আঙুলের সেই চোটে ব্যাটিংয়ে এখনো অস্বস্তি হচ্ছে সাকিবের
গেল জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় কাপে বা হাতের কনিষ্ঠা আঙুলে চোট পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেই চোট সারাতে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ডেভিড হওয়ের কাছে ইঞ্জেনকশন দিয়ে এসেছিলেন। সেটা ছিল স্বপ্ল মেয়াদী প্রক্রিয়া। স্থায়ী সমাধান করতে এখন তার দরকার পড়তে পারে অস্ত্রোপচারের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ব্যাটে-বলে ছন্দেই ছিলেন সাকিব। হয়েছেন সিরিজ সেরা। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন ৩৮ বলে ৬০ রানের ইনিংস। তবে রান পেলেও ব্যাট করতে কিছু অস্বস্তি হচ্ছে তার। বিসিবি চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন অস্বস্তি থাকায় ব্যাট হাতে পুরোটা দিতে পারছেন না সাকিব, ‘সাকিবের বাঁহাতের লিটল ফিঙ্গারে জোড়া নড়ে গিয়েছিল। সে মূলত ব্যাটিংয়ে সমস্যা অনুভব করছে। সে ব্যাটিংয়ে শতভাগ দিতে পারছে না। এটা নিয়ে বেশ কয়েকবার আমাদের জানিয়েছে।’
এই সমস্যার কারণে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে স্বল্প মেয়াদী ব্যবস্থা হিসেবে ইনজেকশন দিয়ে এসেছিলেন সাকিব। ফ্লোরিডায় আবার তেমন একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, ‘ওকে একজন হ্যান্ড সার্জনের কাছে পাঠানো হয়েছিল, অস্ট্রেলিয়াতে। অস্ট্রেলিয়াতে ডাক্তার ডেভিড হও এর তত্ত্বাবধানে ওকে একটা ইনজেকশন দেয়। এরপর প্রদাহটা কিছুটা কমে আসে। ফলে গত কয়েক মাস সে মোটামুটি ব্যথা ছাড়া খেলতে পেরেছে।’
কিন্তু ওই ইনজেকশন দিয়ে খেলাটা আসলে সাময়িক চিকিৎসা। স্থায়ী সমাধান পেতে নিতে হতে পারে অপারেশনের সিদ্ধান্ত। সেজন্য অন্তত মাস দুয়েকের বিরতি খুঁজছেন দেবাশীষ, ‘সার্জনের কথা মত শর্ট টার্ম ব্যবস্থার জন্য ইনজেকশনটা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু লং টার্মে এটা খুব একটা কাজ করবে না। দল ফ্লোরিডা যাওয়ার পর সেখানকার ডাক্তার একটি ইনজেকশন দিয়েছেন। সেখানকার ডাক্তারও বলেছেন এমন ব্যবস্থা খুবই শর্ট টার্মের জন্য কাজে লাগবে। এই জন্য দল ফেরার পর সাকিব, ম্যানেজমেন্ট ও আমরা সবাই মিলে বসে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ এই অপারেশন হলে প্রায় দেড়-দুইমাস পুনর্বাসনের জন্য দরকার পড়বে। সেই উইন্ডোটা কখন হবে সেটা সাকিব ও ম্যানেজমেন্টের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
ফ্লোরিডায় দেওয়া নতুন ইনজেকশনের পর ফের ব্যথা কমে এসেছে। এশিয়া কাপের অনুশীলন শুরুর পর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন দেবাশীষ, ‘আপাতত এই ইনজেকশনের পর ব্যথা অনেকটাই কমে এসেছে। ফিরে আসার পর এশিয়া কাপের অনুশীলন যখন শুরু হবে, তখন যদি সে মানিয়ে নিতে পারে তাহলে হয়তো এভাবেই আমরা চালিয়ে যাবো। আর অনুশীলনের সময় যদি ওর সমস্যা বেড়ে যায় তাহলে হয়তো আমাদের চিন্তা করতে হবে।’
তবে সাকিবের যে চোট তা একদম সেরে উঠার উপায় নেই বলে মত দেবশীষের। অন্তত ৬০-৭০ শতাংশ সারলেই খেলায় আর কোন অস্বস্তি থাকবে না। আপাতত সেদিকেই নজর বিসিবির, ‘এই ইনজুরির পুরোপুরি রিকভারি কখনই হবে না। কিন্তু শতভাগ রিকভারি আসলে গুরুত্বপূর্ণ না। ৬০-৭০ শতাংশ রিকভারি হলেই সে ফাংশনাল হয়ে যাবে। খেলতে অসুবিধা হবে না। খেলতে খেলে ১০০ শতাংশ (আঙুল) ভাঁজ করার দরকার হয় না। ৬০-৭০ শতাংশ ভাঁজ করতে পারলে হবে। এখন ও হয়তো ৪০-৫০ শতাংশ পারছে। আর যদি ১০-১৫ শতাংশ আমরা বাড়িয়ে দিতে পারি, কিন্তু এই বাড়ানোটা খুব কঠিন কারণ ওর হাড়ের সঙ্গে হাড় লেগে যাচ্ছে। যখন হাড়ের সাথে হাড়ের ইনপিচ হচ্ছে তখন আর পুশ করতে পারছে না। যার কারণে সে শতভাগ দিতে পারছে না।’
Comments