নির্বাচনের আগে মাদ্রাসায় বড় বরাদ্দ
নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশ থেকে এমপিদের বাছাইকৃত ২ হাজার মাদ্রাসার অবকাঠামো নির্মাণে ৫,৯১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, তিন বছরের এই প্রকল্পের অধীন ১,৮০০ মাদ্রাসায় অবকাঠামো নির্মাণ এবং বিশেষ বিবেচনায় আরও ২০০ নতুন মাদ্রাসা তৈরি করে দেওয়া হবে। এজন্য সংসদের ৩০০ আইনপ্রণেতা তাদের নির্বাচনী এলাকা থেকে ছয়টি করে মাদ্রাসার একটি তালিকা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন।
গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ‘নির্বাচিত মাদ্রাসা উন্নয়ন প্রকল্প’ অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘শিগগিরই কাজ শুরু হবে।’ এই প্রকল্প নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই প্রভাব রাখবে। আমরা চাই সঠিকভাবেই এটি কার্যকর হোক। একারণেই প্রকল্পটি পাশ করেছি আমরা।’
তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এই কাজ বাস্তবায়ন করবে।’
‘এমপিরা অনেক আগেই বাছাইকৃত মাদ্রাসার তালিকা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়ে রেখেছেন এবং আমিও আমারটা দিয়েছি। বর্তমান এমপিদের কাছ থেকেই তালিকা নেওয়া হয়েছে। তারা কে কোন দলের তা বিবেচনা করা হয়নি’ জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘সঠিক সময়েই নির্বাচন হবে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলতে থাকবে।’
প্রকল্পের আওতায় রয়েছে- প্রত্যন্ত, বিভাগীয়, মহানগর, পাহাড়ি, উপকূলীয়, হাওর, বাওর, বিল, নদী, লবণাক্ত অঞ্চলে ৪ থেকে ৬ তলা নতুন মাদ্রাসা ভবন নির্মাণ, শেণিকক্ষ তৈরি, মাদ্রাসা ভবন বর্ধিতকরণ এবং প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র কেনা।
বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) এর ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশে ৯ হাজার ৩১১টি মাদ্রাসা রয়েছে যেখানে আলিম, দাখিল, ফাজিল ও কামিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এগুলোর মধ্যে মাত্র তিনটি রাষ্ট্র পরিচালিত এবং বাকি সব বেসরকারিভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে ৪ হাজার ৫৫৯টি মাদ্রাসায় একতলা ভবন এবং দুই-তিনটি করে শ্রেণিকক্ষ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ৪ হাজার ৭৫২টি মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজ চলছে। এসব মাদ্রাসায় ভবন, শ্রেণিকক্ষ ও শৌচাগার নির্মাণে মোট ৫ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
নতুন বরাদ্দ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে এবং আগামী অর্থবছরের জন্য রাখা হয়েছে ২ হাজার ৮৭৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
এর ফলে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে এমপিরা উপকৃত হবেন কি না জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কীভাবে তা প্রভাব বিস্তার করবে তা জানেন না তিনি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন একটি জটিল ইস্যু। ভোট দেওয়ার আগে একজন ভোটার প্রার্থীদের সততাসহ অনেক বিষয় বিবেচনা করে থাকেন।’
Comments