এসএমএস প্রচার না করায় তিন অপারেটরের ওপর ক্ষুব্ধ সরকার

সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে প্রচার করতে না চাওয়ায় দেশের তিনটি বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।
প্রতীকী ছবি

সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে প্রচার করতে না চাওয়ায় দেশের তিনটি বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ টেলিযোগযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) থেকে সরকারের উন্নয়নমূলক ১০টি কাজ নিয়ে গ্রাহকদের এসএমএস পাঠানোর জন্য চারটি অপারেটরকে বলা হয়েছিল। কিন্তু ৩৯ লাখ গ্রাহকের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটক বাদে অন্য কোনো অপারেটর এই এসএমএস পাঠায়নি।

বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, এই চারটি অপারেটরকে তাদের সকল গ্রাহকের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন ১০টি করে এসএমএস পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ১৫ কোটি ১৫ লাখ সক্রিয় গ্রাহকের তিন বেসরকারি অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক বিষয়টিকে ‘রাজনৈতিক’ উল্লেখ করে গ্রাহকদের বিনামূল্যে এসএমএস পাঠাতে অপারগতা প্রকাশ করে।

এক্ষেত্রে অপারেটররা যুক্তি দেয় যে, তারা সরকারের ‘জাতীয় জরুরি বা নিরাপত্তা বিষয়ক’ এসএমএস ছাড়া অন্য কোনো বিষয় বিনামূল্যে প্রচার করতে বাধ্য নয়।

তবে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, বিটিআরসির পক্ষ থেকে দেওয়া সরকারের প্রচারমূলক ওই ১০টি এসএমএসের একটির বিস্তারিত বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে একটি অংশ বেশ কিছু গ্রাহককে পাঠানো হয়েছে।

বিটিআরসি কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্যের আলোকে এসএমএসগুলো তৈরি করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এছাড়া মন্ত্রণালয় আরও ৫০টি অনুরূপ এসএমএস তৈরি করে রেখেছে।

গত ১ অক্টোবর বিটিআরসিকে পাঠানো এক যৌথ চিঠিতে তিন অপারেটর জানিয়েছে, তারা কেবল বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় এ ধরনের এসএমএস প্রচার করতে পারে। চিটিতে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলি, রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলালিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক আস স্বাক্ষর করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি মোবাইল অপারেটরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের এসব এসএমএস বিনামূল্যে প্রচার করা হলে, তা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক নীতির বিরুদ্ধে যাবে।

তিনি জানান, গ্রাহকদের কাছে বিপুল পরিমাণে এসএমএস পাঠাতে প্রতিটির জন্য ০.১৭ টাকা থেকে ০.২০ টাকা করে চার্জ ধরা হয়। ফলে প্রত্যেক গ্রাহককে এসএমএস পাঠানো হলে খরচ গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

তবে বিটিআরসির কয়েকজন কর্মকর্তারা বলছেন, এই অপারেটররা নিয়ন্ত্রকের আদেশ পালনে অপারগতা দেখিয়েছে, যা টু জি, থ্রি জি ও ফোর জি লাইসেন্সের শর্ত পরিষ্কারভাবে লঙ্ঘন করে।

তারা আরও জানান, ২০০১ সালের টেলিযোগাযোগ আইন ভঙ্গের দায়ে প্রতিটি অপারেটরকে ২০০ কোটি টাকা জরিমানা করা হতে পারে।

বিটিআরসি শিগগিরই এই তিন অপারেটরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে। এছাড়া এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আগামী রোববার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর কাছে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago