকে জোগাবে ২০ ওভারের ক্রিকেটেও পোক্ত হওয়ার রসদ।  

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago