আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ৬ মাস নিষিদ্ধ হচ্ছেন সাব্বির
সাব্বির রহমান শাস্তি পাচ্ছেন এটা আঁচ করাই যাচ্ছিল। বাকি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা একের পর এক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এই ব্যাটসম্যানকে ছয় মাস নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে বিসিবি ডিসিপ্লিনারি কমিটি। বিসিবি সভাপতির অনুমোদনের পর এই নিষেদ্ধাদেশ রোববার থেকেই কার্যকর হবে। তবে এই সময়ে তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিতে পারবেন।
আজ (১ সেপ্টেম্বর) বিসিবি ডিসিপ্লিনারি কমিটি এসব অভিযোগের শুনানিতে সাব্বিরকে তলব করে। শুনানিতে সাব্বিরের বক্তব্য মনোপুত না হওয়ায় কঠোর সিদ্ধান্তের দিকেই গেল বিসিবি।
শনিবার ডিসিপ্লিনারি কমিটির বৈঠক শেষে বিসিবি পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক সাব্বিরের সাজার কথা জানান, 'ডিসিপ্লিনারির দুটি শুনানি ছিলো। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত বলবো না; সুপারিশ বলবো, যা বোর্ড সভাপতির বরাবর দেয়া হবে। সাব্বিরকে ছয় মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করার জন্য বোর্ড প্রধানকে সুপারিশ করবো। আর মোসাদ্দেককে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে তাকে সাবধানে চলতে বলা হয়েছে। নাসিরের বিষয়ে কোনো শুনানি হয়নি। ভবিষ্যতে তাকে ডাকা হতে পারে। ইনজুরির কারণে সে এমনিতেই খেলার বাইরে। '
'এই সুপারিশ বোর্ড প্রেসিডেন্টকে পাঠানো হবে। তিনি অনুমোদন দিলে, আগামীকাল থেকেই এটি কার্যকর হবে। '
এর আগে একাধিকবার বেপরোয়া আচরণের জন্য অল্পবিস্তর সাজা পেয়েছিলেন সাব্বির। সেসময় শোধরানোর সুযোগ দিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরচলাকালীন এক ভক্তকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নতুন করে আলোচনায় আসেন তিনি। এতে উঠে আসে তার আগের সব অপকর্মের খতিয়ান। এই সময় ব্যাটের রান খরা মিলিয়ে পরিস্থিতি অনুকুলে রাখতে পারেননি ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
গত ডিসেম্বরে জাতীয় লিগের ম্যাচ চলার সময় কিশোর দর্শককে মারধরের অভিযোগে ২০ লাখ টাকা জরিমানা ও ৬ মাস ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। ২০১৬ সালের বিপিএলে রাতের বেলা হোটেল কক্ষে নারী অতিথি নিয়ে যাওয়ায় ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল তাকে।
গত জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সময় সতীর্থ মেহেদী হাসান মিরাজকে শারীরিকভাবে আঘাত করার অভিযোগও উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
এসব জানা ঘটনার বাইরেও তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগের খবর শোনা যায়। চলতি বছর সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচের আগেও কোন এক গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছিলেন। যার জেরে তাকে সেই ম্যাচের একাদশে রাখা হয়নি।
এসব ঘটনায় কখনো হালকা শাস্তি, কখনো সতর্ক করা হয়েছিল সাব্বিরকে। তবে ধারাবাহিকভাবে নেতিবাচক ঘটনায় জড়িয়ে থাকায় এই ক্রিকেটারকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে রাখায় শ্রেয় মনে করছে বিসিবি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সাব্বিরকে ছাড়াই এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করা হয়। সেদিনই গণমাধ্যমে সাব্বিরের বাদ পড়ায় শৃঙ্খলাভঙ্গের প্রভাব থাকার কথা জানিয়েছিলেন বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকেই যাবে বলে স্পষ্টও করেছিলেন তিনি, ‘যদি আমরা মনে করি একটা জিনিস করা উচিত না কোনো খেলোয়াড়ের, সে যদি বারবার তা করতে থাকে, তখন কড়া সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমার কাছে একটাই জাতীয় দলে না রাখা। সে জাতীয় দলে খেলতে পারবে না।’
Comments