আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের যথোপযুক্ত জবাব দেব: প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা বহুমুখী সেতু মেগা প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ষড়যন্ত্রকারীদের এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
PM Sheikh Hasina
ফাইল ছবি

পদ্মা বহুমুখী সেতু মেগা প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ষড়যন্ত্রকারীদের এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, এই মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ এবং উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছেন তাদেরকে যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এ সেতুর জন্য স্থানীয় ও বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যে অপমান আমাদের সহ্য করতে হয়েছে তা দেশের মানুষের জানা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশে এমন কিছু মানুষ আছে যাদের কোন দেশপ্রেম ও জনগণের প্রতি আস্থা নেই তারাই এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

শেখ হাসিনা গতকাল পদ্মা সেতুর ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হওয়ার ফলক উন্মোচনের পর মাওয়া টোল প্লাজার কাছে গোলচত্বরে এক সুধী সমাবেশে ভাষণদানকালে এসব কথা বলেন।

তিনি পদ্মা সেতুর ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প এবং মাওয়া-কান্দিপাড়া-যশোলদিয়া এলাকায় ১,৩০০ মিটার স্থায়ী নদী তীর সংরক্ষণ কাজের উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে আমাদের অনেক বাধা পাড়ি দিতে হয়েছে এবং অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছে। এমনকি আমার পরিবারের সদস্যদেরও সুনাম বিনষ্টের চেষ্টা হয়েছে। শেষে কানাডার একটি ফেডারেল কোর্টে সব অভিযোগই মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের গড়িমসিতে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন দুই বছর পিছিয়ে গেছে। আমাদের কিছু মানুষসহ অনেকের মাঝে এ ধারণা হয়েছিল যে, বিশ্বব্যাংকের টাকা ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে এই সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। সে সময় কেবলমাত্র মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন এবং তিনি এ প্রকল্পের প্রোফাইল তৈরির জন্য তার একজন উপদেষ্টাও পাঠিয়েছিলেন।

কিন্তু আমার পিতার মতো আমারও বাংলাদেশের জনগণের শক্তির উপর অগাধ আস্থা রয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, তারাই আমার সবচেয়ে বড় সাহায্যকারী। জনগণের অনুপ্রেরণায় ও তাদের শক্তির ওপর আস্থাশীল হয়ে আমরা এই মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণে তার সিদ্ধান্তে জনগণের সমর্থন ও সাহস জোগানের জন্য দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, রাজনীতি থেকে আমার পাওয়ার কিছু নেই, আমি রাজনীতি করি বাংলাদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভায় সভাপতিত্ব করেন। রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সভায় বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুকে ‘গর্বের সেতু’ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, সেতুটি সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতুর উপর ডেক দিয়ে মোটরযান ও নিচের ডেক দিয়ে রেল চলাচল করবে।

সেতুটি নির্মিত হলে দক্ষিণ অঞ্চলের ১৯টি জেলার সাথে সরাসরি রাজধানী ঢাকার সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এই জেলাসমুহের জনগণের জীবন-যাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাক্কলিত ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ের এই পদ্মা সেতু জাতীয় অর্থনীতিতে ১ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি অর্জন করবে এবং ০.৮৪ শতাংশ দারিদ্র্য হ্রাস পাবে।

Comments