ভারতের রাশিয়া ‘জয়’, মনঃক্ষুণ্ণ আমেরিকা
![Vladimir Putin and Narendra Modi Vladimir Putin and Narendra Modi](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/vladimir-putin-and-narendra-modi-1.jpg?itok=M7ZZyBAF×tamp=1538736991)
অবশেষে সই পড়লো চুক্তির খাতায়। এর মাধ্যমে ভারতের হাতে আসতে যাচ্ছে রাশিয়ার ‘জয়’। এটি আসলে একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের নাম। এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ নামের ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য এই রুশ ক্ষেপণাস্ত্রটিকে এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধ্বংসাত্বক মারণাস্ত্র হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শাসানিকে উপেক্ষা করে রাশিয়ার প্রতিবেশী চীন যখন এই ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে তখন চীনের প্রতিবেশী ভারত কেমন করে হাত গুটিয়ে থাকে- ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে এমন যুক্তি দিয়ে রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
গত দুই দশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ফলে দীর্ঘদিনের বন্ধু রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যখন শীতল হতে শুরু করে সেই সময় পাকিস্তান বন্ধুত্বের হাত বাড়ায় সাবেক এই সমাজতান্ত্রিক দেশটির সঙ্গে। কেননা, ততোদিনে বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক তেতো হতে শুরু করেছে পাকিস্তানের।
আঞ্চলিক রাজনীতির এমন মারপ্যাঁচে ভারত সিদ্ধান্ত নেয় দুই কূলই বজায় রাখার। অর্থাৎ রাশিয়ার সঙ্গে পুরনো বন্ধুত্ব জিইয়ে রাখার পাশাপাশি চীনকে প্রতিরোধ করতে পাশে প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের। সেই সূত্র মেনেই ভারত স্বাগত জানায় পুতিনকে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়- গতকাল (৪ অক্টোবর) ভারতের মাটিতে পা রেখেই পুতিন শুরু করে দেন দ্বিপাক্ষিক আলোচনা। দুদিনের এই রাষ্ট্রীয় সফরে রুশ রাষ্ট্রপতি সঙ্গে আনেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি বরিসভ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সারগেই লাভরভ এবং বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী দেনিস মানতুরোভসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। উদ্দেশ্য শুধু সামরিক সরঞ্জামই নয়, সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যটাও আরও একটু বাড়িয়ে নেওয়ার।
তবে, বিশ্ব সম্প্রদায়ের চোখ মূলত সেই সামরিক চুক্তির দিকেই। আজ দুই দেশের শীর্ষ নেতারা নতুন দিল্লিতে নিশ্চিত করে নিলেন এস-৪০০ দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়টি। তাই আশা করা হচ্ছে, চীনের পর এখন ভারত পেতে যাচ্ছে সেই বহু আকাঙ্খিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি।
২০১৪ সালে চীনের সঙ্গে রাশিয়া চুক্তি করার পর সম্প্রতি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দেশটির কাছে হস্তান্তর শুরু করেছে। এদিকে, ভারতের বিমান বাহিনীর প্রধান বীরেন্দ্র সিং ধানোয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, “নেতারা যখন সই করেছেন তখন তা হাতে পেতে ২৪ মাসের বেশি লাগবে না।”
কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্র যে নতুন আইন করেছে তাতে বলা হয়েছে- যে কোনো রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়া, ইরান এবং রাশিয়া থেকে মোটা অংকের কিছু কিনলে সেই রাষ্ট্রকে মার্কিন অবরোধের মুখে পড়তে হবে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত তার পুরনো বন্ধু রাশিয়ার সঙ্গে চলতি সপ্তাহে আড়াই বিলিয়ন ডলারের যেসব চুক্তি সই করছে তাতে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধের মুখে পড়ে কিনা তা সময়ই বলে দিবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও ভারত এবং রাশিয়ার এই এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি খুব বেশি মনক্ষুণ্ণ করেছে ভারতের প্রতিবেশী চীন ও পাকিস্তানকে। শুধু তাই নয় এ ঘটনায় মনক্ষুণ্ণ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও।
আরও পড়ুন:
Comments