শিশু ধর্ষণের জের, গুজরাট থেকে পালাচ্ছেন হিন্দিভাষী শ্রমিকরা

গুজরাটে একটি ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতিগত সহিংসতা শুরু হয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যটির পুলিশ অবশ্য পরিস্থিতি সামলাতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে এমন দাবি করেছে। কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, অশান্তি অব্যাহত রয়েছে এবং সে কারণে প্রতিদিন অসংখ্য হিন্দিভাষী শ্রমিক গুজরাট ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছেন।
শিশু ধর্ষণের জেরে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর গুজরাটের আহমেদাবাদ ছাড়ছেন হিন্দিভাষী রাজ্যগুলো থেকে যাওয়া শ্রমিকরা। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস/ জাভেদ রাজা

গুজরাটে একটি ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতিগত সহিংসতা শুরু হয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যটির পুলিশ অবশ্য পরিস্থিতি সামলাতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে এমন দাবি করেছে। কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, অশান্তি অব্যাহত রয়েছে এবং সে কারণে প্রতিদিন অসংখ্য হিন্দিভাষী শ্রমিক গুজরাট ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছেন।

গুজরাটে কয়েক লক্ষ শ্রমিক বাস করেন, যাদের স্থায়ী বাড়ি বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং ঝাড়খন্ড রাজ্যে।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে খবর, সম্প্রতি এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ বিহারের কয়েকজন বাসিন্দার বিরুদ্ধে। এরপর থেকেই সেখানে গুজরাটি ভাষা ছাড়া অন্য ভাষাভাষী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার শুরু হয়।

সে কারণে জীবন বাঁচাতে গত কয়েক দিন রাজ্য ছেড়ে পালিয়েছেন বিহার-উত্তরপ্রদেশের হিন্দিভাষী হাজার হাজার শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।

জি নিউজের একটি খবরে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৫০ হাজার শ্রমিক গুজরাট থেকে তাদের নিজেদের রাজ্যে চলে গিয়েছেন।

এমন চলতে থাকলে ‍গুজরাটে নির্মাণ কাজের শ্রমিক পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে অনেক রেস্তোরার কর্মীরা পালিয়ে গিয়েছেন। ফলে বহু রেস্তোরা বন্ধ করেছে দিতে বাধ্য হয়েছেন মালিকরা।

আনন্দবাজার পত্রিকার অন্য একটি খবরে জানা গিয়েছে, সহিংসতার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৪২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গুজরাটের পুলিশ। মামলা হয়েছে ৪২টি।

গুজরাটের মেহসানা এবং সবরকণ্ঠার, গাঁধীনগর, পাটান এবং অহমেদাবাদ এই পাঁচটি জেলায় হিংসার ঘটনা ঘটছে।

তবে রাজ্য থেকে হিন্দিভাষীদের চলে যাওয়ার খবরকে অতিরঞ্জিত বলে দাবি করেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি শিবানন্দ ঝাঁ। তিনি বলেন, উৎসবের সময় বাইরের রাজ্যের বাসিন্দারা তাদের বাড়ি ফিরবেন এটাই স্বাভাবিক। সেটাকে এই ধরনের একটি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়াটা অতিরঞ্জন।

তিনি স্বীকার করেন, পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। রাজ্য পুলিশের ১৮ কোম্পানি ছয়টি জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে।

তবে এই সব ঘটনার জন্য রাজ্য পুলিশের ওই কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন উস্কানিমূলক পোস্টকে দায়ি করেছেন।

গুজরাটের এই নতুন সহিংসতার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সর্তক করে দিয়েছেন কংগ্রেসের একজন শীর্ষ নেতা সঞ্জয় নিরুপম।

জি নিউজের একটি খবরে বলা হচ্ছে,  প্রধানমন্ত্রীকে নিরুপম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন গুজরাট থেকে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের শ্রমিকদের পালাতে বাধ্য করছে বিজেপি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে একদিন উত্তরপ্রদেশের বারানসিতেও যেতে হবে।

ধর্ষিত শিশুটি ঠাকুর সম্প্রদায়ের। এর ঘটনার পর থেকেই ঠাকুর সম্প্রদায়ের মানুষ বিহার-উত্তরপ্রদেশের হিন্দিভাষী শ্রমিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন বলে গণমাধ্যম গুলো দাবি করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Ratan Tata no more

The 87-year-old industrialist was admitted to Breach Candy Hospital for age-related ailments

34m ago