মেঘনায় ভাসছে তেল, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার রঘুরচর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীর পানিতে এখন ভাসছে তেল। পাঁচ দিন আগের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে পরিবেশের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন নদী তীরের বাসিন্দারা।
তেলের ট্যাংকারডুবির পর মেঘনার পানিতে ভাসছে তেল। ছবি: স্টার

তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার রঘুরচর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীর পানিতে এখন ভাসছে তেল। পাঁচ দিন আগের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে পরিবেশের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন নদী তীরের বাসিন্দারা।

গত শুক্রবার রাতে আকস্মিক ঝড়ের কবলে পড়ে বেঙ্গল ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেডের মালিকানাধীন ওই ট্যাংকারটি ডুবে যায়। এতে ট্যাংকারে থাকা অপরিশোধিত তেল মেঘনায় ছড়িয়ে পড়ে। 

স্থানীয়রা জানান, মেঘনার তীরে বেঙ্গল ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেডের কারখানা রয়েছে। সেখানে কোম্পানিটি তেল শোধন করে। অপরিশোধিত তেলের একটি ট্যাংকার মেঘনা নদীতে নোঙর করে রাখা হয়েছিল। এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে সেটি ডুবে যায়। সোমবার রাত পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ট্যাংকারটি উদ্ধার করা হয়নি। এতে ট্যাংকারে থাকা বিপুল পরিমাণ তেল মেঘনায় ছড়িয়ে পড়েছে। 

তবে বেঙ্গল ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সালামত উল্লাহ দাবি করেন, ট্যাংকারে সামান্য পরিমাণে তেল ছিল। সেটিই নদীতে ছড়িয়েছে। 

অন্যদিকে রঘুরচর গ্রামের লোকেরা বলছেন, ট্যাংকারটি তেলে ভর্তি ছিল। ঘটনার আজ পাঁচ দিন পার হতে চলেছে। এখনও নদীর বিভিন্ন অংশে তেল ভাসছে। তেলের বিষক্রিয়ায় নদীতে মাছ মরে ভেসে উঠছে। 

দ্রুত এই তেল অপসারণ না করা হলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেও আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তারা।

রঘুরচর গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন জানান, শনিবার সকালে তারা নদীর একটি অংশে তেল ভাসতে দেখেন। ধীরে ধীরে তা নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে যায়। নদীতে গোসল বা দৈনন্দিন কাজে এই পানি ব্যবহার করতে পারছেন না তারা।

জোছনা বেগম নামের এক গৃহিনী জানান, রান্নার কাজে মেঘনা নদীর পানি ব্যবহার করেন তিনি। কিন্তু পানিতে তেল ছড়িয়ে পড়ায় এখন তা আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। 

একই গ্রামের জেলে আক্তার হোসেন বলেন, এ ঘটনার পর নদীর বিভিন্ন অংশে মাছ মরে ভেসে থাকতে দেখেছেন তিনি। নদীর এই অংশে আর আগের মতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তার।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মুক্তার হোসেন জানান, দ্রুত তেল অপসারণের ব্যবস্থা না করা হলে এলাকার পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এ অবস্থায় বিষয়টিতে নজর দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসমিন জেবিন বিনতে শেখ বলেন, আমি ঘটনাটি জানতে পেরেছি সোমবার। পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments