আসামি মেয়র বিদেশে, একই নাম পরিচয়ে যুবলীগ নেতা কারাগারে

গাজীপুরের শ্রীপুরের মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় আত্মসমর্পণ করে কারাগারে গিয়েছেন নুর-ই-আলম মোল্লা নামের এক ব্যক্তি। কারাগারে যাওয়া নুর স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও মেয়রের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।

গাজীপুরের শ্রীপুরের মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় আত্মসমর্পণ করে কারাগারে গিয়েছেন নুর-ই-আলম মোল্লা নামের এক ব্যক্তি। কারাগারে যাওয়া নুর স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও মেয়রের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।

রোববার ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে আনিছুরের নাম পরিচয় নিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। বিদেশে অবস্থানরত আসামির নাম পরিচয়ে ভিন্ন ব্যক্তি কারাগারে যাওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার পর গতকাল নূরকে ফের আদালতে হাজির করা হলে দ্বিতীয়বারের মতো তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

মেয়র আনিছুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলা করেছে দুদক। রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আইনজীবী রুহুল আমিন খান বলেছেন, ‘আদালতে আসামির নাম পরিচয় ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেছেন নুর। তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় মেয়র আনিছুর ও নুরের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’

নুর স্বীকার করেছেন, মেয়রের কথামতই তিনি তার নাম পরিচয়ে আদালতে গিয়েছিলেন।

দুদকের মামলার আসল আসামি মেয়র আনিছুর রহমান শনিবার রাতে ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন। পর পর তিন বার শ্রীপুরের মেয়র হয়েছেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৫ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি।

মেয়র কারাগারে গেছেন গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পুরো বিষয়টি নিয়ে শ্রীপুরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। মেয়র যে আসলে ইন্দোনেশিয়া গেছেন স্থানীয় অনেকেই সেটা জানতেন। কিন্তু গণমাধ্যমের জানানো হয় তিনি কারাগারে। এর পরই জানা যায় যে আসল মেয়রের নাম পরিচয় ব্যবহার করে তারই সহযোগী কারাগারে গেছেন।

এ ব্যাপারে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের খবরে ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি জেনেছেন। ঘটনাটি স্পর্শকাতর ও বড় ধরনের অসদাচরণ। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

মেয়রের পরিচয় দিয়ে কারাগারে যাওয়া নুরের ছেলে কৌশিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, দেশ ছাড়ার আগে মেয়র তার বাবাকে মামলাটি দেখার কথা বলে যান। তার দাবি, মেয়রের কথামতই তার বাবা আদালতে গিয়েছিলেন।

শ্রীপুর পৌরসভার সচিব বদরুজ্জামান বাদল বলেন, ইন্দোনেশিয়া সরকারের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের সফরকারী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে গিয়েছেন আনিছুর। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি ছুটি নিয়েছেন।

ওই পৌরসভার কর্মকর্তারা জানান, রোববার দুদকের মামলার শুনানিতে মেয়র আনিছুর ও হিসাবরক্ষক আব্দুল মান্নানের আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। মান্নানের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। তাকেও কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

শ্রীপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, পৌরসভার ৪৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা তছরুপের অভিযোগে ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম মেয়র আনিছুর ও বেশ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। মেয়রের বিরুদ্ধে এর আগে বিভিন্ন অভিযোগে দুদক আরও তিনটি মামলা করেছিল। দুদকের কর্মকর্তারাই এসব মামলা তদন্ত করছেন বলেও জানান ওসি।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago