রিয়ালকে উড়িয়ে উয়েফা সুপার কাপ অ্যাতলেটিকোর
সেই ২০০০ সালে তুরস্কের গেলাতাসারের কাছে উয়েফা সুপার কাপের ফাইনালে হেরেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এরপর কেটে গেছে ১৮ বছর। ইউরোপিয়ান কোন প্রতিযোগিতার ফাইনালে হারেনি দলটি। এতো বছর পর আবার তারা হারের স্বাদ পেল সেই উয়েফা সুপার কাপেই। তাও নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের কাছে। দিয়েগো কস্তার জোড়া গোলে রিয়ালকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে দিয়েগো সিমিওনির দল।
দলের প্রাণ ভোমরা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও কোচ জিনেদিন জিদান দল ছাড়ার পর বুধবারই প্রথম মাঠে নেমেছিল রিয়াল। নতুন কোচ জুলেন লোপেতগির জন্য ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। জিদানের অধীনে কোন ফাইনালেই যে হারেনি দলটি। অথচ নিজের প্রথম ম্যাচেই দেখতে হলো ভিন্ন চিত্র। ম্যাচে পরিষ্কার ভাবেই পিছিয়ে ছিল তারা। ডিফেন্ডারদের ভুল ছিল চোখে পড়ার মতো। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ২-২ গোলে সমতায় থাকলেও অতিরিক্ত সময়ে কুলিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। দুই গোল হজম করে শিরোপা হাতছাড়া করে তারা।
এদিন এস্তোনিয়ার তালিনে ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যায় অ্যাতলেটিকো। ৫০ সেকেন্ডেই গোল দেন স্প্যানিশ তারকা কস্তা। নিজেদের অর্ধ থেকে দিয়েগো গদিনের বাড়ানো বল হেড দিয়ে রিয়াল অধিনায়ক সের্জিও রামোসকে বোকা বানিয়ে দারুণ ভাবে নিয়ন্ত্রণে নেন। এরপর দুরূহ কোণ থেকে দুর্দান্ত এক গোল দেন এ স্ট্রাইকার। উয়েফা সুপার কাপের ইতিহাসের এটা দ্রুততম গোল। এর আগের রেকর্ডটি সেভিয়ার এভার বানেগার। ২০১৫ সালের বার্সেলোনার বিপক্ষে রেকর্ডটি করেছিলেন তিনি।
১৬ মিনিটে মার্সেলোর পাসে দারুণ এক ব্যাকহিল করেছিলেন মার্কো অ্যাসেনসিও। কিন্তু গোলরক্ষক জান অবল্যাক ঝাঁপিয়ে পড়ে তা রুখে দেন। তবে ২৮ মিনিটে করিম বেনজেমার গোলে সমতায় ফেরে দলটি। গ্যারেথ বেলের ক্রস থেকে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন এ ফরাসী স্ট্রাইকার। পরের মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো রিয়াল। অ্যাসেনসিওর কোণাকোণি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৬১ মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বল হেড দিতে গেলে হাতে লেগে যায় অ্যাতলেটিকোর হুয়ানফ্রানের। ফলে পেনাল্টি পায় রিয়াল। আর তা থেকে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন অধিনায়ক রামোস। তবে ৭৮ মিনিটে সাইড লাইন পার হতে থাকা বল সেই হুয়ানফ্রানের পায়ে তুলে দেন মার্সেলো। সে বল নিয়ে পাস দেন আনহেল কোরেয়াকে। তার ক্রস থেকে আলতো টোকায় নিজের দ্বিতীয় গোল করে দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন কস্তা। ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত সময়।
৯৮ মিনিটে রাফায়েল ভারানের ভুলে ডি বক্সের কাছে বল পেয়ে যান থমাস পারতি। তার ক্রস থেকে দারুণ এক শটে বল জালে জড়ান সাউল নাগুয়েজ। ফলে ৩-২ গোলে এগিয়ে যায় অ্যাতলেটিকো। কিন্তু তাদের ম্যাজিক তখনও বাকি। ১০৪ মিনিটে রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন কোকে। এবার ভুল করেন ড্যানি কার্বাহাল। ঠিকভাবে ডিফেন্স করতে না পারায় বাঁ প্রান্তে বল পেয়ে যান কস্তা। পাস দেন ভিতোলোকে। তার ক্রস থেকে দারুণ এক শটে বল জালে জড়ান কোকে। তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় রিয়ালের পরাজয়। শিরোপা উল্লাসে মাতে অ্যাতলেটিকো।
Comments