মিয়ানমার সেনাদের কাণ্ড!

স্থান-কাল-পাত্র জ্ঞান যেন হারিয়ে ফেলেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নিজেদের অপরাধ ঢাকতে তারা তুলে ধরছে অন্যদের অপরাধচিত্র! তবে, বিধি বাম। দেশটির রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত জাতিগত নির্মূল অভিযানের সত্যতা লুকাতে গিয়ে এবার নিজেদেরই মুখ পোড়ালো মিয়ানমারের সেনারা।
Myanmar army
(১) ১৯৭১ সালে ঢাকায় পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নিহত বাঙালিদের ছবি সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ব্যবহার করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। বইটিতে তারা এই ছবিটি ব্যবহার করে বলেছে তা মিয়ানমারের বাঙালিরা (দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী) এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। (২) পুলিৎজার পুরস্কারের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া অপর একটি ছবিতে রয়েছে ১৯৯৬ সালে রুয়ান্ডায় গণহত্যা চলাকালে দেশটির সংখ্যালঘু হুতু শরণার্থীদের দেশত্যাগ। এই রঙিন ছবিটি সাদাকালো করে ব্যবহার করা মিয়ানমার সেনাদের বইটিতে। তাতে বলা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায় ব্রিটিশ শাসনামলে দলে দলে বাঙালিরা মিয়ানমারে প্রবেশ করছে। ছবিগুলো রয়টার্স থেকে নেওয়া

স্থান-কাল-পাত্র জ্ঞান যেন হারিয়ে ফেলেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নিজেদের অপরাধ ঢাকতে তারা তুলে ধরছে অন্যদের অপরাধচিত্র! তবে, বিধি বাম। দেশটির রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত জাতিগত নির্মূল অভিযানের সত্যতা লুকাতে গিয়ে এবার নিজেদেরই মুখ পোড়ালো মিয়ানমারের সেনারা।

ইয়াঙ্গুন থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ১৯৪০ এর দশকে মিয়ানমারে জাতিগত সংঘাত নিয়ে সম্প্রতি একটি বই প্রকাশ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। বইটিতে জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বাঙালি ও বহিরাগত হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে তারা স্থানীয় বৌদ্ধধর্মাম্বলীদের হত্যা করেছে।

কিন্তু, বার্তা সংস্থাটি ছবিগুলো পরীক্ষা করে দেখেছে যে হত্যাকাণ্ডের সেই ছবিগুলো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নিহত বাঙালিদের ছবি।

‘মিয়ানমার পলিটিকস অ্যান্ড দ্য তাতমাদাও: পার্ট ওয়ান’ শিরোনামের বইটি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জনসংযোগ ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বিভাগ থেকে গত জুলাইয়ে প্রকাশিত হয়েছে। তাতমাদাও হচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল নাম। এই ১১৭ পৃষ্ঠার বইটিতে রুয়ান্ডায় গণহত্যার শিকার হুতু শরণার্থীদের ছবিও ব্যবহার করা হয়েছে। হুতুদের বাঙালি বানিয়ে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ব্রিটিশ শাসনামলে দলে দলে বাঙালিরা মিয়ানমারে প্রবেশ করছে।

ছবিগুলোর সত্যতা নিয়ে কথা বলার জন্যে মিয়ানমার সরকার এবং সেনাবাহিনীর মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি। এমনকি, দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব ইউ মিও মিন্ত মাউং বই পড়েননি বলে বলে ছবি সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সেনাবাহিনীর ‘সত্য খবর’ বিভাগের তথ্যভাণ্ডার থেকে নেওয়া হয়েছে। মূলত ফেসবুকের মাধ্যমে সেসব ‘সত্য খবর’ প্রচার করা হচ্ছে।

Comments