মোংলা, বুড়িমারী বন্দরে দুর্নীতির বাড়বাড়ন্ত: টিআইবি
বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্র বন্দর ও লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে ব্যাপক দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। তারা বলেছে, শুল্ক দপ্তর ও বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেরাই এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত।
‘মোংলা বন্দর ও কাস্টম হাউজ এবং বুড়িমারী স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন: আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, মোংলা বন্দরের শুল্ক কর্মকর্তারা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ১৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা হাতিয়েছেন। আমদানি পণ্যের শুল্কায়নে মোংলা কাস্টম হাউজে প্রায় প্রতিটি ধাপে নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায় করা হয়। এই সময়ের মধ্যেই মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের দুর্নীতির পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, এই বন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির বিভিন্ন পর্যায়ে কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূত অর্থ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সকল নথিপত্র এবং পণ্যের ধরন, গুণগত মান, ওজনসহ সবকিছু সঠিক থাকা সত্ত্বেও পণ্য ছাড়ের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে অলিখিতভাবে নির্ধারিত ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূত অর্থ দিতে হয়। তবে প্রয়োজনীয় নথিপত্র, পণ্যের মান, ধরন বা ওজনে সমস্যা থাকলে, অথবা শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষের পরিমাণ পরস্পরের দরকষাকষির সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।
গবেষণায় পাওয়া তথ্যমতে, বুড়িমারী বন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধাপে বিল অব এন্ট্রি প্রতি গড়ে ন্যূনতম ২০৫০ টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে বা ঘুষ হিসেবে দিতে হয়। একইভাবে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধাপে বিল অব এক্সপোর্ট প্রতি গড়ে ন্যূনতম ১৭০০ টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে দিতে হয়।
এই দুই বন্দরে দুর্নীতি প্রতিরোধে পণ্যের শুল্কায়ন, কায়িক পরীক্ষণ, পণ্য-ছাড় এবং জাহাজের আগমন-বহির্গমন প্রক্রিয়া অনুমোদনে কার্যকর ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদান নিশ্চিত করা, সকল পর্যায়ে অটোমেশন এবং পেপার-লেস অফিস প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি সুপারিশের কথা জানিয়েছে টিআইবি।
Comments