২১ আগস্ট নিয়ে রায় প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে: রিজভী

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা নিয়ে ‘একটি ফরমায়েশি রায়’ হতে যাচ্ছে বলে সন্দেহ করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির নেতাদের বক্তব্য শুনে মনে হয়, ২১ আগস্টের রায়কে প্রভাবিত করার জন্য তারা উঠেপড়ে লেগেছেন।
rizvi
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। স্টার ফাইল ছবি

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা নিয়ে ‘একটি ফরমায়েশি রায়’ হতে যাচ্ছে বলে সন্দেহ করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির নেতাদের বক্তব্য শুনে মনে হয়, ২১ আগস্টের রায়কে প্রভাবিত করার জন্য তারা উঠেপড়ে লেগেছেন। ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলার রায় নিজেরা লিখে তা আদালতকে দিয়ে বাস্তবায়ন করাবেন কি না, মানুষের মনে সে সংশয়ও এখন দেখা দিয়েছে।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন বলে প্রথম আলোর খবরে জানানো হয়। ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেছিলেন, ২১ আগস্ট মামলার রায় হলে সংকটে পড়বে বিএনপি। এর আগে গত মঙ্গলবার ২১ আগস্টে নিহত ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছিলেন, কোনো সন্দেহ নেই যে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান ওই হামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রীর এসব বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিএনপির পক্ষ থেকে আজ প্রতিক্রিয়া জানালেন রিজভী।

রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, ২১ আগস্ট মামলার রায় হলে সংকটে পড়বে বিএনপি এবং আগামী সেপ্টেম্বরে সে রায় হবে। কাদের সাহেবরই বক্তব্যেই পরিষ্কার যে তারা নীলনকশা অনুযায়ী ২১ আগস্টের বোমা হামলা মামলার রায় নিয়ে আগাম কাজ করছেন এবং সে জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কূটচাল চালছেন।’

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তাদের আন্দোলনের ফসল মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের সময়ও এ মামলার চার্জশিটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ছিল না।’ এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনীতি করছে বলেও তার অভিযোগ।

রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাদের দলীয় লোক কাহার আকন্দকে তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ দেন। তার আগেই কাহার আকন্দ পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থেকে অবসরে গিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন, এমনকি ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তাকে পুলিশ বিভাগে ফের নিয়োগ দিয়ে এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা করা হয় ২০০৯ সালে। দলীয় চেতনার তদন্ত কর্মকর্তা কাহার আকন্দকে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যই ছিল এ মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো। পরে ২০১১ সালে তারেক রহমানের নাম সম্পূরক চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করে শেখ হাসিনার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হয়।’

রিজভী বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় ১৬৪ ধারায় মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে তারেক রহমানের নাম ছিল না। শুধু এ মামলায় তারেক রহমানের নাম বলানোর জন্য অন্য মামলায় ৪১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক ও নির্মম নির্যাতন করা হয় মুফতি হান্নানকে। পৃথিবীর কোনো দেশেই এ ধরনের নজির নেই। ৪১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে মুফতি হান্নানকে দিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের নাম বলতে ও তথাকথিত স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করেন কাহার আকন্দ, যার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। একই ব্যক্তির একই মামলায় দুবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির নজির নেই।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলা তদন্ত করতে তৎকালীন বিএনপি সরকার মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইকে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এফবিআইকে তদন্তকাজে কোনো ধরনের সহায়তা করা হয়নি। এমনকি শেখ হাসিনাকে বহনকারী গাড়িটিও দেখতে দেওয়া হয়নি। কেন তারা সুষ্ঠু তদন্ত করতে দিল না—এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। এ মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও গভীর ষড়যন্ত্রমূলক।

Comments

The Daily Star  | English

$8b climate fund rolled out for Bangladesh

In a first in Asia, development partners have come together to announce an $8 billion fund to help Bangladesh mitigate and adapt to the effects of climate change.

10h ago