রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাধা নেই, বললেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাত জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এই রোহিঙ্গাদের ফেরত না পাঠানোর জন্য একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ আদালত আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানায়, তারা অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল। মিয়ানমার সরকার তাদেরকে নিজ দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে ফেরত নিতে সম্মত হয়েছে। আদালত এই বক্তব্য গ্রহণ করে বলেন, ‘যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাতে আদালতের হস্তক্ষেপ করার ইচ্ছা নেই’।
ভারত সরকারের শীর্ষ আইনজীবী তুষার মেহতা আদালতকে বলেন, মিয়ানমারের দূতাবাস এই রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র দিয়ে ফেরত নিতে সম্মত হয়েছে।
অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতে আটক হওয়ার পর ২০১২ সাল থেকে আসামের কাছার জেলার শিলচর কারাগারে বন্দী রয়েছেন ওই সাত জন রোহিঙ্গা। গতকাল ভারত সরকার জানায়, বৃহস্পতিবার এদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
মিয়ানমার এখনো রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ নয় উল্লেখ করে তাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ভারতে থাকার অনুমতির জন্য আদালতের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। এদের ফেরত না পাঠাতে জাতিসংঘের তরফ থেকেও ভারত সরকারের প্রতি গতকাল আহ্বান জানানো হয়। জেনেভা থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে বিপদের মুখে ঠেলে দিলে তা হবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের সামিল।
বর্ণবাদ সম্পর্কিত জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার তেনদায়ি একুইমি গতকাল বলেন, জাতিগত পরিচয় বিবেচনায় তাদের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই মানুষগুলো তাদের নিজের দেশে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ভারতের। তাদের ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
ভারতে বর্তমানে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৬ হাজার। ভারত সরকার আদালতকে বলেছে, রোহিঙ্গারা তাদের দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে। ইসলামিক স্টেট তাদেরকে জঙ্গি হামলার জন্য ব্যবহার করতে পারে।
Comments