‘হাথুরুসিংহে তো কারো শত্রু না’
উপমহাদেশের ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তানের ঝাঁজালো লড়াইয়ের ইতিহাস পুরনো। উপমহাদেশের বাইরে অ্যাশেজে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার খেলাতেও মেলে উত্তাপ। সম্প্রতি নানা ঘটনায় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার খেলাতেও পাওয়া যাচ্ছে তীব্র লড়াইয়ের ঝাঁজ। নিদহাস কাপ ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টির ফাইনালে উঠার ম্যাচে তো দুদলের খেলোয়াড়দের মধ্যেই মাঠেই হয়েছে একচোট। তবে ‘হিট অব দ্য মোমেন্টের’ আড়ালে এসব চেপে রেখেই খেলায় নামতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা।
এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচের আগে ছয় দলের অধিনায়ক দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জড়ো হয়েছিলেন ট্রফি উন্মোচন করতে। অফিসিয়াল প্রেস কনফারেন্সে কথা হয়েছে গড়পড়তা। তাতে ম্যাচের সুর ধরা কঠিন বলে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে গিয়ে করতে হয় ম্যাচ নিয়ে অধিনায়কের মনোভাব বোঝার চেষ্টা।
বাংলাদেশ দলের কোচ থাকার শেষ দিকে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে সিনিয়র খেলোয়াড়দের দূরত্ব। এবং এর রেশেই দায়িত্ব ছেড়ে তিনি নিজ দেশের কোচ হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে মিলছে একধরনের বৈরিতার গন্ধ। নিদহাস কাপে নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচ সেই বৈরিতায় দিয়েছে নতুন বারুদ।
তবে এতসব ভেবে খেলতে নামছেন না বলে মত বাংলাদেশ অধিনায়কের, ‘এটা তো আসলে মাঠে সব খেয়াল থাকে না। মূল কথা থাকে মাঠে খেলে জেতাটাই উদ্দেশ্য থাকে। কখন কি হয়েছিল এইগুলা ভাবার বিষয় না। আর আমার মনে হয় না এইগুলার কোন গুরুত্ব আছে। ’
কদিন আগে ক্রিকেটের চেতনাভঙ্গের দায়ে সাজা পেয়েছেন লঙ্কান কোচ হাথুরুসিংহে। জেতার জন্য ‘সব কিছু করার চেষ্টা’ করা এই কোচের দলের সঙ্গে মাঠে তেজোদীপ্ত দেখা যায় বাংলাদেশ। জেতার তাড়নায় শরীরী ভাষায় থাকে আগুন। তবে এসব মাঠের মধ্যেই রাখতে চাইলেন মাশরাফি। তেতো সম্পর্কের গুঞ্জন থাকলেও সাবেক কোচকে শত্রু বানাতেও রাজি নন তিনি, ‘দেশের হয়ে খেলছে (ক্রিকেটাররা) যখন স্বাভাবিক কারণেই (জেদ) থাকা উচিত। হাথু (চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তো কারো শত্রু না। মাঠে খেলতে যেয়ে হিট অব দ্য মোমেন্ট কিছু ইনসিডেন্ট হয়ে যায়। এইগুলা আসলে ক্যারি করে না আসলে খেলোয়াড়দের ভেতরে। মনে হয় অপ্রয়োজনীয় জিনিস এইগুলা।’
তবে যত যাই রাখঢাক করেন বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা আরেকটা নতুন টানটান উত্তেজনার লড়াইয়ে চ্যালেঞ্জ দেখছেন মাশরাফি, ‘অবশ্যই। আপনি যদি ক্রিকেটের বা সব খেলার আলাদা চ্যালেঞ্জ আছে। অ্যাশেজ হয়, আগে ভারত-পাকিস্তান হতো। এই ধরনের দল নিয়ে আলাদা হাইপ থাকে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলেছি বলে হয়তবা। এসব জিনিস থাকবে। ’
বারুদটা বুঝিয়ে আবার পেশাদারিত্বের খোলসে বন্দি হয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে নির্ভার থাকতে চাইলেন অধিনায়ক, ‘এইগুলা না মাঠে ভাল খেলতেও না সহযোগিতা করে খারাপ পারফরম্যান্সের ভেতরেও কারণ থাকে না।’
'আমাদের প্রতিপক্ষ যদি ভারত বা পাকিস্তান থাকত তাহলে জেতার যে ইচ্ছাটা সেটা একইরকমই থাকত। আমরা জানি যে কাল অনেক বড় ম্যাচ। (হারলেও) পরের ম্যাচে সুযোগ আছে (দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠার)। কিন্তু কাল ভাল কিছু করতে পারলে আমাদের টুর্নামেন্টের জন্য ভাল হবে।
Comments