মহাবিপদে চীন, চলে যাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা

চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ফলে নতুন সমস্যার মুখে পড়েছে মহাপ্রাচীরের দেশটি। সে দেশে বিনিয়োগকারী এশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে অন্যান্য দেশগুলোতে।
Toshiba
চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ফলে এশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ সরিয়ে নিচ্ছে চীন থেকে। সেসব প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে জাপানের তোশিবা মেশিন কোম্পানি। ছবি: দ্য জাপান টাইমস থেকে নেওয়া

চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ফলে নতুন সমস্যার মুখে পড়েছে মহাপ্রাচীরের দেশটি। সে দেশে বিনিয়োগকারী এশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে অন্যান্য দেশগুলোতে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশ চীন থেকে তাদের বিনিয়োগ সরিয়ে নিচ্ছে। এর ফলে মেমোরি চিপস থেকে শুরু করে ভারি যন্ত্রপাতি উৎপাদনের কারখানা চীন থেকে সরে যাচ্ছে অন্যান্য দেশে। এর পেছনে রয়েছে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রভাব।

জাপানের মিৎসুবিসি ইলেক্ট্রনিক, তোশিবা মেশিন কোম্পানি ও কোমাৎসু এবং দক্ষিণ কোরিয়ার এসকে হাইনিক্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গত জুলাই থেকেই চীন ছাড়তে শুরু করেছে। এছাড়াও, তাইওয়ানের কম্পিউটার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কম্পাল ইলেক্ট্রনিকস এবং দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি ইলেক্ট্রনিক্সও চীন থেকে তাদের ব্যবসা গুটানোর কথা ভাবছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের সুবিধা হলো বিভিন্ন দেশে তাদের কারখানা রয়েছে। তাই তাদের নতুন করে কোনো কারখানা বানানোর প্রয়োজন নেই। এদিকে, যেসব প্রতিষ্ঠান চীন থেকে ব্যবসা গুটাতে চাচ্ছে তাদের বিভিন্ন রকমের সহযোগিতা দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে তাইওয়ান ও থাইল্যান্ডের সরকার।

গত জুলাইয়ে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের চীনা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর, দ্বিতীয় দফায় ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয় প্রায় ২০০ বিলিয়ন মূল্যের চীনা পণ্যের ওপর। এছাড়াও, ট্রাম্প প্রশাসন নতুন করে ২৬৭ বিলিয়ন ডলার চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছে। এমনটি হলে, সমস্ত চীনা পণ্যের ওপর বসে যাবে মার্কিন শুল্ক। ফলে ‘কম টাকায় চীনা পণ্য পাওয়ার’ যে মিথ রয়েছে তা যেনো ভেঙ্গে পড়তে যাচ্ছে।

তোশিবা মেশিন কোম্পানি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিক্রির জন্যে যে পণ্যগুলো তৈরি করা হয় সেগুলো আগামী অক্টোবর থেকে হয় জাপানে নয়তো থাইল্যান্ডে তৈরি করা হবে। প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থাটিকে বলেন, “চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যার কারণে আমরা আমাদের পণ্য উৎপাদনের কিছু অংশ চীন থেকে সরিয়ে নিচ্ছি।”

মিৎসুবিসি ইলেক্ট্রনিক জানায়, তারা উত্তরপূর্ব চীনের দালিয়ান শহর থেকে জাপানের নাগোয়াতে কারখানা সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে। যেসব পণ্য শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ করে সেসব পণ্যই উৎপাদিত হবে এই কারখানায়।

তাইওয়ানের কমপাল জানায়, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান ‘বাণিজ্যযুদ্ধের’ ফলে তারা অন্য দেশে সরে যাচ্ছে। তারা এখন ভিয়েতনাম, মেক্সিকো অথবা ব্রাজিলের দিকে ব্যবসা সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে।

এসব তো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা। চীন থেকে ব্যবসা গুটানোর তালিকায় রয়েছে ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানও। এর মধ্যে রয়েছে চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কোরিয়ার আইএম হেলথকেয়ার।

চীন-যুক্তরাষ্ট্রের এই রেষারেষি থেকে এশিয়ার দেশগুলো সুবিধা নেওয়ার সুযোগ খুঁজছে। এমন পরিস্থিতিতে তাইওয়ানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার মন্তব্য ‘এই বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে শুধু সঙ্কটই সৃষ্টি হয়নি, সৃষ্টি হয়েছে অপার সম্ভাবনাও।’

Comments

The Daily Star  | English

JP headed for yet another split?

Jatiya Party, the main opposition party in parliament, is facing another split centering the conflict between its Chairman GM Quader and Chief Patron Raushan Ershad over MP nominations, party insiders said.

2h ago